Bangla Love Letter

Some awesome Bangla Love Letter is posted by Bangla Talkies.

Read all of this letter and If you like this, please leave a comment below.

Bangla Love Letter

প্রিয়,

প্রতিদিন ভাবি,
একটা চিঠি লিখবো তোমাকে
ভেবে ভেবেই পার হয়ে যায়
ব্যস্ত দিন, ক্লান্ত রাত্রি
লেখার পাতা শেষমেষ শূণ্যই থেকে যায়
আকন্ঠ ডুবে থাকা শূণ্যতায় একটি মানুষের,
রয়েছে না পাওয়ার বেদনার বিস্তর গল্প
জীবনের বন্ধুর পথে, চরাই উতরাই অতিক্রমের ভয়ংকর সব কাহিনী
পোড় খাওয়া, সংকটময় সময়ের ইতিহাস
ক্ষতিগ্রস্ত হৃদয়ের যন্ত্রনা কাতর, বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা
নিরবে নিঃশব্দে লালন করে রাখা, জ্বালাময়ী ঘটনার সারি
তোমাকে ছাড়া, পেরিয়ে আসা অসংখ্য দিন, মাস, বছর
কাড়ি কাড়ি কষ্ট, গন্ডা গন্ডা চোখের জলে কাটানো সময়ের গল্প
কত কি বলার আছে তোমার কাছে
আমি লিখব, অনেক না বলা কথা
তুমিহীনা, চৈত্রদিনের খরায় পুড়ে খাক হবার প্রহর
মধুমাসে, একাকীত্বের যন্ত্রণায় ছটফটে দুপুর, সোনালী বিকেল আর
নিকষ আঁধারে, রাতের নির্জনতায় প্রেম বিরহী হাহাকার

আমি লিখবো তোমাকে বিস্তারিত বিবরণে,
তোমার সময় হবে কী, সে চিঠি পড়বার?

ইতি,
নীপা আকন্দ

০২

প্রিয় কালামানিক,

“আমার কপালের সাদা তারা মার্কার আর আমার প্রিয় পানিভাতের ভালবাসা নিও।
আশা করি ভাল আছ। বাড়ির কুইত্তা মন্টুর কাছ থেইকা তোমার চিঠি পাইলাম, চিঠি পইড়া বুকটা ধক কইরা উঠল, আর একটু হইলেই তুমি আমার জীবন থেইকা নাই হইয়া জাইতা, কালকের হাটের বাজারে মনিব তোমাকে নিয়া গেছিল, আমাগো মহব্বতের জোরে তুমি ফিরা আইছ, যাক এক্কান ১০ কেজির পাত্তর বুকত্থন নামি গেল। তোমার লগে দেহা করন মন চাইতাছে, কিন্তু মনিব সেটা হইতে দিবনা, মন্টু রে কইলাম কিছু এক্কান কইরা দিতে হে বেডারে আমি না খাইয়া মোর পানি ভাত খাউয়াইছি, হে কই গেছে জানি না। মোর লাইগা তোমার ভালবাসা দেইক্কা মোর পিরিত আরও বাড়ি গেছে, তুমি মুটেও চিন্তা কইর না, তোমার ছোটা লেজের কসম, তোমার জাইগা কেউ লইত পাইত্ত না, ওই লুইচ্ছা ধলা মতিন আমার দুই চক্ষের বিষ, হে ৪ ডা গার্ল ফেরেন্দ লইয়া গুরে, তই মুই দেইক্ষা ও না দেহনের মত থাকি, টেনশান লইও না, আই তুমারে ছাড়া, আর কাউরে চাই ন। তুমি আর জীবন আর মরন। এই ঈদে তুমি গেলে পরের ঈদে আইও আই জাইম, পর পারে এক লগে থাকম। কিন্ত মন ত মানে না, তুয়ারে ফালাই কেনে থাইক্কম, আর ভালাবাসা ত ফেইল ওই যার। তুমি ন জান, কাইন্তে কাইন্তে মোর চউখের পানি শুকাই গিয়ে। দুয়া গরি, তুয়ারে যেন কেউ নো কিনে হাটত, আর কেউ কিনি ফালাইলেও যেন হস্ট কম দিএয়েনে কুরবানি দে। আই আর কিছু ভাবিত নো পারির, হত কষ্ট যে লাগের। হত হোতা মনত পরি যার, হত মজাত আসিলাম আমি তুমি।

আর কিছু লেখিত নো পারির, কষ্টে আর বুক ভাঙি যার। তুয়ার ভালবাসার, তুয়ার হাম্বা ডাক, তুয়ার ওই চোখের চাওনি তুয়ার নাইস শিং, ওহ আর ভাবিত নো পারির। তুয়ারে ছাড়া কেনে থাইক্কম।
আর ৮০ কেজি ওজনের ভালাবাসা লইও, মনত রাইক্ষ, আই আসি আই থাইক্কম, পরপারে দেহা অইব, আর আরা বাছাকাছা লই সুকর সংসার গইজ্জম।

