Bangla Talkies

Awesome Heart Touching Love Story in Bengali - Read and Share with Your friends.

Heart  Touching  Love Story in Bengali


Golpo 1


প্রতিশোধ!

দীর্ঘ ৪ বছরের রিলেশন শেষ হয়েছে ফারিহার। তুহিন কে তার লাইফে জড়াতে পারেনি।কারন তার কাছে এ ৪ বছরের রিলেশনের চেয়ে তার বাবার সম্মানটা বড়ো ছিলো। তাই তার বাবার কথামতো সে তুহিনকে ভুলে যায়। শুরু করে পরিবারের মতো করে নতুন করে পথচলা।
ওদিকে তুহিন প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিল।কি করে ফারিহাকে শেষ করে দেওয়া যায়।

এসিড মেরে,না ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে খুন করে। নির্ঘুম রাত তুহিন এসবই ভাবে। যে আমায় ধোকা দিলো তাকে আমি হাসতে দিবোনা। 
ফারিহার কিছু পিক ছিলো তুহিনের কাছে।হুম এগুলা ভাইরাল করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্লানও করে তুহিন। এভাবেই ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো তুহিন।

তুহিন!তুহিন কি ভাবছিস তুই এগুলা? তুই তো নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতি ফারিহাকে। ওর একটু জ্বর হলে সারারায় তুইও নির্ঘুম কাটিয়ে নামাজে বসে কাদতি ওর জন্য। ওর মন খারাপে তোরও মন খারাপ হতো। যার শরীরে একটা পিপড়া কামড় দিলে তুই সে ব্যাথাটাই পেতিস।

তাহলে আজ কি করে ওর এতোবড়ো ক্ষতি করার চিন্তা করিস তুই?কি করে পারিস ওর সুন্দর মায়াবিনী মুখটাকে ঝলসে দিতে!

হ্যা এ কথাগুলো তুহিনের বিবেক বলছে ওকে। আমাদের বিবেক মাঝে মাঝে আমাদের সাথে কথা বলে। কখনো বা ভালো কখনো বা খারাপ।

প্রতিশোধ তো কখনো ভালোবাসা হতে পারেনা। কোন প্রিয়মানুষ আপনাকে ছেড়ে চলে গেলো বলেই কি তাকে শেষ করে দিতে হবে? আচ্ছা আমরা সন্তানরা যখন বাবা মাকে ছেড়ে অন্য এক ছেলেমেয়ের হাত ধরে চলে যাই কই তখন তো বাবা মা আমাদের মেরে ফেলার প্লান করেনা।
কারন তাদের ভালোবাসাগুলো খাটি।আর খাটি ভালোবাসা কোনদিন প্রতিশোধ পরায়ন হয়না।
যে চলে গেছে তাদের জন্য ঠিক আগের মতোই আল্লাহুর কাছে প্রার্থনা করতে পারি যেখানেই থাকুক সে ভালো থাকুক। এতেই ভালোবাসা বিদ্যামান।প্রতিশোধ এ নয়।



Golpo 2

You're reading Heart Touching Love Story in Bengali. I think you'll like our stories.

মনে মনে

ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে খাটে এসে বসলাম। রান্নাঘর থেকে অবন্তীর গলা শোনা যাচ্ছে। কোন কারনে রেগে আছে হয়তো। গামছা দিয়ে মুখ মুছে রান্না ঘরে গেলাম। অবন্তীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতে যাবো তখনই হাতে খুন্তির বারি খেলাম।
- কুত্তা,আরেকবার ধরলে হাত কেটে দিবো
- এ সকাল সকাল কি হলো! তুই তাই করে বলছো কেন?
- তো কি বলবো? ভাল্লাগেনা আর
- কি হয়েছে অবন্তী?
- কিছুনা
- বউ,ও বউ বলো না।
- দেখো নেকামো করবা না। জানো না কি হয়েছে? আর কয়দিন এভাবে চলবো?
- আমার কি করার আছে! বিয়ের আগেই বলেছিলাম আমার চাকরি নেই। তুমি মানলে না। পালিয়ে চলে এলে। তখন তো বলেছিলে এক বেলা ভাত খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারবে।
- ও এখন আমার দোষ সব? থাক তুই। চাকরি পেলেও আমার কাছে আসবি না।
- অবন্তী!
- চুপ
.
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে এমন কথা শুনতে ভালো লাগেনা। আলনা থেকে শার্ট নিয়ে বাইরে চলে গেলাম। বিয়ের পর একটু ঝগড়া হলেই এই কাজটাই করতে হয়। বাইরে গেলে ওর কড়া কথা গুলো শুনতে হয়না। 
কোথায় যাবো ভেবে পাচ্ছিনা। আনমনে হাঁটছি। কানুর দোকানে যাওয়া যায়। ফ্রি তে কড়া চিনি দিয়ে দুধ চা আর টোস্ট বিস্কিট। এই রোদের মধ্যে চা খাবার মজাই আলাদা। সাথে কানু কাকার ভুতুড়ে গল্প থাকবে।
কানু কাকার দোকানে আজ বসার জায়গা নেই। সবগুলো বেঞ্চ দখলে আছে। ঠাসাঠাসি করে কোণার এক বেঞ্চে বসে পরলাম। কাকাকে অর্ডার দিতে গিয়েও অবাক হয়ে গেলাম। কোন দামি রেস্টুরেন্টেও এতো ভিড় হয়না যতখানি এখানে হয়েছে। অন্যদিন এমন হয়না। তিন বার চা দিতে বলার পর কানু কাকা বলল "এখন কউ তুমার কি?" আমি অসহায়ের মত আবার চায়ের কথা বললাম। আজ কোন ভুতের গল্প হলোনা। কাকা বিরাট ব্যস্ত। আমি কোনদিন টাকা দিয়ে খাইনা তা কাকা জানেই,তাই টাকা চায়নি। বাকির খাতার পৃষ্ঠা ফুরাতে সময় লাগবেনা। ব্যবসা এভাবে চললে কিছুদিনেই বড়লোক হয়ে যাবেন। তারপর দোকানে হয়তো লেখা থাকবে "বাকি চাহিয়া লজ্জা পাবেন না,আপনার লজ্জা আপনার কাছে রাখুন"
.
পকেটে হাত দিয়ে চুপচাপ হাটছি। রিফাতের বাসায় যাওয়া যায়। গিটারটা নিয়ে ছাদের কোনে বসে পা দুটো ঝুলিয়ে গলা ছেড়ে কাকের মত গান,সাথে বিকেলের নরম বাতাস। ভাবতে ভাবতে রিফাতের বাসার সামনে এসে দাঁড়ালাম। উপরে তাকিয়ে দেখি রিফাত ছাদে বসে আছে। একেবারে কোনায় বসে আছে তাই দেখতে পেলাম। বাসায় ঢুকে সোজা ছাদে চলে গেলাম। রিফাতের গিটার টা ছাদের চিলেকোঠায় থাকে,সাথে থাকে ওর কিছু এক্সপেরিমেন্ট। ত্রিশ টাকার মোটর আর পুরাতন ব্যাটারি দিয়ে বানানো ছোট্ট নৌকা,একটা মটর দিয়ে দশটা লাইট জ্বালানো,ফুঁ দিলে লাইট জ্বলে এমন কিছু জিনিশ বানিয়ে রেখেছে রিফাত। ওর মাথায় এতো বুদ্ধি কিভাবে আসে ভেবে পাই না। একে তো চাকরি করে,তার উপর বউ আছে। সময় পায় কখন? 
ছাদে উঠে দেখি রিফাত গিটার পাশে রেখে কুতুবমিনারের মত বসে আছে। আমি গিয়ে ধাক্কা দিয়ে সোজা করে দিলাম।
- কিরে সুমিত কি খবর?
- আমার কথা বাদ দে। তোর মন খারাপ কেন?
- বউ
- বউ কি করলো? বউ ভালো না লাগলে আমাকে দিয়ে দে।
- এখান থেকে তোকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে মরবি না?
- হ্যা পাক্কা মরে ভূত!
- তো আমার বউ নিয়ে কথা বলবি না আর। ভূত হয়ে যাবি পরে
- রাগিস কেন?
- সকাল সকাল বউ বলল ডিম আনতে। দুই হালি ডিম আনলাম। এর মধ্যে একটা ডিম পঁচা বের হওয়ায় বাকি গুলা আমার মাথায় ফাটালো। কিছু বলতে যাবার আগে নিজের মাথায় একটা ফাটালো।
- আজিব! কেন?
- আগে সম্পূর্ণ শুন। নিজের মাথায় একটা ফাটিয়ে আমার মা কে ডাকলো। তুই তো জানিসই আমি মা কে ভয় পাই। পা এসে দেখে দুইজন মাথায় ডিম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। অমনি রিনা বলল আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি। ডিম কিনে এনে সবার মাথার ফাটাচ্ছি।
- তারপর?
- তারপর আর কি! এই বয়সে মায়ের হাতে ঝাটার বারি খেলাম।
- ওয়াও কিউট স্টোরি
- ওই আমি তোরে ভাই ভেবে এগুলো বললাম আর তুই মজা নিচ্ছিস? 
- কই মজা নিলাম
- ভাগ
- দোস্ত!
- তোর দোস্তের...
.
হঠাৎ বেচারার কি হলো কিছুই বুঝলাম না। উঠে গিয়ে গিটার তুলে বারি দিল। আমি বারি খেয়ে "আওও" করে চিৎকার করে দৌড় দিলাম। বারি দেওয়ার সাথে সাথে গিটারের দুইটা তার টং করে ছিড়ে যায়।
(২)
এখন দাঁড়িয়ে আছি অবন্তীদের বাসার পেছনের দিকে। অবন্তী গান গাচ্ছে হালকা স্বরে। দ্বিতীয় তলায় অবন্তীর রুম। কিভাবে উঠবো তা নিয়ে ভাবছি না। আগেও উঠেছিলাম। প্রেমের শুরুই তো হলো RFL এর পাইপ বেয়ে উপরে উঠে। আমার সশুরকে এই একটা কারণে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করে। পাইপ টা যদি অন্য কোম্পানির হতো তাহলে উঠার আগেই পরে যেতাম।
এখানে আসার আসল কারণ হলো চাবি। বাসায় ফিরে দেখি তালা দেয়া। তালায় একটা কাগজ টেপ দিয়ে লাগানো ছিল। কাগজে লেখা "তালাটা আমার টাকা দিয়েই কিনেছি,আর চাবিটাও। নিয়ে গেলাম,থাকো তুমি" আমি তালা ভাঙার সাহস করলাম না। জানি তালা ভাঙলে পরে বউ আমাকে ভাঙবে!
ধিরে ধিরে পাপ বেয়ে উপরে উঠে গেলাম। অবন্তীর জানালায় একটা টোকা দিলাম। অবন্তী রাগি মুখ নিয়ে জানালা খুলল।
- ওই এখানে কিভাবে আসলা?
- পাপ বেয়ে। বানরের মত। তুমিই তো বলো আমি পুরোপুরি মানুষ হইনি একটুখানি বানর এখনো আছি
- ভাগো এইখান থেকে।
- চলো বাসায় যাবো।
- তোমার মতো গরিবের সাথে আমি যাবো না।
- আরে একটা জিনিশ আছে তো আমার সাথে?
- কি?
আমি পকেট থেকে কুঁচকে যাওয়া কদম বের করে অবন্তীর হাতে দিলাম। অবন্তী খুশি হয়ে লাফানো শুরু করে দিলো। যতই রাগ থাকুক ওর একটা কদমের সামনে ওর রাগ বরফের মত গলে যায়। আলমারি থেকে কিছু শাড়ী বের করে বলল "জানালা দিয়েই যাবো। গরিবের বউ আজ আগের মত পালাবে,হিহি" ওকে কি করে বুঝাই আমি এখন আর গরিব নেই। চাকরিটা হয়েগেছে আমার। মনে মনে "বেলাবোস" গান গেতে লাগলাম। অবন্তী একটা শাড়ীর সাথে আরেকটা বাধঁতে ব্যস্ত।


This is last Bangla Short Story. Please share our stories and inspire us.
 Golpo 3


অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে বিপরীত লিঙ্গের কারো সাথে রিলেশনে জড়ানোর প্রবণতা নিঃসন্দেহে অনেক অনেক বেড়েছে। কোনপ্রকার তথ্যের তোয়াক্কা না করেই চারপাশের বাস্তবতার নিরিখে বলে দেয়া সম্ভব, অধিকাংশ ছেলেমেয়েই বর্তমানে প্রকাশ্যে-গোপনে রিলেশনের মধ্যে রয়েছে! এটাও অপ্রিয় সত্য যে, এদের বেশিরভাগই শেষপর্যন্ত কেউ কাউকে পাবে না! আই রিপিট, এদের বেশিরভাগই শেষপর্যন্ত কেউ কাউকে পাবে না!! ভালোবেসে কেউ কাউকে পাওয়ার চেয়ে হারানোর সংখ্যাটা বহু বহুগুণ বেশিই থাকে! তুমি স্বীকার কর আর নাই কর, এটাই কঠিন বাস্তব।
.
সম্পর্কে জড়ালেই যে কেউ কাউকে জীবনসঙ্গি হিসেবে পেয়ে যাবে, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। সম্পর্কে জড়ালে একের পর এক নানা ঝড়ঝাপটা, বাধাবিপত্তি, আঘাত আসতেই থাকে। এত ঝড়ঝাপটা, বাধাবিপত্তি, আঘাত সহ্য করার মধ্য দিয়ে একজন আরেকজনকে পাওয়া সহজতম কাজ নয়। ছেলেদের ক্যারিয়ার আর মেয়েদের পরিবারের জাঁতাকলে পড়ে কত কত ভালোবাসা চোখের সামনেই নিঃশেষ হয়ে যেতে দেখেছি! সারাজীবন একসাথে থাকার কমিটমেন্ট করা কত কত ছেলেমেয়েগুলোকে মুহূর্তের মধ্যেই একজন আরেকজনকে ছেড়ে যেতে দেখেছি!!
.
ভালোবেসে কেউ কাউকে না পাওয়ার যত যা-ই কারণ থাকুক না কেন, এর আসল কারণ একটাই; প্রতারণা! একজন যখন প্রতারণা করে চলে যেতে চায়, তখন আরেকজন জোর করে তাকে ধরে রাখতে পারে না। কেউ তার স্বার্থের জন্য কারো জীবন থেকে চলে যেতে চাইলে, তাকে আসলে জোর করে ধরে রাখাও যায় না। এটা হয়ও না। ভালোবাসায় জোরজবরদস্তি চলে না। ভালোবাসার সহজ সমীকরণ হচ্ছে, ভালোবাসার টানেই একজন আরেকজনের কাছে ছুটে আসবে! ভালোবাসার টানেই একজন আরেকজনকে ছেড়ে চলে যাবে না!!
.
কেউ যখন কাউকে হারিয়ে ফেলে, কেউ যখন কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে জীবনসঙ্গি হিসেবে পায় না; তখন বেশিরভাগেরই মানসিক অবস্থাটা এমন হয় যে, এই জীবনে আর কাউকেই সে জীবনসঙ্গি হিসেবে গ্রহণ করবে না! কাউকেই সে তার বউ হিসেবে, স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবে না! এত এত দিনের একটা সম্পর্ক, এত এত দিনের একটা ভালোবাসা যখন খুন হয়ে যায়, তখন আসলে এমন ভাবনা, এমন মানসিকতা জন্ম নেয়াটাই স্বাভাবিক।
.
নিজের ইচ্ছায় না হোক; পরিবার-সমাজ-ধর্ম শেষপর্যন্ত তাকে বাধ্য করে নতুনভাবে জীবনের হিসেবনিকেশ কষতে। তিনবার ‘কবুল' বলে কাউকে গ্রহণ করতে! হারানো অতীতকে ভুলতে না পারলেও, দমিয়ে রাখতে। ভাঙা হৃদয়টা মেরামত করে নতুন কারো জন্য নতুনরূপে ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে। জোর করে হলেও মুখে হাসি আনতে। ভালো না থাকলেও ভালো থাকার অভিনয় করে যেতে। পরিবারের মানুষগুলোকে ভালো রাখতে। বাঁচার তাগিদে একটা ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে। এভাবে শেষমেশ তার জীবনে কেউ একজন আসে!
.
জীবনে নতুন করে কেউ একজন আসার আগেই মনের মধ্যে যে প্রশ্নটা উঁকিঝুঁকি দেয় তা হল, আমার যে অতীতে কেউ একজন ছিল, সেটা কি তাকে বলব? তার কাছে কি আমার হারানো অতীতের কথা শেয়ার করব? যদি বলি, বিষয়টিকে সে কীভাবে নেবে? সে কি সহজ করে, সহজভাবে সবকিছু গ্রহণ করবে? যদি তার মধ্যে আস্থাহীনতা কাজ করে? যদি তার মধ্যে সন্দেহ কাজ করে? যদি ভুল বোঝে? নাকি সবকিছু হাইডেন রেখে দেব? এভাবে একের পর এক প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়! এভাবেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে!!
.
তুমি অতীতে কারো সাথে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলে, তোমার বলে অতীতে কেউ একজন ছিল; সে মানুষটি তোমাকে ছেড়ে স্বার্থপরের মত চলে গেছে! তুমি তোমার কমিটমেন্ট ঠিক রাখলেও, সে তার কমিটমেন্ট ঠিক রাখেনি। তুমি তোমার ভালোবাসার মূল্য দিলেও, সে দেয়নি। এখানে তো তোমার কোন দায় নেই! তোমার কোন দোষ নেই; অপরাধ নেই! তুমি কেন নিজেকে সংকুচিত করে রাখবে? তুমি কেন হীনমন্যতায় ভুগবে? তুমি কেন সংকোচবোধ করবে? তুমি কেন নিজেকে অপরাধীর কাতারে দাঁড় করাবে?
.
যে তোমার জীবনে আসবে, তুমি তার কাছে তোমার অতীত হাইডেন রেখ না। বরং তাকে একটা সময় তোমার কাছে ডেকে নাও। তার হাতটি মুঠোভরে রেখে তাকে মন খুলে সব বল। একটুও লুকাবে না। একটুও মিথ্যাচার করবে না। যা সত্য, তাই বলে দাও। হাসার পয়েন্ট আসলে হাস, কান্নার পয়েন্ট আসলে কাঁদো। সে যদি সত্যিকারের ভালো মানুষ হয়ে থাকে, সে যদি ভালো মনের জীবনসঙ্গি হয়ে থাকে, তোমার সবকিছু সে ভালোভাবে নেবে, সহজভাবে নেবে। তোমার প্রতি তার আস্থা বাড়বে, বিশ্বাস বাড়বে। সেই বউটা টপটপ করে পড়তে থাকা তোমার চোখের পানিগুলো তার শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে দেবে! সেই স্বামীটা তার বাম কাঁধে তোমার মাথাটা ঠেকিয়ে তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে! তোমাকে সাহস দেবে, অনুপ্রেরণা দেবে। মনভোলানো হাসি দিয়ে তোমার দুঃখ-কষ্টগুলো সেখানেই থামিয়ে দেবে!!
.
মনে রাখবে, যে তোমার জীবনে এসেছে, সে নির্দোষ। দোষ যা ছিল, তোমার অতীতের সেই ভুল মানুষটির; সেই প্রতারকটির ছিল! তাই ভুল করেও তাকে কোনদিন ঠকাবে না। ভুল করেও তাকে কখনো অবহেলা করবে না। কিছুতেই না!!

Romantic Bangla Short Story for Lovers and Couples - Bangla Talkies

Romantic Bangla Short Story for Lovers and Couples - Bangla Talkies Stories

bangla short story

Top 2 Bangla Short Story (Bangla Valobashar Golpo) is given below. Read this and if you like this story, please share this with your friends.

Golpo 1
প্রেমপত্র

ক্লাসে ম্যাডাম ঢুকেই বলল, " নীলয় তুই নাকি সাদিয়াকে প্রেমপত্র দিছিস! সাদিয়া তোর প্রেমপত্র পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে।" ম্যাডামের কথা শুনে আমার কলিজা শুকিয়ে গেলো। সাদিয়া ম্যাডামের একমাত্র মেয়ে। ডাইনী মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। ম্যাডাম আবার বলল, "কিরে তুই উত্তর দিচ্ছিস না কেন"? ভয়ে আমার পায়ে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেলো। যেকোনো সময় প্যান্ট নষ্ট করে ফেলার মতন অবস্থা।

জীবনে কখনো ম্যাডামের ক্লাসে পড়া দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। ম্যাডাম এমনিতেই আমাকে দেখতে পারে না। তার উপর তার মেয়েকে প্রেমপত্র দিয়েছি, সেটা পড়ে বেচারি অজ্ঞান। ম্যাডাম আমার অবস্থা আজ কি করবে সেটা বুঝার বাকি রইলো না। মনে মনে বিপদের দোয়া পড়ছি আর নিজের বুকে ফুঁ দিচ্ছি। আল্লাহ এবারের মতন আমাকে বাঁচাও এরপর থেকে সাদিয়াকে নিজের বোনের চোখে দেখবো।

ম্যাডাম আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো আমার দিকে।ক্লাসের সবাই সার্কাস দেখার অপেক্ষায় আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ম্যাডাম আমার কাছে এসে চিঠিটা আমার হাতে দিয়ে বলল, " পড়ে শোনা"। ম্যাডামের কথা শুনে এবার গলা পর্যন্ত শুকিয়ে কাঠ। আমি লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। ম্যাডার তার ডাইনী কণ্ঠে চিৎকার করে উঠে বলল, "এক্ষণ পড়ে শোনা বলছি।"

আমি চিঠি হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম।

কলিজার বোঁটা সাদিয়া,

কেমন আছো তুমি? জানি তুমি ভালো নেই। তোমার ডাইনী মা ৪৫ মিনিটের ক্লাসে আমাদের যে অবস্থা করে! আল্লাহ জানে সারাদিন তোমার উপর ঐ ডাইনীটা কতো নির্যাতন চালায়। তুমি বললে আমি উনার বিরুদ্ধে মামলা করবো।

প্রথমদিন তোমাকে দেখেই আমার বুক কেঁপে উঠেছিল। সেই কাঁপুনিতে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের কিছু অংশ কেঁপে উঠে। অথচ মানুষজন বলে সেটা নাকি ভূমিকম্পের কারণে। কাউকে বিশ্বাস করাতেই পারিনি ওটা আমারি বুকের ভূমিকম্প।

তুমি জানো সারাদিন শুধু আমি তোমার কথা ভাবি। এতো ভাবনা যদি আমি গণিতের প্রতি দিতাম তাহলে আইনস্টাইনের মতন আমারো পকেটে দুইচারটা নোবেল থাকতো। কিন্তু দেখো আমি নোবেলের কথা চিন্তা না করে শুধু তোমার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তোমার ডাইনী মায়ের জন্য চিন্তাটাও ঠিকমতন করতে পারি না। হঠাৎ করে তোমার মা আমার চিন্তার মধ্যে এসে আমাকে লাঠিপেটা করে আর বলে " ঐ তুই আমার মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করিস কেন?"

সেইদিন স্বপ্নে দেখি তোমাকে নিয়ে চাঁদে যাচ্ছি হানিমুন করতে। রকেটে আমি আর তুমি লুকোচুরি খেলছি। এরমধ্যে কোথা থেকে যেন তোমার মা এসে রকেটের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিয়ে বলে, " এবার খেলা হবে।"


বিশ্বাস করো সাদিয়া, তোমার কথা মনে হইলেই এই হৃয়দের মধ্যে এনার্জি বাল্ব জ্বলে উঠে। তুমি আবার ভেবো না আমি ৩০০ টাকার এনার্জি বাল্ব ১০০ টাকায় কিনেছি শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য। 
আমি ফিলিপ্স বাল্বের কথা বলেছি। যা দিবে তোমাকে শতভাগ আলো ও দীর্ঘদিনের গ্যারান্টি।

সাদিয়া বিশ্বাস করো এই মনে!!...."

হঠাৎ ধপাস করে কিছু পরে যাওয়ার শব্দ পেলাম। সামনে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। সবাই মিলে দৌড়াদৌড়ি করে ম্যাডামকে তুলে ডাক্তার ডাকতে গেলাম।

ম্যাডামের জ্ঞান ফিরলে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম আমাকে ডেকে পাঠালেন। উনি বললেন," তুমি নাকি ম্যাডামের মেয়ে সাদিয়াকে চিঠি দিয়েছ। কি ছিল সেই চিঠিতে দেখি চিঠিটা আমাকে দেও।" আমি ভয়ে ভয়ে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম কে বললাম "আগে এখানে ডাক্তারকে ডাক দেন ম্যাডাম।"




Golpo 2

রিয়েল লাভ

মেয়েটা আগে অনেক খারাপ ছিলো। খারাপ মানে খুবই খারাপ। ফালতু মেয়ে একটা। রাত প্রায় দুটো তিনটা পর্যন্ত জেগে আমার সাথে ফোনে বকবক করতো। নিজে তো ঘুমাতোই না, এমনকি আমাকেও ঘুমাতে দিত না। প্রায় সারাদিনই চ্যাট হতো। আমি যদি বলতাম, 'এখন খাইতে যাবো, বাই', তাতে ও রেগে যেত। বলতো, 'আরেকটু কথা বলো প্লিজ। একদিন না খেলে কিছু হয় না।'

মোটকথা ওর জন্য আমার লাইফ টোটাল এলোমেলো হয়ে গেছিলো। ঠিকমতো খাওয়া, ঘুম, গোসল, লেখাপড়া কিচ্ছু হচ্ছিলো না। সবকিছু ধ্বংস হয়ে যেতে বসেছিলো।
.
আমি জানি সেটা ও সহ্য করতে পারেনি বলেই নিজেকে খুব কম সময়ের মধ্যে চেঞ্জ করে ফেলেছে। আমি জানি সেটা শুধুমাত্র আমার জন্য।
.
মাত্র অল্প কদিন পরের কথা। এখন সেই খারাপ মেয়ে এতোটা ভালো হয়ে গেছে দেখলে আশ্চর্য হই। হুট করে এতো ভালো একটা মানুষ কিভাবে হতে পারে? এখন সে রাত দশটা বাজতেই ঘুমিয়ে পড়ে। এমনকি তার এতো ঘুম আসে যে ফোনের ডাটা পর্যন্ত অফ করতে ভুলে যায়। এজন্য সারারাত অনলাইনে দেখায় তাকে। ফেসবুকের এই এক বাজে নিয়ম।

মানুষ না থাকলেও শুধুমাত্র ডাটা কানেশন অন থাকার জন্য একজনের নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলে। ফেসবুক তো আর বোঝেনা যে মানুষটা তখন গভীর ঘুমে।
.
এছাড়াও আমার অনেক বেশি খেয়াল রাখে। ফোন দিলে দুই মিনিট কথা বলতে না বলতেই বলে, 'তুমি এখন খাইতে যাও। গোসলে যাও। অনেক রাত হইছে তুমি ঘুমাও।'

এগুলা বলে জোর করে আমাকে দিয়ে ফোন রাখিয়ে ছাড়ে। আহা! আমার এতো ভালো লাগে, বলে বোঝানোর মতন না। মেয়েটা আমাকে কত্তো ভালোবাসে। কেয়ার নেয়। আমার কথা কত ভাবে!
.
এমনকি সে এখন আমার এতোই ভালো চায় যে নিজেকেই আমার যোগ্য ভাবে না আর। একজন প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষীর মতন বলে, 'তুমি আমার চাইতে বেটার মেয়ে ডিজার্ভ করো।'
আমি আমতা আমতা করে বলার চেষ্টা করি যে, 'না তুমিই ঠিক আছো।'
কিন্তু ও রাজি হয় না। ও আমার জন্য জগতের বেস্ট মেয়েটাকেই চায়। জানি সেটা প্রচন্ড ভালোবাসে বলেই!
তারপর একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে নিজের লাইফের খুব বড় একটা সেক্রিফাইস করে ও। শুধু আমার জন্য। আমি যেটা কখনো ভাবতেও পারিনি।
.
আমার এক মেডিকেলে পড়ুয়া ছেলের সাথে গ্যাঞ্জাম ছিলো বিশেষ কিছু কারনে। ছেলেটাকে দুই চোখে দেখতে পারতাম না। ও গিয়ে তার সাথেই প্রেম করা শুরু করে। আমি বুঝতে পারি ও আসলে চাচ্ছে ছেলেটার লাইফটা এলোমেলো করে দিতে। আমার সাথে ছেলেটা যে খারাপ ব্যবহার করেছে তার প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে। কিন্তু ঐ ছেলে যাতে কোনোভাবে টের না পায় যে মেয়ে আসলে আমাকে ভালোবাসে এজন্য সিকিউরিটি হিসাবে আমাকে ব্লক করে দিয়েছে।

আমার ফোনও ধরেনা। আমি বন্ধুর নাম্বার থেকে কল দিয়ে দেখি রাত দুটো তিনটে অব্দি ছেলেটার ফোন আর ওর ফোন দুটোই বিজি থাকে। ও ছেলেটাকে না ঘুমাতে দিয়ে কষ্ট দিচ্ছে। প্রতিশোধ নিচ্ছে। মনে পড়ে, আমি একবার বলেছিলাম, 'বিজ্ঞানীদের মতে বেশি রাত জাগলে অকাল মৃত্যুর ঝুকি বাড়ে'। সেই ঝুকি ও আমার শত্রুকে শিক্ষা দেয়ার জন্য নিজের কাধেও নিচ্ছে। আহা! কি ভীষণ সেক্রিফাইস। এটা বুঝি শুধু ভালোবাসার ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়! 
.
আমার নিজেকে অনেক সুখি মনে হয়। আমি বুঝতে পারি দুনিয়ার সবাই যে রিয়েল লাভের পেছনে ছুটে বেড়ায় এটাই সেই রিয়েল লাভ। এটাকেই বলে প্রকৃত ভালোবাসা!
.
বন্ধুরা আমাকে নিয়ে অনেক হাসাহাসি করে। বলে আমি নাকি গাধা। আমি নাকি বোকার স্বর্গে বাস করছি। কিন্তু আমি বুঝতে পারি ওরা আসলে জেলাস। নিজেরা কখনো এরকম রিয়েল লাভ পায়নি বলেই আমাকে হিংসা করছে। আমি সব বুঝি। ওদের গার্লফ্রেন্ডরা ওদের দিয়ে গিফট কেনায়, ওদের টাকায় রেস্টুরেন্টে খায় আর আমার গার্লফ্রেন্ড গিফট বা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার জন্য আমার শত্রুকে দিয়ে টাকা খরচ করায়। এটা ওদের সহ্য হয় না।

ওদের প্রেমভাগ্য তো আর আমার মত ভালো না। এজন্য কিছু না পেরে বোকার মত হাসাহাসি করে। আমার ভালোবাসা নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলে, যার অধিকাংশই অশ্লীল। তবে আমি কিছু মনে করিনা। ওরা বড্ড অবুঝ। একদিন ওরা এই ভালোবাসার মর্ম বুঝতে পারবে বলে আশা করতে পারি শুধু।
.
তারপর একদিন আমার কথাই সত্যি হয়। সেই মেডিকেলের পোলা আমারে ফোন দিয়ে বলে, 'ভাই আমি স্যরি। যা হইছে ভুলে যান। আর আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন পারলে।'

আমি মনে মনে হাসি। কেমন শিক্ষা দিলো আমার প্রেমিকা, হুম? অবস্থা বেশি খারাপ? আহারে, বেচারা! মুখে বলি, 'ব্যাপার না, ইটস ওকে। আমি আগেই ভুলে গেছি সব।'
পোলা আমতা আমতা করে বলে, 'আমরা আগামী মাসের তের তারিখে বিয়ে করছি। দোয়া করবেন।'
.
আমার এক মুহুর্তের মধ্যে মনে কুচিন্তা জাগে। আমার রিয়েল লাভ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। এক মুহুর্তের জন্য মনে হয়, তাহলে আমার ফ্রেন্ডরা কি সত্যি বলছিলো?

পরক্ষণেই বুঝতে পারি আমি ঐ ছেলেকে মুখে ক্ষমা করলেও আসলে মন থেকে ক্ষমা করতে পারিনি। আর মনের কথা আমার প্রেমিকা তো বুঝতে পারবেই। এজন্য ও ছেলেটাকে আরো শাস্তি দেয়ার জন্য বিয়েই করে ফেলতেছে। এইবার পোলা বুঝবে আসল মজা। হু হু! আমার সাথে বেয়াদবি।
.
আমি আরো শিওর হই যখন খবর পাই ওরা হানিমুনে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছে। সুইজারল্যান্ডে যে শীত। বরফও পড়ে শুনেছি। পোলার একেবারে হালুয়া টাইট হয়ে যাবে এবার। হাহাহা!

Thanks for reading our stories. We think you all like this and stay tuned for the next stories.

Top 3 Amazing Bangla Love Letter for Lovers

3 Amazing Bangla Love Letter for Lovers. Read All These Stories and Share this.

bangla love letter


Letter 1

ক্লাসে ম্যাডাম ঢুকেই বলল, " নীলয় তুই নাকি সাদিয়াকে প্রেমপত্র দিছিস! সাদিয়া তোর প্রেমপত্র পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে।" ম্যাডামের কথা শুনে আমার কলিজা শুকিয়ে গেলো। সাদিয়া ম্যাডামের একমাত্র মেয়ে। ডাইনী মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। ম্যাডাম আবার বলল, "কিরে তুই উত্তর দিচ্ছিস না কেন"? ভয়ে আমার পায়ে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেলো। যেকোনো সময় প্যান্ট নষ্ট করে ফেলার মতন অবস্থা।

জীবনে কখনো ম্যাডামের ক্লাসে পড়া দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। ম্যাডাম এমনিতেই আমাকে দেখতে পারে না। তার উপর তার মেয়েকে প্রেমপত্র দিয়েছি, সেটা পড়ে বেচারি অজ্ঞান। ম্যাডাম আমার অবস্থা আজ কি করবে সেটা বুঝার বাকি রইলো না। মনে মনে বিপদের দোয়া পড়ছি আর নিজের বুকে ফুঁ দিচ্ছি। আল্লাহ এবারের মতন আমাকে বাঁচাও এরপর থেকে সাদিয়াকে নিজের বোনের চোখে দেখবো।

ম্যাডাম আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো আমার দিকে।ক্লাসের সবাই সার্কাস দেখার অপেক্ষায় আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ম্যাডাম আমার কাছে এসে চিঠিটা আমার হাতে দিয়ে বলল, " পড়ে শোনা"। ম্যাডামের কথা শুনে এবার গলা পর্যন্ত শুকিয়ে কাঠ। আমি লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। ম্যাডার তার ডাইনী কণ্ঠে চিৎকার করে উঠে বলল, "এক্ষণ পড়ে শোনা বলছি।"

আমি চিঠি হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম।

কলিজার বোঁটা সাদিয়া,

কেমন আছো তুমি? জানি তুমি ভালো নেই। তোমার ডাইনী মা ৪৫ মিনিটের ক্লাসে আমাদের যে অবস্থা করে! আল্লাহ জানে সারাদিন তোমার উপর ঐ ডাইনীটা কতো নির্যাতন চালায়। তুমি বললে আমি উনার বিরুদ্ধে মামলা করবো।

প্রথমদিন তোমাকে দেখেই আমার বুক কেঁপে উঠেছিল। সেই কাঁপুনিতে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের কিছু অংশ কেঁপে উঠে। অথচ মানুষজন বলে সেটা নাকি ভূমিকম্পের কারণে। কাউকে বিশ্বাস করাতেই পারিনি ওটা আমারি বুকের ভূমিকম্প।

তুমি জানো সারাদিন শুধু আমি তোমার কথা ভাবি। এতো ভাবনা যদি আমি গণিতের প্রতি দিতাম তাহলে আইনস্টাইনের মতন আমারো পকেটে দুইচারটা নোবেল থাকতো। কিন্তু দেখো আমি নোবেলের কথা চিন্তা না করে শুধু তোমার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তোমার ডাইনী মায়ের জন্য চিন্তাটাও ঠিকমতন করতে পারি না। হঠাৎ করে তোমার মা আমার চিন্তার মধ্যে এসে আমাকে লাঠিপেটা করে আর বলে " ঐ তুই আমার মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করিস কেন?"

সেইদিন স্বপ্নে দেখি তোমাকে নিয়ে চাঁদে যাচ্ছি হানিমুন করতে। রকেটে আমি আর তুমি লুকোচুরি খেলছি। এরমধ্যে কোথা থেকে যেন তোমার মা এসে রকেটের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিয়ে বলে, " এবার খেলা হবে।"


বিশ্বাস করো সাদিয়া, তোমার কথা মনে হইলেই এই হৃয়দের মধ্যে এনার্জি বাল্ব জ্বলে উঠে। তুমি আবার ভেবো না আমি ৩০০ টাকার এনার্জি বাল্ব ১০০ টাকায় কিনেছি শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য। 
আমি ফিলিপ্স বাল্বের কথা বলেছি। যা দিবে তোমাকে শতভাগ আলো ও দীর্ঘদিনের গ্যারান্টি।

সাদিয়া বিশ্বাস করো এই মনে!!...."