ইতি,
তুয়ার প্রিয়া, লালি (তারা লালি)

০৩

প্রবাসী স্বামীকে অভিমান নিয়ে লেখা স্ত্রীর চিঠি

প্রিয়,

আমার ভালবাসা নিও।উষ্ণ আলিঙ্গনের মাঝে যে ভালবাসা থাকে আমি সেই উষ্ণ আলিঙ্গন চাই।কোমল হৃদয়ের ছোঁয়ায় যে মাধুর্য লুকিয়ে থাকে তার সান্নিধ্য পেতে চাই।আমি ভালবেসে ভালবাসায় জড়িয়ে রাখতে চাই।আমি তোমার মাঝে নিজেরে হারাতে চাই।আমি আমার আমিকে তোমাতেই লুটাতে চাই।আমি তোমার সময় চাই।তোমার ক্লান্ত শরীরের শান্ত পরশের ভরসা হতে চাই।কাজের থেকে যখন তুমি ঘরে ফেরো, তখন তোমার শান্তির ছোঁয়া হতে চাই।আমি আমাদের সংসারটা ভালবাসার বাগিচা বানাতে চাই।আমি আমার মাঝে তোমার অস্তিত্ব চাই।অনেক তো রোজগার করলে আর কতদিন থাকবে তুমি ওই দূরদেশ,টাকাও জমেছে বেশ।তাড়াতাড়ি ফিরে এসো বাড়ি, নইলে চলে যাবো বাপের বাড়ি.....

ইতি,
তোমার পেয়ারী😍
লায়লা


Here are some Story about love for you.

০৪

প্রিয় ইশিকা,

অনেক ভেবে চিন্তে চিঠি লিখতে বসলাম। তোমার মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। কি ভাবছো এই ফোন ফ্যাক্সের যুগে চিঠি লিখতে বসলাম কেন? আগেই বলেছি অনেক ভেবে চিন্তে চিঠি লিখতে বসেছি। চিঠিতে আমার স্পর্শ আছে প্রতিটি অক্ষরে আমার ছোঁয়া আছে। আমার শরীরের গন্ধ লেগে আছে। এটা আমার কথা নয় তোমার কথা। আগে বলতে চিঠি শুধু চিঠি নয় চিঠিতে তুমি আমাকে খুজে পাও। তাই চিঠি লেখা। তুমি যখন চিঠি পড়বে তখন আমার শরীরের গন্ধ পাবে। চিঠির প্রতিটা অক্ষরে যখন তুমি হাত বুলাবে তখন তোমার মনে হবে আমাকে স্পর্শ করছো। আগে দুজনে কত চিঠি বিনিময় করতাম। চিঠি দিতে একটু দেরী হলে গাল ফুলিয়ে বসে থাকতে। আচ্ছা রাগ করে যেমন ফোন রিসিভ করছোনা তেমনি কি চিঠিও পড়বেনা? আজ কত দিন তোমার কন্ঠ শুনিনা। খুব ইচ্ছা করছে তোমার কন্ঠ শুনতে একটি বার দেখতে। বেশ বুঝতে পারছি তোমার মনের মধ্যেও একি রকম অনুভুতি হচ্ছে।
তাছাড়া তোমার এই সময়ে আমার পাশে থাকা খুব প্রয়োজন ছিলো। তোমার ও আমাকে কাছে পেতে ইচ্ছা করছে। এ জন্যই অভিমান করে কথা বলছোনা। মায়ের মুখে শুনেছি তোমার শরীরটাও তেমন ভালো নেই। কি করবো বলো, আমিও কি তোমাকে ছেড়ে প্রবাসে ভালো আছি, প্রবাস জীবন খুব কষ্টদায়ক । তুমি না বুঝলে কে বুঝবে বলো। তুমি যে আমার ছেলেবেলার পুতুল বউ। আমার পুরো পৃথিবী জুড়ে শুধু তোমার অস্তিত্ব, সেই তোমাকেই দূরে রেখে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছি , আমারও খুব ইচ্ছে করে তোমার কাছে ফিরে আসতে, তোমার পেটে কান পেতে আমাদের বাবুনিটার স্পন্দন শুনতে। আমাদের বাবুনিটা খুব দুষ্ট হয়েছে তাইনা? তোমাকে বুঝি খুব জ্বালিয়ে মারে। তুমি দেখে নিও বাবুনিটা দেখতে এক্কেবারে আমার মত হবে। আমাদের বাবুনিটা আর কিছুদিন পরেই পৃথিবীতে আসবে। পৃথিবীর আলো বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাশ নিবে। আর আমাকে খুঁজবে। ও যখন সারা বাড়ি ছোট ছোট পায়ে হেঁটে বেড়াবে আধো আধো কথা বলবে তখন আমি দেশে ফিরবো। আমাকে তখন চিনতেই পারবেনা। আজ এই পর্যন্তই থাক। অনেক রাত হয়েগেছে একটু ঘুমুতে হবে। তা না হলে কাল ডিউটি করতে পারবোনা। ভালো থেকে পুতুল বউ। চিঠি পেয়ে আমাকে ফোন দিও। সব অভিমান ভুলে আমাকে কাছে টেনে নিও।

ইতি
তোমার নীল

০৫

প্রিয় নিরঞ্জন,

বৈশাখের কালবৈশাখী ঝড়ে আমি শেষ চিঠি পেয়েছিলাম।আমি তখন ভাত রান্না করছিলাম। ডাকপিয়নের সাইকেলের শব্দে আমি দৌড়ে চিঠিটা পেয়ে আনন্দের অশ্রুজল ২গাল বেয়ে পড়েছিল।তারপর তিনবার চিঠি দিয়েছি কোন উত্তর দাও নি,,,,,,,

তোমার উপর আমার একটু রাগ আছে কেন জানো?এ যুগে থেকেও ফোন ব্যবহার করো না তাই।তোমাকে কত কথা বলব বলে মনের ঘরকে সাজাই কিন্তু যখন লেখি তখন চিঠি ভিজে যায় চোখ ঝাপসা হয়ে আসে এইভাবে অনেক লেখা নষ্ট হয়ে যায়,,,,,,

তুমি কি ভালো আছ নিরঞ্জন? বাড়ি আসবে কবে? তোমার জন্য অপেক্ষা প্রহর আমার শেষ হচ্ছে না।তোমার ২বছরের মেয়ে বাবা বলে সারা বাড়ি হৈ চৈ করে,,,,কিন্তু বাবা কত দূরে মেয়ে বুঝে না মেয়েকে কেন বাবার আদর থেকে দূরে রাখছ??

মেয়েরা মা হওয়ার সময় তার স্বামী কে কাছে চায় কিন্তু আমি তোমায় পায় নি।যখন ব্যথায় অস্থির হয়ে কাঁদছিলাম বার বার তোমার মুখটা মনে পড়ছিল। তুমি এসেছিলে মেয়ের ৩মাসের সময়,,,,,

নিরঞ্জন ;আমাদের বিয়ের কথা মনে আছে?প্রেম করে বিয়ে কত লুকিয়ে দেখা হত,,আমার বনফুল পছন্দ ছিল বলে কত প্রতিবার ফুল নিয়ে এসে তারপর ৫মিনিটের দেখা হত তবু কতকিছু করতে দিনগুলো মনে পড়ে কি না জানি না???

জানো নিরঞ্জন আমার খুব ইচ্ছে করে তুমি জিজ্ঞাস করো কেমন আছি? ৩বেলা একসাথে খাবার খাওয়ার।অসুখের সময় মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে বলুক আমি আছি ত। তোমার কিছু হবে না,,,,,

বসন্ত আসে চলে যায় তোমার দেখা পাই না।কৃষ্ণচূড়া ফুটে আবার ঝড়ে যায় আমি একা থেকে যায়,,,,

নিরঞ্জন বিদেশ অনেক দিন থাকা হল।এইবার দেশে চলে আসো। মৃত্তিকা স্বাদ গ্রহণ করো।টাকা আনন্দ দেয় ভালো করেব বেচেঁ থাকার সুখ দেয় কিন্তু তার বদলে তোমার আমার সম্পর্ক থেঁতলে দিয়েছে,,,,