হঠাৎ ধপাস করে কিছু পরে যাওয়ার শব্দ পেলাম। সামনে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। সবাই মিলে দৌড়াদৌড়ি করে ম্যাডামকে তুলে ডাক্তার ডাকতে গেলাম।

ম্যাডামের জ্ঞান ফিরলে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম আমাকে ডেকে পাঠালেন। উনি বললেন," তুমি নাকি ম্যাডামের মেয়ে সাদিয়াকে চিঠি দিয়েছ। কি ছিল সেই চিঠিতে দেখি চিঠিটা আমাকে দেও।" আমি ভয়ে ভয়ে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম কে বললাম "আগে এখানে ডাক্তারকে ডাক দেন ম্যাডাম।"

প্রেমপত্র
রিফাত আহমেদ


Letter 2

প্রিয় হবু বউ
কেমন আছ তুমি?
কী করছ বলোতো?
আচ্ছা তুমি এমন সার্থপর কেনো?
সেই কবে থেকে তোমাকে খুজে যাচ্ছি কিন্তু তুমি
এখনও আসলে না।
কোন গর্তে লুকিয়ে আছো হুম।
যে গর্তেই থাকো তাড়াতাড়ি সামনে এসো।
যানো তোমার জন্য কত কিছু পরিকল্পনা করে
রেখেছি?
জানবাই বা কী করে।
তুমি তো এখন অন্য ছেলের গার্লফ্রেন্ড হয়ে তার
হাত ধরে ঘুরছ অথবা এমন কারও সাথে বন্ধু হয়ে আছো
যে কারণে অকারণে তোমাকে পটানোর চেষ্টায়
আছে।
নাকি আমার মতো একঘেয়েমি জিবন পার করো
তুমিও ?
শোনো দয়া করে যা ইচ্ছা করো তবে আমার জন্য
অল্প একটু ভালবাসা রেখো।
প্রতি সপ্তাহে কিন্তু তোমাকে আইসক্রিম বা ফুচকা
খেতে নিয়ে যাবো। আচ্ছা তোমার কোনটা ভাল
লাগে?
আইসক্রিম নাকি ফুচকা নাকি অন্য কিছু।
আচ্ছা চিন্তা করো না তোমার যেটা ভাল লাগে
সেটাই খাওয়াবো।
রাতে তুমি যখন ঘুমাবে তখন এক নজরে তাকিয়ে
থাকব তোমার ওই মায়াবি মুখখানির দিকে।
এটা ভেবে এখনই সপ্নে বিভোর থাকি আমি।
আটা ময়দা এসব মাখা হয় নাকি হুম।
দেখো এখন আটা ময়দা মাখতেছো মাখো আমার
কাছে আসলে কিন্তু এগুলো হবে না।
তবে তোমার বেশি সখ থাকলে মাখতে পারো।
এই
ঈদে কী শপিং শেষ করেছো নাকি এখনও করছ?
দেখো বাবার কাছে আছো তাই যত খুশি করে নাও
আমার কাছে আসলে কিন্তু কিছুও না পেতে পারো।
যখন ঈদে তোমাকে কিছু দিতে পারব না তখন খুবই
অবহেলা করবে আমাকে তাই না।
ঈদের দিন কী কোথাও বেড়াতে যাও নাকি আমার
মতো ঝিমিয়ে বা ঘুমিয়ে কাটাও?
বেড়াতে গেলে কোথায় যাও বন্ধুদের বাসায়, নাকি
কোনো ছেলে সাথে ।
তার হাতটা ধরো কী?
তবে আমাদের প্রথম ঈদে তোমাকে সুন্দর একটা
শাড়ি উপহার দিবো।
মাথায় একটা বেলি ফুল গুজে দিবো আলতো করে?
তুমি আনন্দে চুমো একে দিবে আমার কপালে। দিবে
তো নাকি বলবে এতো ঢং করো করো কেনো তুমি।
প্রেমের প্রথম ঈদ হলে এমন কিছু উপহার দিবো যেটা
তোমাকে আমার কথা মনে করাবে।
আমাদের বিয়েটা কীভাবে হবে?
ভালোবেসে পালিয়ে নাকি সবার মতামত নিয়েই।
আমাকে দিয়ে কিন্তু পালিয়ে বিয়ে হবে না কিন্তু
পালানোর ইচ্ছা থাকলে সব পরিকল্পনা তোমাকেই
করতে হবে বুঝলা।
না পারলে সারা জিবন মুড়ি খাবা পারু হয়ে।
দেখো এমনিই তোমাকে ছেড়ে অনেক দিন থেকে
ফেলেছি ও থাকতেছি কিন্তু তখন একটা দিনও
থাকতে পারব না তাই অযুহাত দিয়ে বাপের বাড়ি
যাওয়ার ধান্দাটা কমিয়ে ফেলো।
এই তোমার কি বর্ষাতে ভিজতে ভালো লাগে নাকি
লাগে না। আমার কিন্তু লাগে ।
মনের অজান্তে তোমাকে ভেবে মাঝে মাঝে অনেক
ভিজি আমি।
আচ্ছা আমাদের প্রথম দেখাটা কীভাবে হবে।
বাসের পাশের সিটে, ভার্সিটিতে,কোনো অনলাইন
পেজে, পার্কে নাকি সরাসরি বিয়ের পিরিতে।
ভার্জুয়াল রিলেশনে কিন্তু আমি অবিশ্বাসি তাই
সেটার দিকে তোমার মন না দেওয়াই ভালো।
আচ্ছা আমার মতো করে কি তুমিও ভাবো নাকি অন্য
ছেলেকে নিয়ে ভাবতে ব্যস্ত সময় পার করছ।
কোন জেলায় বাড়ি তোমার বলোতো।
লালমনিরহাট,,বরিশাল, রাজশাহি
নাটোর নাকি আমার জেলা
যেখানেই হোক রিলেশনের প্রথম দেখাটা কিন্তু
তোমাকেই করতে আসতে হবে।
প্রথম দেখা করতে গিয়ে মাইর খাওয়ার ইচ্ছা আমার
নাই।
সাথে যে তুমি তোমার ভাই বা প্রথম বয়ফ্রেন্ডকে
আনবা না তার কী নিশ্চয়তা আছে।
তুমি কি যানো তোমাকে ভেবে কতগুলো রাত ঘুমহিন
কাটিয়েছি আমি । জানবে বা কি করে তুমি তো
অন্য কোথাও ব্যস্ত সময় পার করছ হয়ত।
সপ্ন দেখছ হয়ত ঠিকই তবে সেটা হতে পারে অন্য
কাউকে নিয়ে।
তবে এসব কিছুতেই আমার আপত্তি নাই কারণ যতই
ভাবি বিয়েটা শেষে অন্যর গার্লফ্রেন্ডকে করতে
হবে যানি তাই এসব নিয়ে সন্দেহটা বাড়াতে চাই
না। কারণ সব থেকে বেশি ঘূণা করি সন্দেহ ও
অবিশ্বাসকে।
তবে দয়া করে একটু ভালোবাসা আমার জন্যও রেখো।
আমার জীবনটা খুবই সাধারণ। তবে সপ্ন দেখি
অসাধারণ কিছু করার। জানি পারব না তবে
সপ্ন দেখতে তো আর মানা নেই তাই না।
যাই হোক যেখানেই থাকো যেভাবে থাকো একটু
তাড়াতাড়ি এসো আমার জিবনে বুঝলা। তেমাকে
বিহীন যে আর সময়টা কাটে না।
ইতি
তোমার হবু বর

Finish !! Wait... Below another one

Thanks for reading and Please continue to other

one given below...



Letter 3

"আমার মা'কে কষ্ট দেয়া লোকটাকে আমি ডিভোর্স দিতে চাই " 
___________________________________________

" মিম্ মি জীবন নিয়ে লড়াই তো চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাই hats off to you ; কিন্তু ছেলের পাসপোর্ট করেছেন কি ? ডিবি থেকে ভেরিফিকেশনে এলে বলবে আপনার ঠিকানাতে বাচ্চার ঠিকানা দেওয়া যাবেনা। ওর বাবার ঠিকানা লাগবে। কারন আপনি ওর লিগ্যাল গার্ডিয়ান না। ইমিগ্রেশনে আটকাবে । বাচ্চা নিয়ে দেশের বাইরে যেতে বাবার concent letter লাগবে! কারন আপনি আপনার সন্তানের লিগ্যাল গার্ডিয়ান না...... !
--- এই কথাগুলা বললাম কারন এই প্রশ্নের মুখমুখি আমি হয়েছি। তখন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে জানতে চেয়েছি--- সন্তান আমি জন্ম দেওয়ার পরেও, একা একা লালন পালন করে যাবার পরেও যদি লিগ্যাল গার্ডিয়ান আমি না হই, তাহলে আমি কে?''

-----আমার কোন এক পোস্টে একজন সিঙ্গেল মা লিখেছেন মন্তব্যটা।

আমি সাধারণত ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো লেখার চেষ্টা না করি ফেবুতে।কারন আমার পোস্ট মূলত পড়েন জীবনে কখনো হেরে যেতে হয়েছিল এমন মানুষেরা।
আমি চাই না তারা আমার লেখা থেকে এমন কোন ধারনা গ্রহণ করুক যাতে মনে হয়--- জীবন একটা মহা ভেজালের জিনিস।জীবনের উপর যেন বিরক্ত হয়ে না যায় তারা ।
তাই খুব সচেতনভাবেই আমি চেষ্টা করি পজেটিভ কিছু লেখার জন্য ইস্যু যাই হোক না কেন।

কিন্তু তার মানে এই না যে আমার জীবনে দুঃখ কষ্ট কান্না নেই। কাঁদতে আমাকেও হয় লুকিয়ে লুকিয়ে। সন্তানের জন্য সিঙ্গেল প্যারেন্টের চোখের জলের মতো শুদ্ধ পানীয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই।আমিসহ পৃথিবীর সকল সিঙ্গেল প্যারেন্টকেই জীবনে অজস্র বার এই শুদ্ধ জলে ভিজে নিজেকে তৈরি করে নিতে হয় নিত্য নতুন বহু অনাকাঙিক্ষত জীবন যুদ্ধের জন্য।

ডিভোর্সের পরে কেন যেন বহু ছেলে/মেয়ে (খুবই কম সংখ্যক মেয়ে) কেন যেন পার্টনারকে ত্যাগ করার সাথে সাথে সন্তানকেও ত্যাগ করে ফেলেন। অথচ ধর্মে এবং সমাজে কিন্তু এই বিষয়ে পরিষ্কার বিধান আছে।তাতে কি ? আইনের শাসন ! বাংলাদেশে !

আসলে কি হয় জানেন ? দায়িত্ব নেবার মতো GUTS কিছু মানুষের কখনোই থাকে না। তারা বিয়ে করতে হয় বলেই করে। সন্তান জন্ম দিতে হয় বলেই দেয়। চাকরি/লেখাপড়া করতে হয় বলেই করে। কখনোই সততা, ডেডিকেশন , প্যাশন দিয়ে তারা কোন কাজ করেন না। এই স্বভাবের লোকেরা ডিভোর্সের পরে মাথা থেকে সন্তানকেও ঝেড়ে ফেলে দেন ।
এসব ধ্বজভঙ্গ পুরুষ ধরেই নেয় --- আরে যাবে কই ? আমার ই তো রক্ত। আয় তু তু বললেই ছুটে চলে আসবে সন্তান । আপাতত কিছু বছর চিল মারি।জীবনটাকে ইনজয় করি।আর ঐ যে বাতিল করা পুরাতন বৌ সে মানুষ করুক বাচ্চাটাকে। শা***** বুঝুক আমার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া এত সহজ না।সন্তানের দেখভাল সব কিছুই ওরে করতে হবে একা একা। না হবে ক্যারিয়ার না সংসার না স্বপ্ন পূরণ । মেয়ে মানুষের আবার স্বপ্ন পূরণ!! সমাজও ছিঁড়ে খাবে ওরে। বাচ্চাসহ কোন বোকা পুরুষ (!!)(আসলে সঠিক শব্দটা হবে মহামানব) ওরে গ্রহণ করবে ?

হুমম এসব ঘটছে নিত্যই।
এ ধরনের ঘটনার পরে এক শ্রেণীর নারী সত্যিকার অর্থে হারিয়ে যান জীবন থেকে। আরেক শ্রেণী প্রাথমিক ঝড় ঝাপটা সামলে বছর দুএকের মধ্যে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ান জীবনের সাথে বোঝাপড়া করবেন বলে।

আমাকে যখন জীবনের একটা চ্যাপ্টার ক্লোজ করতে হলো তখন আমি ঘর ছাড়ার সময়ে কিংবা বলা যায় ঘর থেকে বের করে দেবার মুহূর্তে একহাতে একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং অন্য হাতে সন্তান এবং পাশে নিজের আব্বু আম্মু আর বোনদের ভরসা ছাড়া আর কিছু সাথে করে আনতে পারেনি।
আমার মায়ের শখ করে সাজিয়ে দেয়া তথাকথিত মাষ্টার বেডরুমের এবং আমার ছেলের রুমের জন্য ইন্টার্নশীপের সময় পুরো এক বছরে নিজের বেতনের জমানো টাকা দিয়ে কেনা আসবাবপত্রের একটাও সাথে আনা হয়নি। শখের শোপিচ , ড্রেসিটেবিলে রাখা টিপের পাতাগুলো কাচের রেশমি চুড়ি , আলমারী ভর্তি কাপড় ,ওয়াসরুমের আয়নার সাথে লাগানো LOVE লেখা স্টিকারটাও তুলে ছিঁড়ে কুচি কুচি করে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে আসার সুযোগটুকু পাইনি। সম্ভবতঃ বারান্দাতে তখনো ঝুলছিল আমার চুলের গন্ধ মাখা ভেজা টাওয়ালটা।
এরকমই হয় আসলে। হুট করেই ভেঙে যায় তাসের ঘরগুলো। যেগুলো আসলেই সংসার হয়ে উঠতে পারেনি ইট কাঠের ইমারত ছাড়া।

তো ছেলেকে স্কুলে ভর্তির সময়ে সমস্যা হলো।পিতা মাতার NID, পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হয়।যখন যথাযথ লোকজনের কাছে এই প্রয়োজনীয় পেপারসগুলো চাওয়া হলো সেসব কিছুতেই পাওয়া গেল না। একবার না বার কয়েক চেষ্টার পরেও যখন কিছুই পাওয়া গেল না তখন বাধ্য হয়ে পুরনো এলবাম ঘেঁটে পাওয়া গেল শুধু বিয়ের দিনের ছবি। অদ্ভুত দ্রুততায় এক এলবাম ভর্তি ছবিগুলো টুকরো টুকরো করতে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় একেবারেই লাগেনি।তবে তিন টি ছবি ছেঁড়া হয়নি । বিদায়বেলা বাবা মা কে জড়িয়ে ধরে কান্নার একটি আর বিয়ের শাড়ি পরা সাজুগুজু করা পুতুল পুতুল টাইপ দেখতে ছোটখাটো ভীত মেয়েটির হাসি মাখা মুখের দুটো ছবি। কেন যেন এই ছবি তিনটাতেই আটকে গেল মানুষকে অন্ধভাবে ভালোবাসতে এবং ভরসা করতে জানা মেয়েটি।

যাহোক ডাক্তার হবার বদৌলতে ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি সব কাগজ জমা না দিতে পারার পরেও। কিন্তু পাসপোর্ট করা সম্ভব হয়নি এখনো।

কিন্তু তাই বলে কি আমরা পৃথিবী দেখব না ?
অবশ্যই দেখব। এক পাসপোর্টে কখনোই আমাদের জীবন আটকে যাবে না।যেতে দেইনি আমি। ছেলেকে নিয়ে চষে বেড়াচ্ছি পুরো বাংলাদেশ সুযোগ পেলেই।ছেলেকে বলেছি ---- বাবা আগে নিজের দেশটাকে দেখ, চিন।তারপর বড় হলে পুরো পৃথিবী কে দেখবে চিনবে জানবে ।

এখন ছেলে জানে কেন তার পাসপোর্ট নেই। ছেলে এটাও জানে সব ডকুমেন্টস থাকার পরেও কেন তার মা পাসপোর্ট বানায়নি । ছেলে বলে ---- মা আঠারো বছর হলে তোমার পাসপোর্ট আমি বানিয়ে দিব।তারপর দুজনে মিলে ওয়র্ল্ড ট্যুর দিব দেখ । আমার জন্য তুমিও আটকে গেলে পচা সিস্টেমে ।

ছেলে বলে--- মা তুমি তো বলেছিলে কাট্টি তোমাদের দুজনের হয়েছে।আমার সাথে কিছু হয়নি।তাহলে লোকটা, বাবা বলতে কেমন যেন লাগে জানো মা ; কেন আমার সাথে যোগাযোগ করল না ? নানাভাই, নানু সবার তো মোবাইল আছে। ও ইচ্ছে করে এমন করেছে।ও আমাকেও চায় না। আমি সবই বুঝতে পারি। অনেক বই পড়ি না আমি?ডকুমেন্টারি ফিল্মও তো দেখি আমি। টিনেজার হব তো কয়েক বছর পরে।

ছেলে আরো বলে---- যার চেহারা আমার মনে নেই , যার জন্য আমার মা কে বিশ্রী বিশ্রী প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় অনেক জায়গায়, যার কারনে আমি মসজিদে যেয়ে নামাজ পড়তে পারি না, নানা ভাই না থাকলে তো ঈদগাহে যেয়ে ঈদের নামাজটাও পড়া হতো না,
আমার circumcision এর অপারেশনের পরে যে আমাকে দেখতেও আসেনি, যে কখনো আমাকে চুল কাটতে সেলুনে নিয়ে যায়নি , যে কখনো আমার প্যারেন্টস মিটিংও আসেনি , যার জন্য আমি আমার মা কে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতে দেখি আমি ঘুমিয়ে যাবার পরে আমাকে কোলে নিয়ে সেই লোকটা কখনোই আমার লিগ্যাল গার্ডিয়ান না। আচ্ছা মা এই রকম লোককে যারা বেবীদের সাথে যোগাযোগ করে না, বেবীদের মা কে কষ্ট দেয় ওদেরকে বেবীরা ডিভোর্স দিতে পারে না ? তুমি ফেসবুকে একটা পোস্ট লিখে দেখ তো। কোন লইয়ার আন্টি/ আংকেল দেখলে নিশ্চয়ই কমেন্ট করবেন।

গলার কাছে উঠে আসা শক্ত দলাটাকে কোন রকমে গিলে ফেলে টলমল চোখে নিজের অস্তিত্বের দিকে মাথা উঁচু করে তাকিয়ে মনে মনে বললাম------
#KARMA_IS_A_BITCH..........
প্রকৃতি শোধ নিবেই। আজ নাহয় কাল।

Thanks for reading this Bangla Love Letter and I want you to comment below and share your feelings with us. Besides, please share this post with your nearest one.

New Valobashar Golpo Kotha for Lovers 2018

আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম নতুন কিছু Valobashar Golpo Kotha ভালোবাসার গল্প কথা

Valobashar golpo kotha

আশা করি সবার ভালো লাগবে। 


একাকীত্ব
নীল


প্রিয় মানুষগুলোর দেওয়া কষ্ট কেউ সহ্য করতে পারে না এটা মিথ্যা কথা... চরম মিথ্যা কথা....একটা সময় তার অনুপস্থিতিতে কিচ্ছু যায় আসে না আমার আপনার...
কেমন আছো তুমি.....কি করছো তুমি....নিজের এতটুকু খেয়াল রাখো না কেন তুমি???
কথাগুলো একটা সময় বেশ পুরোনো হয়ে যায়........কেমন যেন শুন্যতা কাজ করে নিজের ভিতর কথাগুলো চিন্তা করলেই....

মানুষটাকে বারবার দেখতে মন চায়....কন্ঠটা শুনতে মন চায়....কিন্তু আর শোনা হয়ে ওঠে না....বিশ্রি রকমের সহ্যশক্তি তৈরী হয়ে যায় নিজের ভিতর.......আস্তে আস্তে তার জন্য অপেক্ষা করা সময়গুলো কেমন যেন হাওয়ায় মিলাতে থাকে....প্রিয় মানুষটার তৈরী করা অভ্যাসটা আর তার দেওয়া কষ্টগুলো কেমন যেন ককটেল হয়ে হাসির খোরাক হয়....তারপরও কষ্ট হয়....খুব কষ্ট হয়.... বুকের বাম পাশে চিনচিন করে ব্যথাটা গ্যাসের ব্যথা বলে একটা ওলপ্রাজলে শান্তনা দিতে হয়...