ইতি তোমার
এলোকেশী

০৬

প্রিয়,

এইযে মিঃ ঝগড়োটে ছেলে,
কি ভেবেছিলেন? আর কখনো যোগাযোগ করবনা? আপনার আশায় গুড়োবালি।
আমি জানি আমার উপর অনেক অভিমান পোষে রেখেছো, আমি আর তোমাকে আশা দেখাতে চাইনি। আমি খুব ভাল করে জানতাম তুমি আমাকে ভালবাসতে। মেয়েরা আর যাই হোক ছেলেদের তাকিয়ে থাকার চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করে, কেউ বুঝে কেউ বুঝেনা। তবুও আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করিনি। আমি মা নেই, বাবাই আমার সব। ছয়বার বদলি হয়েছেন বাবা। মা মারা যাওয়ার পর থেকে আমাকে বুকে আগলেই বাবা ছুটেছিলেন একজেলা থেকে অন্য জেলায়। আমার বাবার ধারনা কেউ কাউকে মন থেকে ভালবাসলে সে তাকে ছেড়ে চলে চায়, তাই মা আমার বাবাকে একা রেখে ওপারে পাড়ি জমিয়েছে। বাবা প্রেম ভালবাসা পছন্দ করতনা। তাই বাবার কথা চিন্তে করে আর যোগাযোগ করিনি তোমার সাথে।
তবে কয়েকদিন ধরে বাবা আমাকে বলতেছে, "মা নাজিয়া, তোর কোন পছন্দ থাকলে বল আমি তার সাথেই তোকে বিয়ে দেব, আর না থাকলে আমি আমার মেয়ের জন্য রাজকুমার খোঁজব"
তখন থেকে হৃদয়টা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠল, আমি কি কখনো কারো প্রেমে পড়েছিলাম? কাউকে ভালবেসেছিলাম? তোমার মুখটিই বারবার ভেসে ওঠে, কি ভাবছ? ভালবাসলে দুই বছর কি হল? সেটাতো একটু আগে বললামই।
আমি কিন্তু বাবাকে বলে দিছি,
"বাবা তোমার সৈকতের কথা মনে আছে? ওকে তোমার পছন্দ হবে?
বাবা হাসি মুখে বলেছে, আর বলতে হবেনা মা, আমি সামনের মাসেই তোকে নিয়ে নরসিংদী যাব।
এখন আমার ভয় হচ্ছে, আমি জানি তুমি আমাকে ভালবাসো। এখন সে ধারনা মিথ্যে হলেতো খুব কষ্ট পাব।
আচ্ছা ধরো আমি তোমাকে নতুন করে প্রপোজ করতেছি,
সৈকত, ও সৈকত আমি তোমাকে ভালবাসি, সারাটিজীবন তোমাকে ভালবাসতে চাই, তুমি কি আমাকে ভালবাসবে?
এখন উত্তর দিতে হবেনা, আসতেছি কয়েকটা দিন পরে। উত্তরটা না হয় তখনই জেনে নেব। আজ রাখছি তাহলে,, ভাল থেকো, ঝগড়া না করেও ঝগড়োটে ছেলে।

চিঠির শেষ প্রান্তে
নাজিয়া মিশকাত

০৭

প্রিয় মীম,

সেদিন তোমাদের ক্যাম্পাসে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। পুরো ইউনিভার্সিটি ভিজে চুপচুপ। প্রকৃতি ভিজছে প্রকৃতির কান্নায়। ইউনিভার্সিটির বারান্দা হতে বেশ সুন্দর লাগছিল বৃষ্টির নাচন। সেদিন বি ইউনিটের এডমিশন টেস্ট হচ্ছিল। তুমি তোমার বাবার সাথে এসে ভার্সিটির পুরো বারান্দা ঘুরে আমার পাশে বসলে!

অনেকক্ষণ চুপচাপ। তুমি কি যেন দেখতেছিলে। ওহ আচ্ছা ওটা ছিল প্রশ্নব্যাংক। অনেকক্ষণ আড়চোখে তাকিয়ে বললাম, এক্সাম দিবেন? লাজুক চেহারা নাড়িয়ে বললে,হুম!

তারপর আরো অনেকক্ষণ কথা হল। এক্সামমুখী কথা বলতে বলতে সময়টা যেন হুট করেই চলে গেল। হলে ঢোকার টাইম হয়ে গেল। দুজনই লাজুক। কেউ কাউকে কিছু বলব তাওনা। বললাম, আমি চবিতে পড়ি। এখন ফাস্ট ইয়ারে। আপাতত বিসিএস ভাবনায় আছি। যদি কখনো চবিতে এডমিশন টেস্ট দিতে যান তাহলে মাস্ট কল দিবেন। তোমার বাবার মোবাইলে নাম্বারটা ঠুকিয়ে নিলে।

মাঝখানে কেটে গেল ছয়টা মাস। প্রতিটা মুহুর্ত তোমার কলের অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর একদিন ওয়াটসএ্যাপে নক দিলে। আমি অবাক। মানুষটা কতদিন অপেক্ষা করালো। উফ!

তারপর কথা হল। প্রত্যেকটি কথা এখনো মনে আছে। অথচ আমি আত্মভোলা একটা মানুষ। কোনকিছু মনে থাকেনা। যা থাকে তাও ক্লিয়ারকাট না। অথচ তোমার বলা সবগুলা কথা হুবহু মনে আছে। তুমি শুনতে চাইলে ঠিক তোমার মত করেই বলতে পারব। তারপর প্রায়শ কথা হতো। রাতের নীরবতা ও চাঁদনি রাত যেন আমাদের দুজনকে পাহারা দিত।

একটা রাতের কথা বলি- চারদিকে ব্যাঙের ডাক। সাথে ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ। কল দিয়ে বললে, কি করছ? বললাম, পড়ার টেবিলে। তারপর বললে একটা জিনিস চাইব। দিবে? বললাম ওভাবে কিছু না বলে চাইলে কিইবা দিব?

তারপর অনেকক্ষণ পর বললে, 'আমি তোমাকে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে পেতে চাই'! তারপর অনেকক্ষণ চুপ। ওপাশে নীরব নিস্তব্ধ। এপাশেও নেই সাড়া শব্দ। হয়তো দুজনে সেদিন নোমাজলের স্বাদটা একসাথে নিয়েছিলাম।

মাঝখানে কেটে গেল আরো চারটা বছর। আমি এখন মাস্টার্সে। আর তুমি অনার্স ফোর্থ ইয়ারে। যদি বলি এই চারটা বছর সবচেয়ে বেশি পড়েছি বিসিএস নিয়ে, তাহলে বিলিভ হবে? হয়তো হবেনা। জানো আমার পড়ার টেবিলের পাশে ছোট্ট একটা ছবি আছে। কার জানো? ওটা তোমারই। ওটা আমাকে গিফট ককরেছিলে। তাইতো দৈনিক আট ঘন্টা পড়েও বিরক্ত হতাম না।

কিন্তু জানো মীম তোমাকে দেয়া কথা রাখতে পারব না। ভন্ডিংটা তুলে নাও। আমি যতদূর সামনে এগুয়েছি ততদূর পেছনে চলে আসব। হয়তো তুমি আমাকে বড্ড বাজে লোক বলবে। বলবে প্রতারক। আচ্ছা তোমার দেয়া প্রমিস কেন ভাঙলাম জিজ্ঞেস করবেনা?

যে দেশে কোটা দিয়ে মেধা যাচাই করা হয়, হাজারো মেধাকে প্রহসন করা হয়, সে দেশে আমার-তোমার প্রেমটা জয়ী হলে সারাজীবন অপরাধী হয়েই থাকব। বিবেকের কাঠগড়ায় সারাজীবন অসহায় হয়ে থাকার কোন মানে হয়না মীম। আমি বিসিএস এক্সাম ত্যাগ করলাম। তুমি না হয় কোন বিসিএস ক্যাডারের সঙ্গী হয়ো। তোমাকে বড্ড মানাবে!

ইতি
তোমার নীল

Thanks for your patience to read my whole Bangla Love Letter.

You can find here Some amazing Valobashar Golpo.

০৮

অনিমেষ,

প্রিয় এবং অপ্রিয়ের মাঝামাঝিতে যে মানুষ থাকে , চিঠির শুরুতে তাকে ঠিক কি বলে সম্বোধন করতে হয়, আমি শিখিনি কোথাও।
এতক্ষনে নিশ্চয়ই ডিভোর্স লেটারটা তোমার হাতে পৌঁছে গেছে।
হুট করে ডিভোর্স লেটার পেলে, যেকেউই একটু ধাক্কা খাবে। তুমি ঠিক কতটুকু ধাক্কা খেয়েছো, আমি অনুমান করতে পারছিনা। অথবা তোমার কোন ধাক্কাই লাগেনি হয়তো।

শোন
আমাদের সম্পর্কের আজ ৪ বছর পূর্ণ হলো। এইদিনে ডিভোর্স লেটারের জায়গায় হয়তো প্রেম পত্র থাকার কথা ছিল।
অথচ, পৃথিবী সব সময় তার কথা রাখতে পারে না। যেমন কথা রাখতে পারোনি তুমি।

আমরা ৪ বছর একসাথে ছিলাম! একই ছাদের নিচে! পাশাপাশি বালিশে! একই ঘরে! একটাই শরীর মোছার তোয়ালে ব্যবহার করেছি! পাশাপাশি চেয়ারে বসে খেয়েছি প্রতিদিন!
অথচ, আমরা কখনো কাছে আসতে পারিনি। আমাদের ভেতরে একটা দূরত্ব ছিল গোপনে।

আমি তোমার কাছের মানুষ হয়েছি শুধু সঙ্গমে! সঙ্গম এবং সঙ্গমের বাইরে তুমি এক অন্যমানুষ!
আমি তোমার কাছের মানুষ ছিলাম, যতক্ষন না তোমার বীর্যপাত সম্পন্ন হয়েছে।
বীর্যস্ফলনের পর তোমাকে অপরিচিত লাগে। এই মানুষটা তখন আর একটু আগের মানুষ থাকেনা। আমার নিজেকে খুব যৌন যন্ত্র মনে হয়, অনিমেষ। অথচ, বিছানার বাইরেও আমার একটা ভালোবাসার মানুষ প্রয়োজন হয়!
যত্নের অভাববোধ হয়! মুগ্ধতায় ভরা এক জোড়া চোখের চাহনি প্রয়োজন হয়!