আজিব না আমরা আর আমাদের অনুভূতিগুলো.....কষ্ট হয় তার রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলোর জন্য.....স্মৃতিগুলো না খুব নিলজ্জ...চুপচাপ থাকলেও হঠ্যাৎ ঘুমের মধ্যেও লাফিয়ে তুলতে বাধ্য করে....দুঃস্বপ্ন বলে চালিয়ে দেই...

হৃদয়স্পন্দনটা বাড়িয়ে দিয়ে ছলছল চোখে স্মৃতিগুলো একটা দীর্ঘশ্বাস উপহার দিয়ে আবার লুকিয়ে যায়...
খুব খেয়াল করলে দেখতে পারবেন....রিক্সায় একপাশে ছেলেটা চুপচাপ বসে আছে... মাঝে মাঝে মুচকি হাসছে আবার মন খারাপ করছে.....সাইকোটাইপ বদ্ধ পাগল নয় তো?
না সে পাগল নয়....ছেলেটার মন জুড়ে এখনও কোন নষ্টগল্পের নায়িকা রাজত্ব করছে....

মেয়েটা না উৎসুক চোখে এদিক-ওদিক দেখছে....না মেয়েটার চরিত্রে কোন প্রবলেম নেই....একটা সময় কোন এক ছেলে তার অপেক্ষায় থাকতো এই রাস্তায়.....মেয়েটা হাসছে আর হাঁটছে ... ও পাগল ছিল না....ওর ভালবাসাটা পানির মত স্বচ্ছ ছিল....ঐ ছেলেটার জন্য ছিল... যে এখন নেই কিন্তু মনটা তার কাছেই ইজারা দিয়ে রাখা.

গভীররাত পর্যন্ত ঘুম আসে না নাম দিয়ে বিছানায় ছটপট করা মানুষটা বারবার মোবাইলের স্কীন অন-অফ করে একটামানুষের কলের অপেক্ষা করছে....কাউকে কিছু বলতে চায় সে.....অনেক স্বপ্ন আর অনেক গল্প তার মনে ছিল নির্ভরযোগ্য বুকটা আজ অন্য কারও দখলে....গল্পটা শোনানোর মানুষটা আজ নেই.....সবাই ব্যস্ত আমার গল্প শোনার সময় কারও নেই...

এই পৃথিবীতে একাকীত্বের চেয়ে বিষণ্ণ অনুভূতি আর কিছু নেই.....আমার একাকীত্বটা কাউকে নাড়া দেয় না....সবাই দেখে আপনি ভাল আছেন.....আদৌ আপনি ভালো আছি কিনা আপনাার মনের ভিতরে ঢুকে কেউ উঁকি দিতে ভয় পায়....ওখানে একাকীত্ব নামের ভাইরাস বাসা বেঁধেছে....অনেকদিন এভাবে কাটিয়ে দিলে একটা সময় নাকি অভ্যাস হয়ে যায়....অনুভূতি নাকি কাজ করে না....মিথ্যা চরম মিথ্যা....ঝাপসা চোখজোড়ার বৃষ্টি নিজেকেই মুছতে হয় কেউ আসে না সত্যি কেউ আসে না চোখের পানি মুছতে......

কষ্টগুলো আগের মতই থাকে...কোন রং রুপ বদলায় না...মাঝে মাঝে চাপা আর্তনাদে মুখরিত করে অন্তর আত্মকে.....অভ্যাস হয়ে যায় একাকীত্বের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায়....সংসার করি...ছেলেটা নিকোটিনে আর মেয়েটা ঘুমের ট্যাবলেটে...

একা থাকতে থাকতে মনে করি বেশতো ভালই আছি...আসলে কেউ ভালো থাকে না......অথচ সে থাকলে ভালো থাকতাম হয়তবা এখন যেমনটা আছি তার চেয়ে বেশি.....!!!!


Valobashar Golpo Kotha ভালো লাগলে নিচের গল্প দুটি পড়তে পারেন। 


অবুঝ ভালোবাসা
বাবু


আজ পাঁচ বছর হলো আমাদের বিয়ের। এই পাঁচ বছরে অন্তত পাঁচটি জন্মদিন গেছে আমার বউয়ের। পাঁচ বছরে পাঁচটা এনিভার্সেরি গেছে আমাদের। কিন্তু একটাও পালন করা হলো না।
আমি ওর জন্মদিন এই পাঁচ বছর ধরেই মনে রেখেছি। কোন দিন ভুলি নাই কিন্তু ওর জন্মদিন টা সেইভাবে সেলিব্রেট করাও হয় না।সেলিব্রেট করবো দূরের কথা ওকে আমি উইশ পর্যন্ত করি না। এই পাঁচ বছর অর্থাৎ ১৮২৫ দিন, ৪৩৮০০ ঘন্টা,২৬,২৮,০০০ মিনিটে একটিবার ও ওকে বলাই হয় নি "আমি তোমায় ভালবাসি। "
মেয়েটি আমার ভিতর জমে থাকা শক্ত হৃদয়টাকে ভেঙ্গে একদম নরম করে দিয়েছে। বিয়ের প্রথম দিন আমি আমি ওর সাথে শুই নি। ও একটি শব্দ ও করে নি। পরেরদিন থেকে স্বাভাবিক ব্যবহার করতে লাগলো। অবাক হলাম। অবাক হওয়ার ই বিষয়। সারারাত যখন বারান্দায় বসে সিগারেট খেতাম,মদ খেতাম ও চুপ মেরে ভিতরে বসে থাকতো। মদ খেয়ে যখন বারান্দায় লুটিয়ে পড়তাম আমার কিছুই মনে থাকতো না। পরেরদিন নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করতাম। অথচ আমার এই মাতলামি নিয়ে ওর কোন অভিযোগ ছিলো না।
এই পাঁচ বছরে ও আমার কাছে একবার কোন আবদার করেনি কিছু সম্পর্কে। মুখ ফুটে ওর সাথে ভালো করে কথা বলিনি প্রায় ১ বছর। মেয়েটি হয়ত আমার এসব ব্যবহারের জন্য অনেক চোখের জল ফেলেছে কিন্তু আমার বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ কখনো কারও কাছে করেনি। ভাবতাম মেয়েটি হয়ত আমাকে মেনে নিবে না। ডিভোর্স দিয়ে চলে যাবে। না মেয়েটি আমাকে ছেড়েনি। মাঝেমধ্যে ওকে আমার অনেক বোকা মনে হয়। ও আসলেই বোকা। 
প্রায় ৬ বছর একটা মেয়েকে ভালবেসেছিলাম। প্রত্যেক ঘন্টায় ঘন্টায় ওকে "I love you" বলতে হতো। প্রত্যেক জন্মদিনে ওর টিএসসিতে সেলিব্রেট করতে হতো বন্ধুবান্ধব এর সাথে। চুন থেকে পান খসলেই ওই মেয়েটির অনেক ন্যাকামো সহ্য করতে হতো আমাকে। কিন্তু তবুও মেয়েটিকে আমি ভালবাসছিলাম। 
বলতে গেলে রীতিমত পাগল ছিলাম। মেয়েটি যখন আমাকে ছেড়ে যায় আমার প্রায় ২ বছর লেগে যায় নর্মাল হতে। 
আসলে আমি ওর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। ও যদি ছেড়ে না যেতো আমার বউ এর মত কাওকে আমি পেতাম না। যে মেয়েটা আমাকে বুঝিয়েছে ভালবাসা মানে কি? এই পাঁচ বছরে ওর জন্মদিন আমি পার্টি দিয়ে সেলিব্রেট করি না। সারারাত মসজিদে কাটায় আমি। নামাজ পড়ি তার জন্য দোয়া করি। সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করি সে যেনও আমার মৃত্যু পর্যন্ত আমার পাশে থাকে। চিৎকার করে বলি "আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি " কিন্তু ওকে শুনতে দেয় না হারাবার ভয়ে। মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি,সিগারেট ও ধরতে হয় না। যখন এইগুলা হাতে নেই ওর ছবি ভেসে উঠে। আর খেতে পারি না তখন। পাগলীটা নিজেও জানে না ও আমার জীবনজুড়ে কতটা বিস্তৃত।



অবহেলা
ইমরান হোসাইন নীরব 


কারো কাছে অবহেলিত হয়ে তুমি মন খারাপ করো না... ভেবো না যে তার মন বলতে কিছু নেই... আসলে মন সবারই আছে... তবে একটু খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবে সেই মানুষটাও অন্য কারোর কাছে অবহেলিত হয়ে আসতেছে... ঠিক তোমারই মতো সেও অন্য কারোর কাছে অবহেলার পাত্র...
.
যার একটা মেসেজ পাবার জন্য বার বার ইনবক্স চেক করছো... মানুষটা অনলাইনে আছে কিনা সেটাও লক্ষ রাখছো... তবুও তার কোন বার্তা তোমার ইনবক্সে আসে না... তখন হয়তো তোমার খারাপ লাগবে... মনে হবে ফেইসবুকে আসাটাই বৃথা... কিন্তু না, খোঁজ নিলে জানতে পারবে সেই মানুষটাও ঠিক তোমারই মতো অন্য কারো মেসেজের জন্য অপেক্ষা করে আসতেছে... কিন্তু মেসেজ আসে না...
.
তোমারও ইচ্ছা হবে পছন্দের মানুষটা তোমার রোজ খোঁজ খবর রাখুক... ঠিক মতো কেয়ার করুক... কি করছো, খেয়েছো কিনা এসব প্রশ্নও তোমার তার কাছ থেকে পেতে ইচ্ছা করবে... কিন্তু এসব প্রশ্ন তো দূরের কথা, তুমি মরে গেছো না বেঁচে আছো এ খবরও সে রাখে না... তুমি হয়তো ভাববে মানুষটা বুঝি বড় নিষ্ঠুর... আসলে কেউই নিষ্ঠুর না, তোমার মতো সেও ঠিক একই ভাবে অন্য কারোর কাছে কেয়ার পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে...
.
তোমার হয়তো ইচ্ছা হবে পছন্দের মানুষটার সাথে একটু সময় কাটাতে... ইচ্ছে করবে কিছুটা সময় স্মৃতি হিসাবে ধরে রাখতে... কিন্তু মানুষটা তোমাকে কোন সাঁড়া দিবে না... বার বার নানা অজুহাত দেখিয়ে তোমাকে এড়িয়ে চলবে... তুমি হয়তো ভাববে মানুষটা বুঝি বড়ই কৃপণ... আসলে কেউ কৃপণ না, ঠিক তোমারই মতো সেও অন্য কারোর সাথে সময় কাটানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে...
.
আসলে কেউই হুট করে অবহেলা করতে পারে না... হঠাৎ করে অবহেলা করা যায় না... ধীরে ধীরে মানুষ অবহেলা করতে শিখে যায়... একটা কথা জেনে রাখো, একমাত্র অবহেলাই মানুষকে অবহেলা করতে শিখায়... আর কিচ্ছু না !!" :)
.
যদি আমাদের ভালোবাসার গল্প গুলো ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করবেন। 

Top 10 Best Valobashar Golpo - You will love it

In this Post, I'm writing some best Valobashar Golpo that you never have seen before.

valobashar golpo

গল্প: ১



তোমার কষ্টের কথাগুলো কাউকে বলে দেওয়া মানে এই নয় যে, সে তোমাকে যাতে ঠিক ওভাবে কখনো কষ্ট না দেয়... বরং তুমি তোমার দুর্বল দিকগুলো কাউকে খুব সহজেই জানিয়ে দিচ্ছো কষ্ট দেওয়ার জন্য... এবং পরবর্তীতে কিভাবে তোমাকে কষ্ট দিতে হয় সেটাও তাকে সুন্দর করে বলে দিচ্ছো... ঠিক এসবই হয়ে যাচ্ছে...
.
হ্যাঁ, কাউকে মনের কষ্ট শেয়ার করলে একটু ভালো লাগে... নিজেকে একটু হালকা লাগে... কিন্তু কাকে শেয়ার করবে ?? চারপাশেই যে প্রতারকদের নিঃশ্বাসে ভরা... প্রিয় মানুষকে শেয়ার করে দেখো, সেও একদিন ঠিক প্রতারণা করবে... বেস্ট ফ্রেন্ডকে শেয়ার করে দেখো, সেও একদিন ঠিক নিজ স্বার্থের জন্য তোমাকে কষ্ট দিবে... মজা নিবে...
.
একটা সময় ছিলো যখন মানুষ অন্যের মন ভাঙ্গার গল্প শুনলে আপসেট হতো... নিজেও কষ্ট পেতে... মাঝে মাঝে কেঁদেও দিতো... এখন আর সেই দিন নাই... এখন মানুষ মন ভাঙ্গার গল্প শুনলে মনে মনে আনন্দ নেয়... কাঁদা তো দূরের কথা উল্টো মুখ লুকিয়ে হাসে... আগে মানুষ কাউকে কষ্ট দেওয়ার আগে ভাবতো, এখন কিভাবে কষ্ট দেওয়া যায় সেটা ভাবে...
.
বর্তমানে খুব কম মানুষই আছে যারা তোমার সুখে খুশি হয়... বেশিরভাগ মানুষই তোমার সুখ দেখে আড়ালে জেলাস ফিল করে... তোমার সুখে থাকাই তাদের মনে হিংসার কারণ সৃষ্টি করে... কেউ কেউ তোমার দুঃখ দেখে সামনে মন খারাপ করলেও আড়ালে ঠিকই তালি বাজায়... দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি...
.
তাই কি দরকার অন্যকে নিজের কষ্ট শেয়ার করে আনন্দ দেওয়ার ?? কষ্ট হলেও নিজের কষ্ট নিজের কাছে চেপে রাখাই ভালো... বুদ্ধিমান লোকেরা কখনো নিজের দুর্বল দিকগুলো সহজে বলে না... এইসব ছোটখাটো বিষয়গুলো তুমি যতো তাড়াতাড়ি বুঝবে ততোই দ্রুত ম্যাচুরিটি হতে শিখবে... চারপাশ থেকে মানুষের দেয়া কষ্টও কম পাবে...
.
নিজের কষ্টগুলো হয়তো কষ্ট হলেও চেপে রাখা যায়... কোন না কোন ভাবে সহ্য করে নেওয়া যায়... কিন্তু কাউকে নিজের কষ্টগুলো শেয়ার করে পরবর্তীতে ঠিক একই কষ্ট তার কাছ থেকে পেলে তা সহ্য করা যায় না !


গল্প: ২


বড় বউ,ছোট বউ,মেঝ বউ এই ছবিগুলা যখন দেখেছিলাম তখন মনে হত এতো নিষ্ঠুর কি করে হয় মানুষ!!বিয়ের পর আস্তে আস্তে কিছুটা ধারনা হল।এরপর এখন যখন ছেলে মেয়ের স্কুলের হাজারো মায়ের সাথে মিশি তখন এর চেয়েও ভয়াবহ কিছু শুনি।আবার কিছু কিছু আশপাশের বাসা গুলাতেও দেখি।!!অনেকে বলে মানুষ টিভি দেখে নষ্ট হচ্ছে।টিভির চেয়েও ভয়ংকর আমাদের এই সমাজে অনেক কিছু ঘটছে বলেই এইসব নাটক সিনেমা হচ্ছে।

শুধু শাশুড়ি নয়,নিজেদের মাও জামাইর টাকার উপর মুল্যায়ন করে।জামাইর কারি কারি টাকা থাকলে এক রকম।না থাকলে আরেক রকম!!

একজন বলছিল শাশুড়িকে মায়ের চেয়েও আপন করে নিয়েছিলাম।মায়ের সাথে কোন দিন ফ্রি ছিলাম না।কিন্তু শাশুড়ির সাথে ফ্রি হয়ে গিয়েছিলাম মাত্র ১বছরেই।মা কে ফোন না করে থাকতে পারি, কিন্তু শাশুড়িকে ফোন না দিয়ে থাকতে পারতাম না।তখন জানতাম না শাশুড়ির ভালোবাসা নির্ভর করে ছেলের ইনকামের উপর। যখন ছেলে বেকার হয়ে পরল তখন টের পেলাম। ছেলের ইনকামের উপর বউ এর মুল্যায়ন! নিজের অথর্ব ছেলের জন্য কি বউ দায়ী??

যার টাকা আছে তার মা বাবা আছে।যার টাকা নাই তার কেউ নাই ঠিক না,আছে তাকে কিনে নেওয়ার লোক অনেক।নিজের গোলামী করতে কিনে নিতে চায়!
যার টাকা আছে তার জন্য আছে মা বাবার অফুরন্ত দোয়ার ভান্ডার!আর যার টাকা নাই তাকে ডাকেও বিক্রিত সুরে!!হারুইন্না,রুবেইল্লা.......
আর বৃদ্ধ বয়সে খেদমতের জন্য দরকার সেই টাকাহীন মানুষগুলাকে হাগু পরিষ্কার করতে!তখন টাকা ওয়ালারা বউ সহ মৃত্যু শয্যায় বসে পা লাড়ে!এখন যেমন লাড়ে!তারপর মা/বাবার জন্য বিশাল খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা!এলাকা এবং পরিবারের সুনাম কুড়ানো!!মা বাপের দোয়ায় তাদের নাকি টাকায় অফুরন্ত বরকত! বরকত না অবৈধ ইনকাম সেটা তখন প্রকাশ পায় না!!
সব মা বাবারা তাদের টাকা ওয়ালা সন্তানদের আশ্রয়ে ভালো থাকুক।টাকাহীন মানুষকে কিনতে চেষ্টা না করুক।এইটাই কাম্য।



গল্প: ৩


কেউ কথা রাখেনা

২৭ বছর আগে বাবা যখন মা কে ঘরে নতুন নিয়ে এসেছিল হয়তো মা তখন বাবাকে বলেছিল- সুখে:দুখে পাশে রবো। কখনো সংসার ছেড়ে যাবোনা। কিন্তু মা বাবা কে ছেড়ে ঠিকই চলে গেল; এখন সে বাঁশবাগানে একা ঘুমায় আর বাবাকে প্রায়ই দেখি তার কবরের পাশে। জায়নামাজে কাঁদে। আর মৃতূর পর আহাজারিতে আকাশ ভারী... বলেছিল- আমি আর কোনোদিন ২য় বিয়ে করব না। সেবা শুশ্রুষার সংসারের হাল ঠিক রাখার জন্য হলেও কাউকে দরকার। ভাই-বোন রা মিলে বাবা র জন্য পাত্রী দেখি, বাবা নিষেধ করেছে বহু কিন্তু শেষ অবধি বিয়েটা না করেনি। বাবা-মা কথা রাখেনি।
.
৫ বছর আগে হাতজোড় করে জনৈক নেতা দুয়ারে এসে বলেছিল- পায়ে পরি, এবার ভোট টা দিন আমি আপনাদের রাস্তা ব্রিজ কালভার্ট ত্রান সব দেব। চোর মশার উৎপাৎ বন্ধ করে দেব। কিন্তু নেতার ব্যাংক একাউন্ট পরিবর্তন ছাড়া আজও তার প্রতিশ্রুতির কোনো পরিবর্তন হলনা। নেতা কথা রাখেনি।
.
দ্বাদশী একদিন হাতে হাত বুকে মাথা রেখে বলেছিল- কোনো পরিস্থিতিতে তোমাকে ছেড়ে যাবোনা, আলাদা হবোনা, আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না! কিন্তু সে আমাকে ছেড়ে চলে গেল.. আলাদা হল। প্রেমে ধরা খাওয়ার পর বলল- বিশ্বাস করো আম্মু,,, ওরে আমি চিনিই না, পথে ঘাটে ডিস্টার্ব করে! ওর বেবি দুটো আজ কেজি এবং ক্লাস সেভেনে পড়ে। আর আমাকে ছাড়া মরে যায়নি, স্বামীর সংসারে সে দিব্যি বেঁচে আছে! প্রিয়তমা কথা রাখেনি।
.
হলে এক্সাম দেওয়ার সময় পিছনের বেঞ্চে বসা বন্ধুটি টেনে সেদিন আমার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছিল, বলেছিল- দোস্ত দেখা। ফেল করলে ইজ্জত শেষ! জীবনে বড় কিছু হতে পারলে তোকে শার্টের বদলে শো-রুম দিয়ে দেবো। বন্ধুটি আজ ব্রান্ডের মালিক কিন্তু ডিসকাউন্টও দেয়নি। 
.
ভূকেন্দ্রে বসে স্যাটেলাইট বলেছিল- উৎক্ষেপণ হলে ঝকঝকা ফকফকা ছবি দেখা যাবে, নেট স্পিড বেড়ে যাবে, বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে আরও কত কী! কিন্তু কলরেট বেড়ে পকেট ফতুর। সে যে কথা দিয়ে রাখল না, জনগনের কথা ভাবল না...
.
তুমি বন্যা হলে আমি হবো সুনীল, তুমি নদী হলে হবো শঙ্খচিল... হয়েছিলাম তার প্রেমিক থেকে স্বামী, কিন্তু সে হয়ে গেল পরকিয়া!
.
ওয়াদা দেয়া হয় কি ওয়াদা ভাঙার জন্য? কি কথা ছিল আর কি হলো; প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে হোক সবাই মিথ্যা বলে। আসলে সবাই Silent lair কেউ কথা রাখেনা। কেউনা...