তুমি রোজ সন্ধ্যায় অফিস থেকে ঘরে ফিরবে বলে আমি চোখে কাজল দিয়ে বসে থাকি। কপালে তোমার প্রিয় রংয়ের টিপ পরি।
তুমি ঘরে ফেরার আগে, আমি বারবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখি।
তুমি ঘরে ফেরার পর প্রথম যে কথাটা বলবো, সেটা অন্তত ১০০ বার ট্রায়াল দেই। কথা বলার সময় আমার মুখের এক্সপ্রেশনটা দেখি। তোমার চোখে কেমন লাগবে, এই ভয়টা কাজ করে সবসময়।
তারপর তুমি ঘরে ফিরো, আমি দরজা খুলে জিজ্ঞেস করি, '' খুব ক্লান্ত হয়ে গেছো, তাই না?"
তুমি তাকাও না কখনো। আমার কান্না পায়! আমি প্রত্যাশা করি, সারাদিন মানুষটা কাজ করে ঘরে ফিরে আমাকে একটু দেখুক।
আমি প্রত্যাশা করি, কেউ ঘরে ফিরে একবার জিজ্ঞেস করুক, "সারাদিন খুব একা একা লেগেছে?"
সেরকমটা হয়না কখনো। তুমি ফ্রেস হও, আমি প্লেটে খাবার তুলে দেই।
তুমি কখনো বলোনি, " তোমার হাতের মালাইকারিটা খুব অসাধারন হয়, রিয়া!"
কারন তুমি জানোই না, রান্নার কাজটা ভালোবেসে করতে হয়। ঠিক কত'টা যত্ন নিয়ে তরকারিতে লবন ঠিক আছে কিনা দেখতে হয়, তোমার ভালো লাগবে কিনা ভাবতে হয়, তুমি টের পাবেনা।

এরপর রোজ রাতে নিয়ম করে আমরা বিছানায় যাই। আমার কপালের টিপ খুলে আয়নায় লাগিয়ে রাখি। আমার চোখের কাজল মুছে ফেলি। শরীর মুছে সামনে আসি।
তুমি তাকাও। তোমার চোখে মুগ্ধতা অথবা যৌনতার লিপ্সা দেখে আমি হতবম্ভ হই।
এই মানুষটাই কি একটু আগের মানুষ? যে এতক্ষন তাকায়নি আমার দিকে।
তুমি বোধয় খুব নগ্নতা প্রিয় স্বামী, অনিমেষ! তাই না?

জানো অনিমেষ,
স্বামী হওয়ার আগে একজন প্রেমিক হতে হয়! এমন প্রেমিক, যার কাছে বিছানা এবং বিছানার বাইরে সব জায়গাতেই স্ত্রীর গুরুত্ব সমান।
আমারও তোমার মতো, শারীরিক চাহিদা আছে। তবে যার তার সাথে আমি শরীর বিনিময় করিনা। তোমাকে আজকাল রাস্তার মানুষ মনে হয়। যে ভালোবাসতেই জানে না।
ভালোবাসাহীন শরীরের বিনিময়ে নিজেকে বেশ্যা লাগে। অথচ, আমি প্রেমিকা হতে চেয়েছিলাম।
আমি চেয়েছিলাম, মানুষটা দূরে গেলে আমার শূন্যতা অনুভব করুক।
কাছে আসলে ভালোবাসার দৃষ্টিতে একবার অন্তত তাকিয়ে থাকুক।
এটা তোমার হয়নি কখনো।

আমি চলে যাচ্ছি। যে ঘরে ভালোবাসা, প্রেম, যত্নের অভাব থাকে, সেখানে দমবন্ধ লাগে খুব।
তোমার খুব একটা সমস্যা হবেনা। তোমার ফোনের টেক্সট পড়েছি আমি, তার নাম অনুরিমা। খুব সম্ভবত তোমার কলিগ।
তুমি লিখেছিলে, নীল শাড়িতে তোমাকে আজ ভীষন সুন্দর দেখিয়েছে।
আমি বুঝতে পারছিলাম, তোমার চোখেও প্রেম আছে, তবে সেটা আমার জন্য না।
যে মানুষ ঘরের বাইরে আমার না, সে আমার পুরুষ হতে পারেনা।
ব্যক্তিগত পুরুষ হতে হলে, এক কোটি মাইল দূরে বসে থাকলেও সে আমার।
অতটুকু নির্ভরশীলতা যার প্রতি আসেনা, তাকে আমি আমার বলি না!
যে প্রেমিক ঘর থেকে বের হলেই অন্য মানুষ, সে ব্যক্তিগত হয়না কখনো।
যার তার সাথে আমি শুধু মাত্র শরীর বিনিময়ে অংশ নিতে পারবোনা।
আমার প্রেম এবং শরীর দুটোই চাই। আমার একটা ব্যক্তিগত মানুষ চাই, যে মানুষ একান্তই আমার। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে বসে থাকার দূরত্বেও সে আমার।

তুমি ভালো থেকো! মাইগ্রেনের ঔষুধের পাতাটা ডান দিক থেকে আলামারির তৃতীয় ড্রয়ারে রাখা আছে!
নিজের খেয়াল রেখো!