গল্প: 


আমি তোমার যত্নশীল প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম, এক ডজন রমনীর প্রেম উপেক্ষা করে তোমার হাসিতে বিধ্বস্ত হতে চেয়েছিলাম, বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত ইরাকের দেওয়াল গুলোর মত তোমার মনে ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে সাহসী প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

আধুনিক যুগের ইন্টারনেটের মেসেজ ছেড়ে কাঁচা হাতে চিঠি লিখে চমকে দেওয়া প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। প্রচন্ড জ্বরে কাঁপুনির ভান করে একটু জড়িয়ে ধরে ঢং করা প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। ভালোবাসার শেয়ার বাজারে মমতাজের শাহজানকে পিছনে ফেলে সেরা প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

মাসের শেষে টিউশনির এক'শ টাকা বাঁচিয়ে এক জোড়া নীল চুঁড়ি কিনে মধ্যবিত্ত উম্মাদ প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। মলিন কণ্ঠ শুনে ছটফট করে প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন করে কি হয়েছে? জানতে চাওয়া দায়িত্ববান প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে একপাতা কালো টিপ কিনে মুগ্ধ করে দেওয়া বোকা প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

সস্তা টকটাইমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অযাচিত কথা বলে রাত কাটিয়ে দেওয়া নিশাচর প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম, সামান্য সময় ফোন লাইন ওয়েটিং পেয়ে অভিমানে ফোন বন্ধ করে আক্ষেপ নিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। পাড়ার মাঠে লাস্ট বলে ছয় হাঁকিয়ে সে সময়ের অনূভুতি প্রকাশ করা ছ্যাঁচড়া প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

ভুল বানানে কবিতা লিখে মেসেজ করে মুগ্ধ করতে চাওয়া স্ব-শিক্ষিত প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। শব্দ করে চাঁ খাবেনা বারণ শুনে বোকা ছাত্রের মত আর হবেনা বলে- হেসে দেওয়া প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। প্রেমিকার কড়া শাসনে মুগ্ধ হয়ে সিগারেট ছেড়ে দেওয়া বাধ্য প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

মিথ্যে জোক বলে হাসি বের করে সেই হাসিতে মুগ্ধ হয়ে সহস্র বছর কাঁটিয়ে দেওয়ার শপথ করা ভাঁড় প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। কান্নার শব্দ শুনে কেঁদে ফেলে চোখের জল লুকিয়ে ফেলা আবেগী প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

আমি উপন্যাসের নায়কের মত প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম, এক গুচ্ছ গোলাপ হাতে নিয়ে কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে থেকে বখাটে প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। অসুস্থতার ভান করে একটু যত্ন পেতে চাওয়া লোভী প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম। ব্যস্ত নগরে নিরাপদে হাত ধরে রাস্তা পার করে দেওয়া সচেতন প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম।

বিশ্বাস করো... আমি আদৌ প্রেমিক হয়ে উঠতে পারিনি, তোমাদের ওখানে ভন্ডরা সব প্রেমের বন্দোবস্ত করে নিয়েছে। এ গলি ও গলি জুড়ে প্রতারকদের স্লোগানে মুখরিত। ফ্রি টক টাইমে কথা বলে মধ্যবিত্ত প্রেমিক আমি হতে পারিনি। প্রেম বাজারে ধুমছে চলা উপন্যাসের হিট হয়ে যাওয়া প্রেমিক আমি হতে পারিনি।

তোমাদের নগরে লাল নীল বাতিতে মনোযোগ কেড়ে নেওয়া সাইনবোর্ডে যত্নশীল প্রেমিকের বিজ্ঞাপন চোখে পড়েনি। ভন্ডদের মিছিলে পৃষ্ট হয়ে গেছে আমার যত্নশীল প্রেমিক সত্তা। আমিও একদিন প্রেমিক হবো।


গল্প:


গ্রামের গরিব ঘরে জন্ম নেয়া মেয়েটি ও আট দশটা মেয়ের মতো স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সে স্বপ্নের ও একটা মাত্রা থাকে। গাঁয়ের রং কালো হওয়ায় স্বপ্ন হয়তো একটি জায়গায় আটকে থাকে। গ্রামের লোকের একটিই কথা তাকে নিয়ে - এই কালো মেয়ের কি আর বিয়ে হবে না গো ...? কিন্তু কে জানে কল্পনাকেও হার মানাবে বাস্তবতা। সেই গ্রামের কালো মেয়েটি এখন অনেক সুখে আছে , পেয়েছে একটা ভালো স্বামী , একটি ভালো পরিবার। যার বিয়ে না হওয়া নিয়ে সংকিত গ্রামের লোকরা ও এখন কোনো মেয়ের বিয়ের জন্য সেই রকম একটি পাত্র খুঁজে বেড়ায় আর বলে - মেয়েটি বড়ই সুখে আছে , এইরকম কপাল সবার হয় না । 
.
বন্ধুত্ব কখনোই হারিয়ে যায় না , শত পরিস্তিতিতে ও পাশে ছায়ার মত থাকে। ছেলেটি এই কথা খুব বিশ্বাস করে। তাই বন্ধুত্বকে ভালোবেসে নিজের মনের একটা সুপ্ত জায়গায় রেখেছিলো কিছু মানুষকে। আজকে সেই ছেলেটার মায়ের জন্য রক্ত লাগবে। সেই রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে মনে হলো - কিছু কিছু বাস্তবতা কল্পনাকেও হার মানায় ! মোবাইল এর সেভ করে রেখে দেয়া অনেক বন্ধু থেকে ও একটি ফোন দেয়ার পরিস্থিতিটি বা অধিকার সে পায় নি। অথচ কল্পনাতে সে বন্ধু কে নিয়ে জীবনের একটি অধ্যায় পাড়ি দেয়ার কথা ছিলো। 
.
মেসের ৩৩ টাকার খাবার গলা দিয়ে নামতে চায় না। মাঝে মাঝে কলা রুটি ও জুটতো কপালে। ছেলেটি খুব বেশি পড়ালেখা ও করতে পারে নি পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে। তাই মাঝে মাঝেই অনেকটা করুন সুরে বলতো - ভাই, একটা ১৫ হাজার টাকার চাকরি পেলেই কষ্টটা অনেকটা কমে আসবে। তার স্বপ্ন ছিলো ১৫ হাজার টাকার জন্য একটি মুহূর্তের অপেক্ষা। কে জানতো - ঠিক ৪ মাস পর একটি কোম্পানীর বড় একটি চাকরি পেয়ে যান। বেতন ৩৫ হাজার টাকা। স্বপ্নের দ্বিগুন ফিরিয়ে দিলো বাস্তবতা তাকে। 
.
হাসপাতালের একটি বিশ্রী গন্ধ যা মোটেই সহ্য হতো না ছেলেটার। এর আগেও অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে যেতে হলেও অস্থিরভাবে তাড়াতাড়ি বের হয়ে যেতে চাইতো। অনেকটা বিস্ময় চোঁখে বলতো - হাসপাতালে যে কিভাবে মানুষরা থাকে.....? আজ প্রায় ১ বছর ২ মাস ধরে নিয়মিত যাতায়ত করে হাসপাতালে। হাসপাতালের একটা ছোট্ট চাকরি করে পার্ট টাইম হিসেবে। আবার অন্য একটি হাসপাতালে প্রায় ভর্তি হয় তাঁর মা। আজ হাসপাতালের গন্ধটি তার কাছে অনেকটা পরিচিত গন্ধ। যে জীবন তাঁকে যে গন্ধ সহ্য করতে দেয় না সে গন্ধে আজ মিশে আছে চাকরী ও পরিবার
.
.
বাস্তবতা নাকি বড়ই নিষ্ঠুর। দুঃখের সময় আপন মানুষ গুলোও পাশ দিয়ে এড়িয়ে যায়...এটাই নাকি বাস্তবতা। আবার অনেক বাস্তবতা আছে যেখানে আপন মানুষরাই পথের সাথী হয়ে দাঁড়ায়। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। কষ্ট কখনও কখনও এমন ভাবে আসে যখন বুদ্ধি নির্বোধ হয়ে যায় । দিশেহারা জীবনে সব পরিকল্পনা ছাড়খার হয়ে যায়। তারপরও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয় জীবনের অদৃশ্য প্রয়োজনে। কেউ জানে না এর পর কি হবে .....কি আসবে জীবনে ?
.
জীবন অপেক্ষা করে তার নিজের রহস্য নিয়ে... তাই হয়তো জীবন এর বাস্তবতা মাঝে মাঝে কল্পনাকেও হার মানায়!


আমাদের Valobashar Golpo ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। 


গল্প: ৬


পাগলীর পাগল

আমি মুক্তি চাই,মেয়ে হয়েছি বলে আমি এই রকম ভাবে ডানা ভাঙা পাখি হয়ে তোমার মতো অত্যাচারীর খাচায় বন্দি হয়ে থাকতে পারব না,প্লাবন প্লিজ আমাকে মুক্তি দাও, আমি মুক্তি চাই তোমার কাছ থেকে,,,,।
,
সকাল ৭,৪৪
ঘুম থেকে উঠে মোবাইলটা হাতে নিয়ে রাত্রির দেয়া খুব সাংঘাতিক ভাষার ম্যাসেজটি দেখে ঘুমের সব টুকু ঘোর এক নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো প্লাবনের চোঁখ থেকে,,,,
রাত্রি প্লাবনের ছোট বেলার বান্ধবি থেকে এখন বড় বেলার ভালোবাসার এক মাত্র মানুষ,দুজনেই মেডিকেল স্টুডেন্ট, পড়ে এক সাথেই,,,,।
,
প্লাবন মোবাইল হাতে নিয়ে ম্যাসেজটা পড়ার আগেই দেখেছিলো রাত্রি তাকে কাল রাতে ৪৬ বার কল দিয়েছিলো,ম্যাস
েজ পড়া শেষ হতেই প্লাবন কল দিয়েছে রাত্রিকে,,,,।
,
~ রাত্রি - (),
~ প্লাবন - হ্যালো,,
~ ()
~ কি ব্যাপার কথা বলো না কেনো,,?
~ কি চাই,?
~ ম্যাসেজে ওসব কি লিখেছো হুম,,?
~ কেনো পড়ে কিছু বুঝোনি,?
~ না,,
~ না বুঝলে ও আমার কিছু করার নাই আমি শুধু মুক্তি চাই তোমার কাছ থেকে আর কিছুই না,
~ হা,হা,হা,,
~ গাধার মতো হাঁসছো কেনো,?
~ হাঁসির কথা বলছো তাই,,
~ আমি সত্যিই সিরিয়াস,
~ ওহ,,
~ আমি ব্রেকআপ করতে চাচ্ছি,
~ কি বলো,,?
~ হুম,আজ বিকালে সময় মতো নদীর কাছে চলে এসো,,সম্পর্কের যেটুকু বাকি আছে সেটুকু ও আজ শেষ করে দিব,
~ ঠিক আছে,,
,
বিকাল ৫.১৫
রাত্রি অনেক্ষন আগে থেকেই বসে আছে নদীর পাশে,আর প্লাবন এলো এই মাত্র,,
,
~ রাত্রি - আসার সময় হলো তোমার,?
~ প্লাবন - সরি একটু দেড়ি হয়ে গেলো,,
~ একটু দেরি,?
~ না,অনেক,,
~ কিছু আনোনি,?
~ কি,,?
~ থাক কিছুই না,
পকেট থেকে ফুল বের করে তা রাত্রির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে
~ প্লাবন - এই নাও
~ রাত্রি - অনেক সুন্দর, কিন্তু ফুল তো আর ফুল নাই,পকেটে করে কি কেউ ফুল আনে,?
~ হুম,,
~ প্রতিবার তুমি ফুল হয় পকেটে না হয় ব্যাগে আনবা, সমস্যা কি তোমার,?
~ হাতে ফুল আনলে তো চেনা জানা অনেকে দেখবে আর তখন আমাকে ও অন্য ছেলেদের মতো ভাববে,,
~ হ্যা আমি ও তাই চাই যেনো কেউ ওগুলি না ভাবে,
~ মানে,,?
~ মানে আজ থেকে আমাদের সম্পর্ক এখানেই শেষ,
~ কেনো,,?
~ তোমার অনেক সমস্যা,প্রেম করতে লজ্জা লাগে,তার পর ফোন দিলে ফোন ধরো না,আমার কোন খোঁজ খবর নেয়ার তো কোন দরকারই তোমার নাই,,ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা,
~ সত্যিই এবার থেকে ভালো হয়ে যাবো,আর কাল রাতে আমার বাসায় মেহমান আসছিলো আর তাই ফোন ধরতে পারিনি,,
~ থাক আর লাগবে না,আগে ও এরকম অনেকবার বলেছো মিথ্যুক কোথাকার,
"কথা গুলি বলেই সেখান থেকে চলে গেলো রাত্রি,প্লাবন চেষ্টা করেছিলো রাত্রিকে থামাতে কিন্তু পারেনি,,
,
সেদিন রাত ১১.৫০
রাত্রির খুব মন খারাপ ভেবে পাচ্ছিলো না কি করবে ভাবতে ভাবতে কল দিলো প্লাবনকে, কল আসার সাথে সাথেই রিসিভ করল প্লাবন, হয়তো সে এরকম কিছুরই অপেক্ষায় ছিলো ,,,,
,
~ প্লাবন - হুম বলো,,
~ রাত্রি - ভেবেছিলাম কল ওয়েটিং পাবো কিন্তু তা না পেয়ে অবাক হচ্ছি,
~ কোন দিন আমার ফোন তুমি ওয়েটিং পেয়েছো,,?
~ বাদ দাও ওসব কথা, নতুন ভাবে আর ধরার কি আছে তোমার সব বদমাইসি আমি আগেই ধরেছি আর তাই তো ব্রেকআপ,
~ ভালো,, তাহলে কল করেছো কেনো,,?
~ তুমি তো জানোই,
~ কি,,?
~ তোমার কন্ঠে গান না শুনে আমি ঘুমাতে পারি না,
~ সব তো শেষ,তাহলে এবার এই অভ্যাসটা ও বদলে ফেলো,,
~ হুম সে চেষ্টা করছি,
~ হুম,,
~ গান শোনাও,
~ আজ মন ভালো নেই,,
~ ওইইইইই,
~ "এযেনো সহজ শিকাররক্তি আমি যুগান্তরি নই,,
"এযেনো ভীষণ আক্ষেপ আমার আমি দিক বিজয়ী নয়,শুধু একটাই আশা আমি বুকে জড়িয়ে,রব সারাটিজীবন তোমায় নিয়ে,,
"কোনো এক নিঃসঙ্গ রোদেলা রাতে আমি দেখেছি,প্রিয়তম
া তোমার চোখে মিষ্টিহাঁসি"
" "কোনো এক দুঃসহ জোছনা দিনে, বাতি নিভে গেলে, কড়া নেড়েছি তোমার হাতের ঘরে,,,,, কিছু অর্থহীন শব্দ গুনে ডেকেছি তোমায়,,,, প্রে----ম তুমি কোথায়,,,,,,।
,
~ রাত্রি - প্রেম তুমি কোথায়,? প্লাবন তোমার প্রেম এখন অন্যের হয়ে গেছে,
~ প্লাবন - মানে,,?
~ সুজনকে তুমি চিনবে না তার পর ও বলে রাখি ও আমাকে অনেকদিন ধরে পছন্দ করে,আর মাঝে প্রপোজ ও করেছিলো আজ হ্যা করে দিলাম,,
~ কি,,??????
~ আর হ্যা গানটা ভালো ছিলো ধন্যবাদ ভাইয়া,
~ ভাইয়া,,??
~ ধরো আমি আর প্লাবন ডেটিং এ গেছি আর ঠিক তখন রাস্তার মাঝে তোমার সাথে আমার দেখা, তখন তো আমি তোমাকে আমার পারাতো বড় ভাই হিসাবেই পরিচয় করিয়ে দিবো তাই আগে থেকে অভ্যাস করছি,,কিরে আমার ভাই হবি না,?
~ হ্যা হবো,একদম ভালো লাগছে না আমি রাখছি,,
কথা গুলি বলেই ফোনের লাইন কেটে দিলো প্লাবন,,,,।
,
পরেরদিন সারাদিন ধরে প্লাবনের কোন খবর নেই,বার বার কল দিয়ে ও মোবাইল বন্ধ পাচ্ছে রাত্রি,মেয়েটার খুব চিন্তা হচ্ছে প্লাবনের জন্য,,,,,সারাদিন প্লাবনের কোন খবর না পেয়ে রাতে প্লাবনের আম্মুর কাছে কল দিলো রাত্রি,,,,
~ আসসালামু ওয়ালাইকুম আন্টি,?
~ প্লাবনের আম্মু - ওয়ালাইকুম আসসালাম,
~ আন্টি প্লাবন কই,? ওর মোবাইল বন্ধ কেনো,? কিছু হয়নি তো ওর,?
~ আম্মু আমি তোমাকে জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু প্লাবন আমাকে তোমাকে জানাতে নিষেধ করেছিলো,কাল রাত থেকে ওর খুব জ্বর আর মাথা ব্যাথা,,
,
পরেরদিন ভোর,,
ঘুমিরে ছিলো প্লাবন,কোন এক হাত তার মাথায় চেনা হাতের সে ছোয়াতে ঘুম ভেজ্ঞে গেলো তার, জেগে চোঁখ খুলে প্লাবন দেখতে পেলো তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে পাশে বসে কাঁদছে রাত্রি,,দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে ও কিছুক্ষন কেউ কারো সাথে কথা বলছিলো না,এর মধ্যে রাত্রির চোঁখের পানির পরিমান বাড়তে দেখে প্লাবন
~ তুমি হঠাৎ,,?
~ রাত্রি - ()
~ কি ব্যাপার কাঁদছো কেনো,,?
~ ()
~ কান্না থামাও,,
~ তার পর কি নাম যেনো,? সুজন না কি যেনো তোমার তার কি খবর,,?
~ আমি তো মজা করছি,
~ কোনটা মজা,? কাল যেটা বলেছো সেটা নাকি এখন যেটা বলছো এটা,,?
~ তোমার কি এরকম কিছু বিশ্বাস হয়,?
~ না হলে ও এখন থেকে সত্যিটাকে বিশ্বাস করে সেটাকে মানতেই হবে,আমি তো তোমার ভাই,,
~ তুমি আমার সাথে ওইরকম করো সে জন্য আমি একটি মজা করেছি,
~ একটু মজা,,?
~ হুম,
~ তোমার একটু মজার জন্য আমি দুইদিন খাইনা,আর আমার এই অসুস্থতা তোমার ওই একটু মজার জন্যই,,
~ আর এরকম করব না,
~ আচ্ছা ঠিক আছে,,
,
সত্যিকারের ভালোবাসার সম্পর্ক গুলিতে যেমন মান অভিমানের মাত্রা একটু বেশি থাকে, ঠিক তেমনি ভাবে সেই সম্পর্ক গুলিতে দুজনের প্রতি দুজনার বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা থাকতে হবে,তাহলে সব সত্যিকারের ভালোবাসা পাবে পুণর্তা,বেঁচে থাকুক বেঁচে থাকার সবটুকু শক্তি নিয়ে সব সত্যিকারের ভালোবাসা গুলি,,,,।

আপনি কি কবিতা পড়তে ভালোবাসেন ? তাহলে কবিতা পড়ার জন্যে চেক করেন আমাদের বাংলা কবিতা (Valobahsar Golpo ) 


গল্প: ৭



সেকেন্ডের কাঁটা টা আস্তে আস্তে মিনিটের ঘরে চলে যাবে,মিনিটের কাটা ও ঠিক ৬০ বার ঘুরে আবার ফিরে আসবে আগের যায়গায় এতে করে পেরিয়ে যাবে এক ঘন্টা।এভাবে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে দিনের শেষ অন্ধকার নেমে আসবে,অন্ধকার ফুরালেই আবার দিনের আলো।

এভাবেই একটা সময় দিনের পর দিন চলে যাবে,পেরিয়ে যাবে কতশত মাস।হাতের আংগুলের ফোড় গুলান দিয়ে তখন হিসেব করবে কত বছর পেরিয়ে গেল, কিন্তু কেউ কি একবার ও ভেবেছে এই কত বছরে ঠিক কত সেকেন্ড সময় সে পেয়েছে? অবশ্যই না।মানবজীবনের স্ট্রাগল শুরু কিন্তু সেকেন্ড থেকেই।তবু ও কেউ ভাবেনা,কারো ভাবার সময় ই থাকেনা।

বছরের পর বছর চলতে চলতে তোমার কপালে আর গালে ভাঁজ পরে যাবে,বাধ্যকের রেখা দেখা দিবে তোমার কপালে।আমি ও ঠিক তোমার মতো ভাবেই পার করে দিবো কয়েকটা বছর,আমার কপালে ও সেদিন ভাঁজ পরে যাবে।আমি ও হাতে লাঠি নিয়ে বাসা থেকে বের হবো কারন লাঠিটাই হবে শেষ সম্বল।

তোমার চারপাশ ভড়ে থাকবে তোমার নাতি নাতনিরা,অবসরে সময় কাটতে চাইবেনা তোমার,সেদিন তুমি ও সময় কাটানোর জন্য ফিরে যেতে চাইবে তোমার নাতি নাতনিদের বয়সে,বিলিভ কর তুমি চাইবেই কিন্ত সেটা তোমার পক্ষে সম্ভব হবেনা।

আমি ও সেদিন বেরিয়ে পরবো কোন এক বাজারের দিকে,অবসর কাটানোর জন্য আমি ও সেদিন খুব মরিয়া হয়ে পড়বো। কিছু ফাও আলাপ আর কড়া করে চিনি দেয়া চায়ের কাপে আমি চায়ের সাথে সাথে গিলতে থাকবো আমার অবসর কে।

তোমার ওই মায়াবী চোখে থাকবে চশমা, তবে আজকের চশমা আর সেদিন চশমার মাঝে থাকবে অমিল।ছোট গ্লাসের দামি চশমার বদলে সেদিন থাকবে মোটা বড় কোন গ্লাসের পাওয়ার ওয়ালা চশমা।আমার ও একই রকম হবে,তখন চশমা দিয়ে আর আধুনিকতা প্রকাশ করা হবেনা কারো।

কোন এক সময় রাস্তার মোড়ে দেখা হবে যেতে পারে তোমার সাথে,চশমার কাঁচটা ঘোলা থাকায় হয়তো সেদিন তোমায় ঠিক করে চিনতেই পারবোনা আমি অথবা চশমার গ্লাসটা মুছতে মুছতে চলে যাবে তুমি, পরে হয়তো ভাববো কোথায় যেন দেখেছিলাম।

এই তোমার সাথে কাটানো বছরের পরে বছরের সব কিছু আমি ভুলে যাবো, ভুলে যাবে তুমি ও।শুধু একটু অভিমানে আমার যায়গায় তুমি অন্য কাউকে অধিকার দিয়ে ফেলবে আর সেই অভিমানে আমি ও অনেক দুরে চলে আসবো তোমার থেকে,আমাদের ভালোবাসা বাসিটা থেকে যাবে বহুকাল কিন্ত সেটা ও হেরে যাবে বাধ্যকের কাছে।

জিতে যাব আমরা জিতে যাবে আমাদের অভিমান।
তবু ও বলছি ভালো থেকো তুমি।


গল্প: ৮



ভালোবাসার মানুষটাকে আমরা জীবনে না পেলে অনেকেই মেনে নিতে পারি না। অনেকেই আত্মহত্যা করে। অনেকেই আবার ভালোবাসার মানুষটার উপর সব দোষ চাপিয়ে দেয়... সে কেন আমায় ছেড়ে গেলো বা সে কেন অন্যকে বিয়ে করলো।
ওকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না। তার অপারগতা বুঝতে তখন কেউ ই রাজী থাকে না। তাকে নানান উপাধিতে ভূষিত করে।
জীবন বহমান।সে কারো জন্যই অপেক্ষায় থাকে না। তবে মাঝে মাঝে মনটা থমকে যায়। তখন বিভিন্ন বুঝ দিয়ে মনকে শান্ত করতে হয়।
ভালোবাসলে তাকে জীবনে পেতে হবে এমন কোন রুলস নেই।
দূর থেকেও ভালোবাসা যায়।
দূর থেকে ভালোবাসাইটা পবিত্র। দূর থেকে ভালোবাসায় যেমন চাওয়া পাওয়া থাকে না। তেমন রাগ, অভিমান থাকলেও তা আরেকজনকে স্পর্শ করে না।
কারো প্রতি থাকে না কোন অভিযোগ বা ভুল বুঝাবুঝি।
থাকে না সেক্রিফাইসের কোন ঝামেলা।
দুইটি জীবন একই রেখায় চলে তবে কেউ কারো অস্তিত্ব টের পায় না।
এক তরফা ভালোবাসা গুলো হয় স্বার্থহীন।
ভালোবাসলে তাকে যে কোন ভাবেই ভালো বাসা যায়। সে যে জীবনে থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই।
সে জানুক আর নাই জানুক ভালোবাসাটা তখন তার নিজস্ব।
মন তখন সুধায়.. কেন আরো ভালোবেসে যেতে পারে না হৃদয়।
এক তরফা ভালোবাসায়... ভালোবাসার মানুষটা জীবনে যেভাবেই থাক না কেন... তাকে ঘিরে বিরাজ করে একরাশ ভালোলাগা।


গল্প: ৯



"অনেক কিছু চাওয়ার মাঝে অল্প অল্প পাওয়াতে অনেক বেশি কিছু খুজে পেয়ে নিতে হবে,,,,
"প্রতিটি মানুষের জীবনে চাওয়া থাকে অনেক কিছুর,স্বপ্ন থাকে অনেক কিছু পাওয়ার,কিন্তু সবাই তা পাই না বা সবার সব ইচ্ছা সব আশা পূরণ হয় না,, অনেকে পাই আবার অনেকে তা পাই না, নিজের সব চাওয়াকে নিজের মতো করে না পাওয়া মানুষের সংখ্যাটাই আমাদের মাঝে বেশি,,,,
"আবার আমাদের চোঁখে দেখা অনেক মানুষ আছে যাদেরকে দেখে মনে হয় আমাদের কাছে যে সে সব পেয়েছে তার সব আছে, কিন্তু আসলে কি এই মানুষ গুলা তাদের জীবনে সব পেয়েছে,,? খুজে দেখবেন তার মাঝে ও কোন না কোন কিছু নিয়ে না পাওয়ার হতাশা আছে আর এতো কিছু পাওয়ার আনন্দ তাকে পুরিয়ে মারে ওই না পাওয়া কিছুর আগুনে,,,,,,,,
"আসলে পাওয়া না পাওয়া ব্যাপারটা প্রতিটি মানুষের তার নিজের কাছে,যে যে ভাবে নিবে সে সে ভাবেই পাবে,নিজের মনের সন্তোষটির উপর নির্ভর করে অনেক পাওয়া না পাওয়া সাফল্য ব্যর্থতা,,,,খুব অল্প পাওয়াতে অনেক কিছু পাওয়ার স্বাদ খুজে পাওয়া যায় যদি আপনি সেটা নিতে পারেন,,,,
"প্রতিটি বাবা মাকে নিয়ে আপনি একবার ভাবুন,,ওই মানুষ দুজনের ও কিন্তু জীবন, তাদের ও একটা সময় লক্ষ্য ছিলো অনেক কিছুর,, ছিলো আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন,,,,কিন্তু যখন তাদের সন্তান হয় ঠিক তার পর সব কিছু বদলে যায়, তাদের লক্ষ্য তখন ও থাকে,, বেঁচে থাকে স্বপ্ন ও কিন্তু তখন তা বদলে যায় আগে যেটা ছিলো নিজের জন্য তখন সেটা হয়ে যায় সন্তানের জন্য,তাদের জীবনের সব চাওয়া আর সব পাওয়া থাকে তখন তাদের সন্তানকে ঘিরে,,,,খুব অল্পতেই তখন এই মানুষ গুলি অনেক কিছু খুজে পেয়ে নিতে জানে,অনেক না পাওয়ার মাঝে ও সন্তানের সামান্য পাওয়ার মাঝে তারা খুজে নিতে জানে অনেক বেশি আনন্দের,,,,,নিজে না খেয়ে ও তা তুলে দিতে পারে প্রিয় সন্তানের মুখে আর এটাই তাদের কাছে অনেক বেশি কিছু অনেক না পাওয়ার মাঝে ও জীবনের সব পাওয়া,,,,,
"আপনার ছুটতে হবে নিজের গতিতে,ছোট ছোট পাওয়া নিয়ে সন্তোষ থাকতে থাকতে হয়তো আপনি ও পেয়ে যাবেন জীবনের চোঁখে দেখা সব স্বপ্নের,নিজের হাতে ছুয়ে দেখতে পাবেন অনেক অনেক সাফল্য,,,,,"'
লেখক #Mahedi_hasan



গল্প: ১০

কল্পনার ক্যানভাসে তুমি

কল্পনা বা স্বপ্ন প্রতিটা মানুষই প্রতি নিয়ত দেখতে থাকে....নিজের জগৎটার সাথে কল্পনার জগৎটা কেমন যেন মিলেমিশে একাকার.... যেখানে রাজা আপনি আর রাণী আপনার ব্রেনের সেভ থাকা সেরা অপ্সরীটা...

আমিও মাঝে মাঝে আশ্চর্য রকমের কল্পনা করি.....চোখের মণির রিখটার স্কেলটাতে থার্মোমিটারের পারদ মিশিয়ে একটা ঝাপসা অবয়ন তৈরী করি.....চোখ খুললেই সে আমার মুখে একগাল হাসি দিয়ে কেমন যেন ভ্যানিশ হয়ে যায়....

কাঠফাটা রৌদ্রের আগুনে তাপে সে আমাকে পুড়িয়ে যায় আর বসন্তের কৃষ্ণচুড়ায় পাখির মত মৃদু ছন্দে পাশ দিয়ে হেটে যায়....পাগলীটার হাতে গাঢ-নীলচুড়ি... পরনে নীল শাড়ী আর খোপায় তাজা বেলীর ফুলের সুবাসের তীব্র গন্ধে কেমন যেন মাদকতা তৈরী করে আমার ভিতর.....নীলচুড়ির টুংটাং শব্দ শ্রবনের আশায় আমি বারবার চোখ বুজে কল্পনা করি আমার অপ্সরাকে...

আমার কি মনে হয় জানেন......
কোন এক শীতের ভোরে পৃথিবীর কোন এক পাশে কোন এক অপ্সরাও ঠিক আমার মত করে ভাবছে...
আমি চোখ বুজে আর সে হয়তবা সিক্ত ঘাসের শিশির মাড়িয়ে টংয়ের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে আমার কথাই ভাবছে......!!!

সেও হয়তা বা এই অগোছালো ছেলেটাকে গোছানোর দায়িত্ব নিতে চায়....বর্ষার শ্রাবনধারায় অথবা প্রচন্ড শীতে কম্পনরত ছেলেটার কথা চিন্তা করে সে হেসে দেয়....তার বারবিডলকে আমি মনে করে অগোছালো চুলগুলো টেনে টেনে সে ঝগড়া করে নয়তবা চুপ করে আছে দেখে চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে তীব্র ভালবাসা অনুভব করে.....এতটাই তীব্র যে বেশিক্ষণ থাকাতে না পেরে পালিয়ে যায় সে..

আমার কি মনে হয় জানেন.....
এক ঝুমবৃষ্টির দিনে কোন বাসস্টপিসের নিচে আমাদের দেখা হবে....রিক্সার হুট ফেলে দিয়ে বৃষ্টিবিলাস করবো হাতে হাত রেখে....একজনের জ্বর আরেকজনের ঠান্ডা লাগবে আর পাগলামির জন্য দোষারোপ করবো একে ওপরকে.....

শীতের ভোরে কুয়াশায় ঘুম ঘুম চোখ আর অগোছালো চুল নিয়েই হাঁটতে থাকবো শিশিরে আর কম্পিত শরীরের স্পর্শে ভালবাসার গভীরতা মাপতে থাকবো.....তার মায়াভরা মুখ আর কালো চোখের চাহনীর উষ্ণতায় গলিয়ে দিতো আমার বরফ জমা কঠিন হৃদয়টাকে......বুকের ঠিক মাঝ বরাবর মুখ লুকিয়ে ঘন-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রশান্তি দিতো আমাকে....চিরদিনের মত মায়ার আর ভালবাসার বন্ধন দিয়ে আগলে রাখতো আমাকে.

বাস্তবে,,,,,, শীত আসে...বসন্ত চলে যায় বর্ষা আসে আমি বাসস্টপিসে অপেক্ষায় থাকি...... কেউ আসে না.
মেয়েটাও তার স্বপ্নগুলোকে বেলকনির হেলান দেয়া চায়ের চুমুকে গুলিয়ে দেয় অপেক্ষা করে সে আসবে.....!

আর.....আমি!!!
চোখ বুজলেই সেই ঝাঁপসা নীল অপ্সরী.....তার হাতের টুংটাং বাজতে থাকা চুড়ি....মায়া ভরা মুখ....মনখারাপের রাতে চোখের কাজল বেয়ে টপটপ করে ঝরে পড়া অশ্রু সাঁতরিয়ে তার হাসির কারণ হতে চাই আর
সারাজীবনের জন্য ডুবে যেতে চাই ঐ হাসির মায়ায়....!

তার দিন আমি আর রাতটাও আমি....আমার কল্পনার জগতে শুধু সেই থাকবে.....চোখে কাজল থাকবে.... টোলপড়া গালে হাসি থাকবে....হাতে গাঢ রংয়ের নীল চুড়ি থাকবে আর আমার অগোছালো চুলগুলো নিয়ে টানাটানি করবে...ঝগড়া করে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবে.....রাগ ভাঙ্গাতে গেলে নখের আঁচড় দিবে....দিন শেষে আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল রেখে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলবে.....ভালবাসি তোমার চেয়ে একটু বেশি❤

কল্পনার জগৎটা বড়ই অদ্ভুত....কোন মানা নাই...যা ইচ্ছে যেমন ইচ্ছে তেমনটাই করতে পারবে......
বাস্তবতা থেকে পালাতে পারবে না জেনেও ঘুমের ঘোরেও মানুষ স্বপ্ন দেখে....
কল্পনার জগতে কারও হাত শক্ত করে ধরে পাখির মত ওড়া যায়...... অসহ্য রকমের সৌন্দর্য আর তার সাথে তুমি-তুমিময়....এই অসহ্য সৌন্দর্য্য থেকে মুখ ফেরানো সম্ভব নয়.....
সত্যিই কখনও সম্ভব নয়.....যদি তুমি পাশে থাকো!!!!!!!

সম্পূর্ণ গল্পটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমাদের আরো ভালো লাগবে যদি আমাদের গল্পগুলো শেয়ার করেন এবং আপনার মতামত দেন। অন্যান্য ভালোবাসার গল্প পড়তে পারেন এইখানে ..

Valobashar Koster Golpo - You Will Cry After Reading

kichu Valobashar Koster Golpo - You Will Cry After Reading. 