ইতি,
রিয়া।

০৯


ডিভোর্স লেটার।

প্রিয়....

মাঝে মাঝে চিঠি দিও,
যদি সাদা পাতায় অনুভূতিদের ব্যক্ত করতে অনভ্যস্ত হও তুমি,
তবে লিখো...
ভালবাসা....
আমার সবটুকু ভালবাসা নিও,
এটুক হলেই চলবে....
তাও যদি না পারো ভালবাসি শুধু এ কথাটা না হয় বলবে।
এটুকুতেই হৃদয় আমার মোমের মত গলবে,
সুখের জলে চোখের কোণ জোনাকীর মতো জ্বলবে।
ভালবাসায় পাগলিনী আমি ও চিঠি খুব যতনে রেখে দিবো,
ইচ্ছে হলেই যখন তখন পড়ে নিবো।
প্রতিটি অক্ষর ভালবাসা দিয়ে হৃদয় মাঝে গাঁথবো,
গেঁথে গেঁথে তোর নামে এ হৃদয়ে একখান ঘর বাঁধবো।
সেই ঘরের দেয়াল,মেঝে,চালা সবটুকু জুড়ে শুধু তোর আর আমার ভালবাসা মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকবে।
আর দিনে দিনে আরও বেশি যেন ভালবাসার সাধ জাগবে।

মাঝে মাঝে চিঠি দিও প্রিয়
চিঠি দিও

১০

বন্ধু,

ভালো আছিস তো ?
ওখানকার সবাই তোকে ভালোবাসে?
ওখানকার কেউ তোকে
ভারী বুটের বারি মেরে–
ঠোঁট ফাটিয়ে দেয়না ?

জানিস,
আমি আজও দেখি
রক্ত ঝরছে তোর ঠোঁট দিয়ে।
আর আমি–
আমি কেন আমরা
সবাই তোকে বলছি –
মানিয়ে নিয়ে সংসারী হতে।
সংসারী,
মানে যে নিপুণ হাতে–
সব কাজ করবে,
স্বামী সেবা করবে·-----
মা হবে, সন্তান পালন করবে
মা,
মা আর তোর হওয়া হোল না।
পৃথিবীর মুখ দেখার আগেই;
গর্ভের অন্ধকারে–
হারিয়ে গেল তারা,
আর ফিরল না।
আর ফেরা,
তুইওতো পারলি না
সমগ্র প্রতিকূলতাকে জয় করে---
আমাদের ভালোবাসায়,
নিজেকে ফেরাতে?
ভালোবাসা,
তাকেও জানাতে পারলি না!
ভালোবাসি,
খুব ভালোবাসি।
না বলাতে, শান্তিও পাসনি।

শান্তি পেলিকি হলুদ সিন্থটিক
শাড়ির ----আলিঙ্গনে!
আলস্য দুপুরে সবাই যখন----
ভাতঘুমে আচ্ছন্ন
তখনই কি তোর সময় হোল!
পিছন ফিরে একবারও তাকালিনা!
ভাবলি না
কেমন থাকবে তারা?

ইতি,
রিয়া।

১১

প্রিয়,

কেমন আছো তুমি? জানো আমি আজ ভালো আছি। জানো আমি কাঁদিনা একটুও। কেনো কাঁদবো বলো? তুমিই তো বলেছিলে আমার চোখের জল তুমি পছন্দ করোনা।