কিছু ভালোবাসার কষ্টের গল্প। পড়লে আপনার নিশ্চয় ভালো লাগবে। 


valobashar koster golpo

গল্প - ০১

বিষ

বিষের বোতল টা হাতে নিয়ে বসে আছি।আজ সুইসাইড করব।আর তারপর দেখবো মৃত্যুর পর ঠিক কি কি হয়।দুদিন আগেই আম্মুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম...
__আচ্ছা আম্মু,মৃত্যুর পর কি হয়?
__যারা দুনিয়াতে খারাপ কাজ করে,আল্লাহর ইবাদাত পালন করে না তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।আর ভাল মানুষদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।
.
কিন্তু কিভাবে শাস্তি দেওয়া হয়!!শাস্তি কি একটাই হয়, নাকি অনেকগুলো!!ঠিক করেছিলাম প্রাক্টিকালি করে দেখবো।সেটার জন্য আগে আমাকে সুইসাইড করতে হবে।আর আমার মৃত্যুর পরেই আমি জানতে ও দেখতে পারবো যে মৃত্যুর পর ঠিক কি কি হয়। 
এসব ভাবতে ভাবতেই বিষ টা মুখে দিয়ে খেয়ে ফেললাম।কিন্তু আমার তো কিছুই হচ্ছে না।তাহলে কি এটা আসলে বিষ নয়!কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম গলাটা কেমন যেন করছে।সারা শরীর,মাথা কেমন যেন ঝিম লেগে যাচ্ছে।গলা,বুক ভীষণ জ্বলছে।মনে হচ্ছে এসিড খেয়েছি।যন্ত্রনায় দুচোখের কোণ পানিতে ভেসে যাচ্ছে।কি করবো এখন!আম্মুকে ডাকবো!খুলে বলবো সবকিছু যে আমি বিষ খেয়েছি।ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবে আমায়, হয়তো বেঁচে যাবো কিন্তু তারপরে তো জানতেই পারবোনা মৃত্যুর পর কি হয়!নাহ....আম্মুকে ডাকবো না।যা হবার হবে।
আম্মু ভীষণ ডাকছে...
__মিম,এই মিম,,উঠছিস না কেন?
__আম্মু আরেকটু পরে উঠবো
__কিরে,কি হয়েছে তোর।মুখ,চোখ এমন দেখাচ্ছে কেন!!(আম্মু মুখটা এরমধ্যেই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে)
__আম্মু,তুমি এমন করছো কেন, আমার তো কিছু হয়নি.
__কথা বলছিস না কেন,, (কাদোঁ কাদোঁ স্বরে)
__তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো না?!!!
আম্মু কাদঁতে শুরু করেছে।কিছুক্ষনের মধ্যেই বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে গেলো।আত্বিয়-স্বজন রাও চলে এসেছে।সবাই কন্নাকাটি করছে।আমি সকলকে কাদঁতে বারণ করলাম কিন্তু কেও আমার কথা শুনতে পেল না।
বুঝতে পেলাম আমি আর পৃথিবীতে নেই।সেজন্যই সবাই কাদঁছে।! তারমানে বিষটা খেয়েই আমার মৃত্যু হয়েছে।আমাকে সবাই একটা অন্ধকার ঘরে রেখে চলে গেল।আমার ভীষণ কান্না পাচ্ছিল।কিছুক্ষন পর অনুভব করলাম আমি সেই অন্ধকার ঘরে নেই।অন্য এক জায়গায়।সেখানে আরও অনেকে রয়েছে।তাদের কাওকেই আমি চিনিনা।সবাই কাদঁছে।কয়েকজনকে একটি বিশাল অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো।অন্যদের একটি গর্তে যেখানে বিষাক্ত সাপ আর পোকামাকড় ছিলো।কাওকে কাওকে অনান্য শাস্তি দিচ্ছিল।এসব দেখে আমার শরীর কেঁপে উঠলো। তারপর কেও একজন আমাকে জোর করে টেনে টেনে নিয়ে একটি অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করল........
তখনি ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।সোয়া থেকে উঠে বসলাম।ঘেমে ভিজে গিয়েছি।এখনো তরতর করে ঘামছি।পুরো শরীর ব্যাথা করছে।চারপারশটা দেখে বুঝলাম আমার রুমের বিছানায়।এতেক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম।আমিও তো ঠিক মতো নামাজ পড়ি না,মিথ্যা কথা বলি।তাহলে আমাকেও স্বপ্নের মতো শাস্তি দেওয়া হবে।স্বপ্নটা শুধুমাত্র নমুনা একটা।আরও ভয়ংকর হবে পরকালের শাস্তি গুলো।
পরকালের শাস্তির ভয়ে হলেও আমাদের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে আর আল্লাহর ইবাদাত পালন করতে হবে।


গল্প - ০২

আসমাপ্ত ভালোবাসা 

ছেলেটি মেয়েটিকে খুব বেশি কষ্ট দিলো।ভালোবাসার নামে মিথ্যে অভিনয় করলো।এত কষ্ট,অপমান সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি একটা সুইসাইড নোট লিখে গেলো।
"মৃত্যুর পর মর্গের ডোমের কাছ থেকে আমার পঁচে যাওয়া হৃৎপিন্ড টা একবার দেখে আসো, পোস্ট মর্টেমের পর জানতে পারবে হৃৎপিন্ড পঁচে যাওয়ার পিছনের গল্প।আমার তিলে তিলে মৃত্যুর গল্প।"

অতঃপর মেয়েটি আত্মহত্যা করল।
সে জানতো না তার ভালোবাসার মানুষটি কখনো তাকে দেখতে আসবে না।তার মৃত্যুর খবর শুনে ছেলেটি অনেকটা চমকে উঠল।তাড়াতাড়ি করে সিগারেট ধরলো,নিজেকে ঠান্ডা করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগলো।আসলে মেয়েটিকে ভালোবেসে না তার চিন্তা একটু ভিন্ন।যদি আত্মহত্যার দায়ে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।সেই ভয় ছেলেটাকে কুড়ে কুড়ে খায়।

লোক জানাজানির ভয়ে মেয়েটির পরিবার সুইসাইড নোট টি লুকিয়ে ফেলে।সমাজের কথা ভেবে মেয়েটির বাবা মেয়েটির দ্রুত দাফন করার ব্যবস্থা করে।

মেয়েটির মৃত্যুর পর তার মা বাক রুদ্ধ।চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছে,চিৎকার করতে করতে গলা শুকিয়ে গেছে।মানতে পারছে না সব কিছু।নিজের সন্তানের বুক খালি হওয়ার কষ্ট একজন মা ভালো জানে।

মেয়েটির বাবা জেনো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।তার ছোট মেয়েটা এতো বড় ভুল কিভাবে করলো?

মেয়েটির ভাই কাঁদতে কাঁদতে শুধু বোনের ভালোবাসার স্মৃতি মনে করছে।তার ভালোবাসার একটাই মানুষ ছিলো তার বোন।

আর সেই ছেলেটি দিনের পর দিন ভাবছেন কাঁদবে?নাহ সে দিনের পর দিন মেয়েদের সাথে রঙ্গ লীলায় মাতছে।পুরোনো জামার মত ছুড়ে ফেলেদিচ্ছে মেয়েদের।সেই কবেই ভুলে গেছে মেয়েটির কথা।

মেয়েটি কি বোকা তাই না?একটা কুকুরের জন্য নিজের জীবনটাই দিয়ে দিলো।


গল্প - ০৩
কষ্ট 

আচ্ছা ভাইয়া ভালোবাসাটা কি ভুল,,? নাকি কাউকে খুব বেশি নিজের থেকে ভালোবাসা অনেক বড় অপরাধ,,? 
,
আমি আমার আব্বু আম্মুর খুব আদরের একমাত্র মেয়ে,২০১২ সালের মার্চ মাস তখন মাত্র আমার এস,এস,সি পরিক্ষা শেষ হয়েছে,সময় কাটানো আর ফেসবুকে নাকি অনেক গল্প পড়তে পাওয়া যায় আর গল্প পড়ার লোভে আমার ফেসবুকে একটা আইডি খোলা,, আমি তখন নতুন ছিলাম আর তাই ফেসবুকের কিছুই ঠিক ভাবে বুঝতাম না,আমাকে প্রথম ৩/৪ দিনে বেশ 
কয়েকজন ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় আর আমি ফেসবুক নিয়ে তেমন কিছু না বোঝাতে তাদের এক্সেপ্টড করে নিই, যদি ও পড়ে আর কারো রিকুয়েস্ট এক্সেপ্টড করতাম না কারন আমি জানতাম যে ফেসবুক যেমন ভালো তেমনি খারাপ এখান থেকে অনেক মানুষ শেষ হয়ে যায়,,আর প্রেম ভালোবাসা এই সব আমার কাছে খুব অপছন্দের একটা ব্যাপার ,,,""
,
আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে যে কয়েকটা অচেনা ছেলে ফ্রেন্ড ছিলো তারা আমাকে প্রায়ই ম্যাসেজ করত কিন্তু আমি রিপ্লাই দিতাম না কাউকে,যদি ও তারা ম্যাসেজে কি লিখত সেটা আমি পড়তাম,,,,এর ভিতর থেকে সবার থেকে অন্য রকম একটা মানুষকে দেখতে পেলাম যে আমাকে প্রতিদিন সকালে লিখত যে,,,,আপনার সারাদিন সুন্দর কাটুক আর আপনি অনেক ভালো থাকুন সেই কামনা করি,,,,,,এর বাইরে ছেলেটা কিছুই লিখত না,এই ভাবে প্রায় ১৫/১৬ দিন আর এই প্রতিদিন সে ওই লেখাটা আমাকে দিত খুব সকালে আমি ফেসবুকে আশার আগেই,,,,ছেলেটার নাম ছিলো লিমন,,,, তার এই রকম প্রতিদিনের অদ্ভুত ওই ম্যাসেজটা আমাকে দিন দিন তার সাথে কথা বলার জন্য আগ্রহী করতে থাকে, আমি একদিন তাকে রিপ্লাই দিলাম,, ধন্যবাদ লিখে,,,, তার পর তার ইচ্ছাতেই আমাদের পরিচয় হয়,,,,""
,
প্রথমে আমি না চাইলে ও লিমনের ইচ্ছা আর জোরাজুরিতে আমাদের ফেসবুকে ম্যাসেজিং হতো, আমার রেজাল্টের আগে আমি খুব চিন্তায় ছিলাম ভালো রেজাল্ট হবে কিনা ঠিক সেই সময়টাতে লিমন আমাকে সব সময় খুব সাহস জুগিয়েছে আর ও সব সময় বলত আমার রেজাল্ট খুব ভালো হবে,,ওর কথাই সত্যিই হয় আমার রেজাল্ট দিল আর আমি গোল্ডেন এ+ পাই,,আমি সেদিন যে কি খুশি হয় তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না,,আমি ফেসবুকে খবরটা ওকে জানাতেই ও আমাকে বলে,, তার নাকি আমার কাছে কিছু চাওয়ার আছে,,আমি জানতে চাইলাম কি,,? ও আমার মোবাইল নাম্বার চাইলো আমি কিছু না ভেবেই দিয়ে দিলাম আর বললাম যে আমার পক্ষে কিন্তু মোবাইলে কথা বলা সম্ভব হবে না বা আমার আব্বু আম্মু জানতে পারলে আমার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিবে,,ওর ইচ্ছাতে সেদিন আমি রাতে খুব কস্টে লুকিয়ে ওর সাথে মোবাইলে প্রায় ২৫ মিনিট কথা বলি এটাই ছিলো ওর আর আমার প্রথম কথা,,,,""
,
লিমন আমাদের পাশের শহরেই একটা ম্যাসে থেকে অনার্স পড়ত,,এই ভাবে চলে যায় এক বছর আর এর ভিতর আমাদের ফেসবুকে প্রতিদিন কথা হতো আর মাঝে মাঝে আমি সুযোগ পেলে মোবাইলে কথা ও হতো,,এর ভিতর হঠাৎ লিমন একদিন আমাকে আই,লাভ,ইউ বলে আর কথাটা বলে ও আমার কাছে খুব কাঁন্না করে,একটা ছেলে এই ভাবে কাঁদতে পারে তা তার আগে আমার জানা ছিলো না,,আমি খুব অবাক হয়ে যায় সেদিন ওর ওইরকম পাগলামী দেখে,আমি হ্যা না কিছুই সেদিন না বলে ভাবার জন্য সময় নিই,,এর ভিতর ওর আমার প্রতি খেয়াল যেনো আগের থেকে অনেক বেড়ে যায়,আমি খেয়েছি কিনা,পড়েছি কিনা,, কি করছি,, সব কিছুই ওর জানতে হবে কিছুক্ষণ পর পর,,আর আমার কাছ থেকে ও যদি কোন কারনে জানতে না পারে বা আমার জানাতে দেড়ি হয় তখন ও পাগলের মতো হয়ে যেতো,,,,""
,
এর পর কিছুদিন অনেক ভেবে আমি ও ওকে আই,লাভ,ইউ বলি,, তার পর ও দেখা করার জন্য পাগল হয়ে যায় কারন ততো দিনে ও আমাকে বা আমি ওকে দেখিনি,,কারন আমার ফেসবুকে কোন ছবি দেয়া ছিলো না,আর ও চাইলে ও আমি ওকে ছবি দিইনি আমি ওকে বলে ছিলাম যে ভাগ্য থাকলে সামনা সামনি দেখা হবে কোনদিন,,আর শুধু ও না আমি ও কিন্তু ওকে দেখি নাই,কারন ওর ও ফেসবুকে ছবি দেয়া ছিলো না যদি ও ওর ছবি ও আমাকে দিতে চেয়েছিলো আমি না করেছিলাম কারন আমি যখন নিজেকে দেখাচ্ছি না তাহলে আমার ও ওকে দেখা উচিৎ না,,,,""
,
আমি যখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে তখন আমাদের দুজনের প্রথম দেখা হয়,আমি দেখতে মোটামুটি, খুব ভালো ও না,খারাপ ও না,,সত্যি বলতে কি ওকে আমি দেখার পর আমার পছন্দ হয়নি কিন্তু তাতে কিছুই না আমি ততো দিনে ওকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম তাই কিছুই বলতে পারিনি,,,,আমাদের দেখা হবার পর থেকে লিমন যেনো কেমন বদলে যেতে থাকে,আমার সাথে যে প্রতি ঘন্টায় যোগাযোগ করত সে যেনো তা ভুলেই গেছে,,তখন আমি নিজে থেকে ওর সাথে কথা বলতাম আর কথা বলার সময় বুঝতে পারতাম যে ও কথা বলতে চাচ্ছে না কিন্তু তার পর ও আমি কথা বলে যেতাম আর ওর সাথে কথা না বলে আমার পক্ষে তখন কিছুই করার ছিলো না,,কদিন পর থেকে ও ফেসবুকে আমার ম্যাসেজের রিপ্লাই দেয়া বন্ধ করে দেই আর আমি কল দিলে ও কয়েকবার দেয়ার পর রিসিভ করত,খুব লজ্জা লাগতো এতো ছোট হয়ে বার বার ওর সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু কিছুই করার ছিলো না,,কারন আমি ওকে ভালোবাসি,,,,,,মাঝে একদিন ওর মোবাইল বন্ধ ছিলো সেদিন আমি চিন্তায় কিছুই খেতে পারিনি আর ওকে কল দিয়েছিলাম কয়েকশ বার,,পরের দিন যখন ওর নাম্বার থেকে আমার কাছে কল আশে তখন আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কারণ ওর নাম্বার থেকে আমার কাছে অনেক দিন পর কল আসছিলো,, কিন্তু আমার সেই আশা খুশিটা আমার কাছ থেকে হারিয়ে পালাতো সময় নিলো না ওর কথা শুনে,,,,ও আমাকে ফোনে বলে যে ওকে নাকি ওর বাবা মা গ্রামে ডেকে নিয়ে ওর অজান্তেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছে ওর নাকি কিছুই করার ছিলো না,,ও আমার কাছে মাফ চেয়েছে আর বলেছে আমি যেনো ওর সাথে যোগাযোগ না করি আর,,,,,আমি সেদিনই অন্য একজনের কাছ থেকে জানতে পারি যে আসলে ও বিয়ে করেনি ও আমাকে যা বলেছে তা নাকি আমার হাত থেকে বাঁচার জন্য,, মানে আমি নাকি ওর জগ্য না আর আমি দেখতে খারাপ তাই ওর সাথে আমাকে মানায় না,,,,""
,
সেদিন আমি খুব অসুস্থ হয়ে পরি আমাকে ক্লিনিকে ভর্তি করতে হয়েছিলো সেখানে আমি ৩/৪ দিন ছিলাম আর আমি নাকি তখন শুধু লিমন লিমন করেছিলাম,,,,আমি যখন ক্লিনিক থেকে বাসায় ফিরি তখন ও আমার সব কিছুতেই শুধুই ও ছিলো,, আমি মানুষিক ভাবে কিছুতেই ঠিক হতে পারছিলাম না,,এর ভিতরই আমাকে ইন্টার পরিক্ষা দিতে হয় আর ফলাফল ২টা বিষয়ে ফেল,, সেবার জীবনে প্রথম আমি কোন পরিক্ষায় ফেল করি আর ফেল করাতে আমি যে কস্ট না পেয়েছি তার থেকে অনেক অনেক বেশি কস্ট পেয়েছি আর পায় লিমনের জন্য,,,, ""
,
জানি না ভাইয়া আমার এই কথা গুলা আপনি পড়বেন কিনা আর লিখবেন নিকি, আমি চাই আপনি লিখেন, লিখলে তাতে আমার কোন লাভ হবে না, এটা পড়ে যদি অন্য কেউ তার জীবনে এমন ভুল থেকে বাঁচতে পারে এটাই আমার চাওয়া আর পাওয়া,,,,,""
,
ভালোলাগা বা ভালোবাসা সুন্দর এক অসাধারণ সৃস্টি,,এটাতে যেমন সুখ আছে ঠিক তেমতি দুঃখ ও আছে,,,,, তাই প্রতিটি মানুষের ভালোবাসা চাওয়ার সাথে সাথে বোঝা উচিৎ বুঝতে হবে আপনার শক্তিশালী ভালোবাসাটা নেবার ঘমতাটা আছে তো আপনার সেই ভালোবাসার মানুষের,,??
,
(লেখাটা আমার ইনবক্সে কোন এক অচেনা মানুষ দিয়েছে, আমি শুধু তার কথা গুলা একটু গুছিয়ে লেখার চেস্টা করেছি,,আমার কাছে তার একটাই চাওয়া ছিলো আমি যেনো লেখাটা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিই)

আপনি পড়ছেন আমাদের ভালোবাসার কষ্টের গল্প (Valobashar Koster Golpo) অন্যান্য গল্প পড়তে আমাদের ব্লগ ঘুরে দেখুন। 


গল্প - ০৪

ভালবাসার বিয়ে.....অত:পর

আজ জীবনে ১মবার কোর্টের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আমি!আসামী হয়ে নয়,বাদী হয়ে।খুব অসহ্যকর লাগছে সবকিছু।আর বার বার মনে একটা কথাই আসছিল"ভালবাসা আজ আমায় কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে"।

আমি মিনু,আমার স্বামী মারুফ।৩ বছর প্রেমের পর বিয়ে।ভালবাসার বিয়ে। পরিবারকে অনেক কষ্টে রাজি করাতে হয়েছিল আমার,মা-বাবাকে বার বার বুঝিয়ে বলেছিলাম"ও অনেক ভালো,আমায় অনেক হ্যাপি রাখবে"
অনেকটা জমজমাট করেই বিয়েটা হয়েছিল।আর দশ পাঁচটা মেয়ের মতই হাজারো স্বপ্নে ঘেরা সাংসারিক জীবন শুরু হল।বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই লক্ষ্য করছিলাম মারুফ অনেকটা বদলে যাচ্ছে।
সম্পর্কে থাকাকালীন আমায় নিয়ে এত ব্যস্ত থাকা মানুষটা হঠাৎ করেই বদলে যেতে লাগল।বিয়ের পর থেকেই আমার প্রতি তার কেমন যেন একটা অমনোযোগ! মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল।তারপরও বিয়ের পর কিছু পরিবর্তন আসে সেটা ভেবেই সব মেনে নিলাম।:-)

সে নেশা করা শুরু করে কেন তা আমার অজানা ছিল। সারাক্ষণ ফোনে ব্যস্ত থাকত।আমি কিছু বললেই বাজেভাবে রিয়েক্ট করত।আমায় মাঝে মাঝে মারধরও করত।কারণে অকারণে যেকোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ করত। পূর্বেও করত তখন আমি সেটা ভালবাসা ভেবে নিয়েছিলাম,বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে তাও ভেবে ছিলাম।কিন্তু হয়নি বরং বেড়ে গিয়েছিল।

হাজার হোক বাঙালী নারী।তাও মেনে নিয়েছিলাম সেটাও।এতদিনের ভালবাসা,বিশ্বাস,মানুষটার প্রতি মায়া,নিজের সংসার।না মেনে কি উপায় ছিল?তাছাড়া মা,বাবা,সমাজ আরো কত দুনিয়ার দোহাই আমাকে আটকে রেখেছিল। তাই কারো সাথে কিছু শেয়ার করা হয়নি কখনও।
এই তো গত দুই মাস আগে আমাদের ১ম বিবাহবার্ষিকী গেল।আমাদের বিয়ের বয়স ১ বছর ২ মাস।কে বা জানত ভালবাসার বিয়ের এমন ভবিষ্যৎ।

খুব কম সময় এসেছে আমার সংসার জীবনে যখন মন খোলে হেসেছি।হঠাৎ করেই যখন আপনার এতদিনের সাজানো স্বপ্নগুলো চোখের সামনে ভেঙে যেতে দেখলেন তখন যেমনটা হয় আর কি! স্থিতিশীলতা বিরাজ করে মনে,জিবনে।
শ্বশুড়বাড়ির ফ্যামিলি থেকেও কোনো সাপোর্ট পাইনি কখনও,তাদের কাছ থেকে সাপোর্ট আশা করবই বা কিভাবে।যাকে ভালবেসে সুদূর পথ পাড়ি দিয়েছিলাম সেই তো তখন অন্য এক মানুষ।
দিন দিন মারুফ একটা মানুষরূপী জানোয়ার হয়ে উঠতে লাগল।আচরণ,অকথ্য নির্যাতন,অসম্ভবরকম সন্দেহ,মুখের ভাষা,কি বিশ্রী সবকিছু!!

আজ থেকে প্রায় ১ মাস আগে আমি জানতে পারলাম আমি প্যাগনেন্ট।এ খবরে আমি দুনিয়ার সবরকম কষ্ট ভুলে গিয়েছিলাম।পুনরায় বিশ্বাস গড়ে উঠতেছিল সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।মারুফের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন রাত ১১.৩০, মারুফের আগমন।আমি দৌড়ে ওর কাছে যেতে চাইলাম।কিন্তু মারুফ নেশা করে এসেছে, সে আমার দিকে এগিয়ে আসল আর আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দিল।সে আমার পেটে,শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করতে লাগল।আমি প্রচন্ড ব্যথায় কাঁতরাতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আমি চেতনা হারালাম।সারারাত পড়ে ছিলাম ফ্লোরে।
সকালে ঞান ফিরতেই অতিকষ্টে লুকিয়ে বাবার বাড়ি এসে পৌঁছলাম।সেখান থেকে আমায় হসপিটালে ভর্তি করা হয়। টানা ৭ দিন ছিলাম ওইখানে।আমার মিসক্যারেজ হয়ে গেল।আমার ছোট পরীটা দুনিয়ার আলো দেখার আগেই চলে গেল।বিয়ের আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম মেয়ে হলে পরী নামটাই রাখব। কিন্তু কিভাবে মেনে নিতাম এই ব্যাপারটা!!
নিজের উপর নির্যাতনটা তো আমি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পরীটার কি দোষ ছিল?মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম।মারুফ এসেছিল একবার মাফ চাইতে কিন্তু আমি কথা বলিনি।ওদের পরিবার থেকে নানাভাবে বিষয়টা মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টাও করেছিল।

সমাজের বিভিন্ন কটুক্তিও শুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে আমি আজ আর চুপ করে, সব মেনে নিয়ে পড়ে থাকব না।লড়াই করব আমার ওপর হয়ে যাওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে।আমার পরীটার মৃত্যর জন্য দায়ী অমানুষটাকে শাস্তি দেয়ার জন্য।
সবকিছু মেনে নিতে কষ্ট হলেও, হয় মরব নয়তো লড়াই করেই বাঁচব।


গল্প - ০৫


নিয়তি

-ইসু!আস্তে! এই আস্তে নামো!করছো কি! পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাবেতো! আর তোমাকে কতবার করে বলেছি আমি; যে এই অবস্থায় একদম উঠাবসা করবেনা! দরকার পড়লে আমাকে ডাক দিবে!
রাসেলের উৎকন্ঠা দেখে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। বিয়ের পর এ প্রথম, রাসেল আমার এতটা যত্ন করা শুরু করেছে, কারন আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্বা। হুম! স্ত্রী অন্তঃসত্বা হলে স্বামীর উৎকন্ঠা থাকবে,স্বামী যত্ন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার চমকানোর কারনটা ভিন্ন। রাসেলের পরিবার একপ্রকার জোড় করেই ওর অমতে আমার সাথে ওকে বিয়ে দিয়েছিলো,ও শারমিন নামের একটা মেয়েকে ভালবাসতো। কিন্তু আমার জন্যই পারলোনা শারমিনকে বিয়ে করতে। আর তার কারনেই আর ৫, ১০টা সম্পর্কের মতো সহজ ছিলোনা আমাদের মধ্যে সবকিছু। ও সবসময় এড়িয়ে এড়িয়ে চলতো আমায়। কিন্তু এখন আমি অন্তঃসত্বা তাই ওর যত্ন, উৎকন্ঠার কোনো শেষ নেই। কিজানি এটা আমার প্রতি ওর একটু একটু করে ভালবাসা জাগ্রত হওয়া নাকি শুধুই স্বামী হিসেবে একজন অন্তঃসত্বা স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব পালন করা?জানিনা!
-কিছু হবেনা রাসেল! পারবো আমি
স্বাভাবিকভাবেই বললাম কথাটা। 
রাসেল বললো,"না! না! পারবেনা! আর কখনো যেনো না দেখি এভাবে,এখন বলোতো কেনো উঠতে যাচ্ছিলে?"
আমি ইতস্তত করে বললাম,"চুলটা জট পেকে গেছে, আচড়াতে উঠেছিলাম।"
রাসেল আস্তে করে আমার দুকাধে হাত দিয়ে উঠিয়ে আয়নাটার সামনে নিয়ে গেলো। চিরুনি টা নিয়ে চুলটা আচড়ে বেনী করতে লাগলো। আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। ঠোটের কোনে একটু মুচকি হাসি এলে সেটাকে আবার চাপিয়ে নিলাম।
চুল আচড়ানো শেষে রাসেল আবার খাটে এনে বসালো আমায়। তারপর হঠাৎ আমার পেটে ওর মাথাটা রেখে বললো,"ইসু!দেখো আমাদের আলাইনা আমাকে বাবা বলে ডাকছে।"
এমন সময় আমি চিৎকার করে উঠলাম।
ও চমকে উঠে বললো,"এই কি হয়ছে তোমার!"
আমি নাকমুখ কুচকে বললাম,"পেটে লাথি মেরেছে।"
রাসেল আবারো উৎকন্ঠিত হয়ে বললো,"ওহ্ ইসু! তুমি শোওতো! শুয়ে বিশ্রাম নেও। তাহলে ভালো লাগবে।"
তারপর আস্তে করে শুইয়ে আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।

কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। ঘুম থেকে উঠে বাসার কাজের মেয়েটাকে ডাক দিলাম,"রিপা!তোর ভাই কই?"
রিপা দৌড়ে এসে বললো,"ভাবী!ভাইতো আপনারে ঘুম পাড়াইয়া অফিস গেছেগা! ভাই নাস্তা বানাই রাখছে বিকালকার,আমারে বানাইতে দেইনাই,কইছে আপনারে খাইয়া লইতে,আর এই চিঠিখান কইছে আপনারে দিতে,লন। আর ভাবী খাইয়া লন,কিছু লাগলে আমারে ডাক দিবেন।"
রিপা মেয়েটা বাসায় আছে বলে একটু সময় কাটে আমার। নাহয় রাসেল অফিস চলে গেলে একাই থাকতে হয় পুরো বাসায়।
খাওয়া শেষে রাসেলের রেখে যাওয়া চিঠিটা খুললাম,
(ইসু!
আজ প্রথম তোমার জন্য রাধলাম,অতো ভালো রাধতে পারিনা তোমার মত করে,তাও খেয়ে দেখো।
আর হ্যা,আমার দেরি হলে রাত জেগোনা,শুয়ে পড়ো।
ইতি
রাসেল।)
চিঠিটা ভাজ করে কেমন যেন উদাস হয়ে গেলাম
রাসেল এসব কেনো করছে! ও কি একটু হলেও ভালবাসে আমায়?
নাকি শুধু দায়িত্বের খাতিরে?

মনে পড়ে গেলো এক বিকেলের কথা
!!!!!!!!!!!!""""""""""
রাসেল একদিন বলেছিলো,"ইসু!দেখো! আমি শুধু বাবা মার অনুরোধে বাধ্য হয়ে তোমায় বিয়ে করেছি,তাদের নাতিনাতনীর মুখ দেখার আশায় সন্তান নিয়েছি। কিন্তু তাই বলে তুমি কখনোই আমার কাছে শারমিনের জায়গাটা আশা করোনা,কারন ভালবাসাটা শুধু ওর জন্য,তুমি শুধুমাএ আমার স্ত্রী।"
কথাটা মনে পড়ে নিজের অজান্তেই চোখবেয়ে দুফোটা জল পড়ে গেলো চিঠির ভাজটাতে।
হুম আমি শুধুমাএ ওর স্ত্রী,কাগজে কলমে সই করা স্ত্রী,
কোনোদিন ও আমায় ভালবাসতে পারবেনা,কারন আমাকে যে ভালোই বাসা যায়না।
অনেক কষ্ট করে আস্তে আস্তে উঠে ডায়েরীটা নিলাম,তারপর একটা লাইন লিখলাম।
("খুব ইচ্ছে করছে আজ জোনাকি দেখবো,ছোটো বেলায় মন খারাপ হলে আমি জোনাকির পিছনে ছুটতাম,ওদের মুঠোবন্দী করে কষ্ট দিলে তবেই আমার মন ভালো হতো।")
আগে রাসেলের জন্য প্রতিরাত অপেক্ষা করতাম,এখন শরীর ভালোনা বলে চেষ্টা করেও পারিনা।
রাতে তাই ও আসার আগেই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
রাত ১১টা। হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেলো।
পাশ ফিরে দেখলাম রাসেল নেই খাটে। বারান্দা থেকে ওর আওয়াজ আসছে। কারো সাথে কথা বলছে ফোনে।
শুনতে না চেয়েও কানটা চলে গেলো ওদিকে।
রাসেল কারো সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে,"দেখো! আমি পারবোনা এটা করতে! হুম! তোমাকে ভালবাসি এটা যেমন সত্যি কিন্তু ইসুকেও আমি বিয়ে করেছি সেটাও তেমন সত্যি,আর এখন আমার স্ত্রী অসুস্থ! ওকে ছেড়ে আমি এক মূহুর্তের জন্য ও কোথাও যেতে পারবোনা। তোমার ঘুড়তে মন চাইলে আরো সময় আছে,এখন অন্তত এসব বাচ্চামি করোনা প্লিজ শারমিন।
বুঝার চেষ্টা করো!"

ওহ্ এতক্ষনে বুঝলাম। শারমিনের সাথে কথা বলছে। 
চোখবেয়ে জল পড়ছিলো,কিন্তু শারমিনের সাথে কথা বলতে দেখে নয়,আমার জন্য ওর এতো গভীর চিন্তা দেখে।
-শারমিন,প্লীজ,আমাদেরকে আমাদের মতো থাকতে দাও,ইসু এখন আমার স্ত্রী,ওকে আমি মাঝপথে ছেড়েও দিতে পারিনা,যতই নারাজ কেনো না ওর প্রতি,আর আজকের পর তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ হবেনা,বাই।"
বলেই রাসেল পিছন ফিরে চমকে তাকালো,"একি ইসু! তুমি!এতো রাতে, এখনো জেগে আছো! আর তুমি কি সব শুনছিলে,"কষ্ট করে উঠে আসলে কেনো!"
ও তোতলাতে তোতলাতে কথাগুলো বললো,
আমি কেদেঁ দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম,"আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দেই,তাইনা রাসেল? "
ও থতমত খেয়ে গেলো,"ছি!কি বলছো এসব তুমি ইসু! কেনো বলছো,?
কি হয়ছে তোমার!"
আমি কেদেঁ দিয়ে বললাম,"শারমিন ফোন করেছিলো, ওর সাথে তোমার ঘুড়ার প্ল্যানটা নষ্ট হলো আমার এ অবস্থার জন্য,কত প্যারা আমি দেখছো।"
রাসেল এবার একটা মিষ্টি হাসি দিলো।
তারপর আমার দুকাধে আলতো করে হাত রেখে বললো," ইসু! শোনো! তোমায় একটা কথা বলি, তুমি আমাকে কষ্ট দিচ্ছোনা মোটেই,বরং তুমি নিজে কষ্ট পাচ্ছো আমাদের জন্য। দেখো তুমি কত বড় সেক্রিফাইস করছো। ৯ মাস কষ্ট পাচ্ছো আমাদের আলাইনার জন্য! আমাকে বাবা হওয়ার সুখ দেওয়ার জন্য,আমার বাবা-মাকে সুখী করার জন্য। এই যে এতো সেক্রিফাইস করছো, এতো কষ্ট পাচ্ছো অন্তঃসত্বা অবস্থায় সেগুলো কম কিসে! আর আমি তোমার স্বামী হয়ে এ অবস্থায় তোমায় ফেলে রেখে ঘুড়তে যাবো ইসু! নাহ্ 
আর আমি কাল থেকে সারাক্ষন বাড়িতেই থাকবো।স্যারকে বলে ছুটি নিয়ে এসেছি যতদিন না তুমি সুস্থ হবে ততদিন।"
আমি এবার সত্যিই দোটানায় পড়ে গেছি। মানুষটার প্রতি শ্রদ্ধায় মনটা ভরে গেলো," এতটা ভাবে আমাকে নিয়ে!"
আমি বললাম, কিন্তু রাসেল! তোমার তো তাহলে অনেকগুলো প্রজেক্ট হাতছাড়া হবে। আর তাছাড়া স্যালারিটাও কাটবে।"
রাসেল হেসে বললো," এসব কিছুই তোমার চেয়ে বড় নয় ইসু! এবার এদিকে এসোতো! এ পটটা নাও,এতে তোমার জন্য জোনাকি পোকা রাখা আছে,মুঠোবন্দী করে মন ভালো করে নাও।"
আমি কেদেঁ দিয়ে বললাম,"তুমি কিভাবে জানলে জোনাকি পোকার কথা?"
রাসেল হেসে বললো,"ম্যাম! আপনার ডায়রীটা আমাকে জানতে সাহায্য করেছে।"

আমার চোখের জলগুলো বেয়ে পড়েই চলছে একনাগাড়ে।

জন্মের পর বাবা মা মারা যায়,সৎ মায়ের সংসারে অনাদরে বড় হয়েছি,ভালবাসা কি বুঝিনি কোনোদিন। এ মানুষটাই ভালবাসা জাগাচ্ছে একটু একটু করে। হুম ভালোবাসি রাসেলকে আমি।
""""""""""""""

অতঃপর,সেই দিন আসল।
আমার সন্তার জন্ম নেওয়ার দিন।
প্রসব বেদনা উঠলে রাসেল দ্রুত এম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। ধরাধরি করে স্ট্রেচারটায় আমাকে উঠানো হলো। পাশে শাশুড়িমা,ননদ আর শ্বশুররের মুখে উৎকন্ঠা। শ্বাশুড়ি কাদঁছে।
অনেক কষ্টে ঘাড় ঘুড়িয়ে বাঁপাশে রাসেলকে দেখলাম। ও কাদঁছে। আমি শক্ত করে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম,"রাসেল,জীবন মরন নৌকোয় পা দিতে গেলাম,মরে গেলে শারমিনকেই বিয়ে করে নিও প্লীজ,আর আমার আলাইনটাকে একটু দেখো।
মেয়েটা যেনো আমার মতো মাহারা হয়ে সৎমায়ের কাছে অনাদরে না বেড়ে ওঠে। শারমিনকে বলো যাতে আমার মেয়েটাকে একটু ভালবাসে।"
রাসেল কেদেঁ বলে উঠলো," ইসু! কিছু হবেনা তোমার! কি বলছো!"
চুপ করো!"
আমাকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো। রাসেলের হাতটা আমার হাত থেকে ছুটে গেলো।
একটু পর ডাক্তার চেকাপ করে আমাকে মুখগম্ভীর করে বললো," মিস রাসেল! অন্তত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি,আপনি এবং বাচ্চা দুজনের কন্ডিশন খুব খারাপ! এ অবস্থায় যেকোনো একজনকে আমাদের পক্ষে বাচাঁনো সম্ভব। এখন আপনিই বলুন আমরা কি করবো।"
আমার সিদ্ধান্ত নিতে এক মিনিট ও সময় লাগলোনা।
চট করে বলে দিলাম," ডাক্তার,বেবিটাকে বাচাঁন। আর রাসেলকে একবার ডেকে দিন প্লীজ,শেষ একবার কথা বলতে চাই।"
একটু পর রাসেল এলো। কাদঁতে কাদঁতে ওর চোখমুখ ফুলে গেছে। চুপচাপ চেয়ারটায় বসল।
দুজনেই চুপ। নীরবতা ভঙ্গ করে রাসেল হঠাৎ কেদেঁ উঠলো,"ইসু! বেবিটা চাইনা আমার,তুমি আমাকে ছেড়োনা প্লীজ! ক্ষমা করো! অনেক কষ্ট আর অবহেলা দিয়েছি তোমায় আমি! একটাবার ভালবাসার সুযোগ দাও,মরে যেওনা প্লীজ।"
ওর মুখে ভালবাসার কথা শুনে দাত দাত কামড়ে কান্নাটা চেপে বললাম," ছি! কি বলছো,এ বেবিটা আমাদের সবার জন্য অনেক কিছু! আর এমনিতেও এ দুনিয়ায় কে ইবা আছে আমার বলোতো! আমি একজন মরে গেলে কার কি হবে! আর তোমায় কষ্ট পেতে হবেনা! ওহ্ হ্যা শারমিনকে কিন্তু বিয়েটা করে নিও। মুক্তি দিলাম তোমায়,রাসেল! আমার মেয়েটাকে একটু দেখো প্লীজ,আমি যাচ্ছি।
রাসেল কেদেঁ বলছে,"আল্লাহ,এত বড় পরীক্ষায় কেনো ফেললে আমায়!"
আমি বললাম,"রাসেল শেষ একবার জড়িয়ে ধরবে প্লীজ।"
রাসেল উঠে আলতো করে জড়িয়ে ধরে কেদেঁ দিলো।
একটু পর ডাক্তার এলো।
-মি.রাসেল,এবার যান! রোগীর সময় হয়ে এসেছে ডেলিভারির।
রাসেল উঠছেনা। ডাত্তার জোড় করে নিয়ে গেলো।
আমি মুখটা অন্য পাশে ফিরিয়ে কাদঁতে লাগলাম।

পুরো গল্পটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।