আচ্ছা তোমার মনে পড়ে যেদিন প্রথম তুমি আমার সামনে এসেছিলে আমি ভয়ে কেঁদেছিলাম। আর তুমি তা দেখে দুষ্টুমির ছলে আমায় বলেছিলে মামুনী কেঁদো না, তোমার জন্য চকলেট এনেছি। জানো আজও হাসি আমি এসব মনে পড়লে।
আচ্ছা তোমার মনে আছে আমি আর তুমি দুজন মিলে নদীর ধারে হাঁটতাম। তুমি সবসময় আমার জন্য কাশফুল নিয়ে আসতে, কেনোনা আমি কাশফুল ভালোবাসতাম।
আচ্ছা তোমার মনে পড়ে তুমি প্রতিদিন ওই আম গাছটার ছায়াতলে সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে আর আমি আসলে আমায় কলেজে পৌঁছে দিতে।
মনে পড়ে প্রথম যেদিন গিয়েছিলে আমার কলেজে আমি সবাইকে বলেছিলাম তুমি আমার ভাই। তুমি সেদিন প্রথম আমার উপর খুব অভিমান করেছিলে। অনেক কষ্ট হয়েছিলো সেদিন তোমার মান ভাঙ্গাতে। তার চেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছিলো তোমার চোখে জল দেখে।
জানো তোমার এনে দেওয়া গোলাপ গাছটায় ৪টা গোলাপ ফুটেছে যেমনটা তুমি বলেছিলে একটা তুমি , একটা আমি, একটা আমাদের পরী আর একটা আমাদের ছোটু। আচ্ছা তোমার কি মনে পড়ে আমি রাগ করেছিলাম বলে তুমি রাতে আমার রুমের জানালার সামনে অনেক গুলো জোনাকি পোকা ছেড়ে দিয়েছিলে। আমি জোনাকির আলো ভালোবাসতাম বলে।
সেই দিনের কথা মনে আছে তোমার যেদিন আমার চিঠি তোমার ভাবি পড়েছিলো।আর তোমাকে না জানিয়ে চিঠির উত্তর দিয়েছিলো।
ওই দিনগুলোর কথা মনে আছে? যখন আমরা নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলাম বৃষ্টিতে। আমি সেদিন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আর তা দেখে সেদিন রাতে তুমি ও খুব ভিজেছিলে যাতে তুমিও অসুস্থ হতে পারে। হ্যাঁ হয়েছিলেও বটে।
মনে আছে তুমি বলেছিলে লাল চুড়ি , লাল শাড়ি আর আলতা পড়তে। আমি বলেছিলাম আমার তো ওসব নেই।
তুমি বলেছিলে "আমি যখন চাকুরী করতে শহরে যাবো তোর জন্য আসার সময় লাল চুড়ি, লাল শাড়ি, আলতা, লাল ফিতা সব আনবো" ।
আমি সেদিন খুব খুশি হয়েছিলাম। বুঝতে পারিনি তোমাকে হারাতে হবে।
আচ্ছা কেনো তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে? কেনো আনতে গিয়েছিলে ওইসব? আমার লাল চুড়ি,লাল শাড়ি, আলতা কিচ্ছু চাইনা শুধু তোমাকে ফিরে পেতে চাই। তোমার এক বন্ধু বলেছে তুমি বাড়িতে আসার জন্য ছুটি নিয়েছিলে আর তাই আমার জন্য ওসব কিনতে গিয়েই তোমার গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগে। জানো আমি এখন সবসময় সাদা জামা পড়ি। আমাদের তো বিয়ে হয়নি তাই সাদা শাড়ি পড়তে পারিনা।
তাতে কি আমি তো জানি আমি তোমার কি?
জানো অনেক চিঠি লিখেছি তুমি পাবেনা জেনেও। তবে আজ থেকে আর লিখবো না। কেনো জানো? আমি যে তোমার কাছে চলে যাবো। বাবা মা আমার বিয়ে ঠিক করছে। আমি তো জানি তুমি আমার সব। তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ভাবি কি করে বলো?

তোমার অন্ধকারে কষ্ট হয় বুঝি? আমি আসছি আর কিছুটা সময় অপেক্ষা করো। আচ্ছা এখন যাই। নদীর পাড়ে যেতে হবে যে না হয় তোমার কাছে যাবো কি করে?

ইতি
তোমার
"আমি"
১২

প্রিয়,

কতদিন লিখি না তোমায়!
কতদিন পড়ি না তোমার চিঠি!
আমায় লিখা তোমার শেষ চিঠিটা!
দীর্ঘ লম্বা একটা চিঠি! লুকিয়ে রেখেছি সযতনে,
মাঝেমাঝে ওতে হাত বুলাই, ঘ্রাণ নেই!
একই লেখা বারবার পড়তে পড়তে মুখস্হ হয়ে গেছে!
চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি, কোথায় রয়েছে কোন শব্দ!
চিঠিটায় হাত দিয়ে ছুঁলেই অনুভব করি তোমায়!
এক সমুদ্র ভালবাসার উষ্ণ আবেগে মন ভেসে যায়!
এক আকাশ দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বুকের ঘুলঘুলি ভেদ করে--
চোখের জল পড়ে পড়ে ঝাপসা হয়ে গেছে চিঠির অনেকটা!---
কতগুলো অস্পষ্ট শব্দের সমাহার, হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির অতলে টেনে নিয়ে যায়---
আনমনে চিঠি খুলে ঘোলাটে দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি---
হাজার বার পড়া চিঠি আবারো পড়ি, বারবার, কতবার যে পড়ি--

কতদিন লিখি না তোমায়---
একটা চিঠি লিখতে মন চায় তোমাকে, প্রেমময় চিঠি---

ইতি
তোমার
"আমি

১৩

ভালবাসার শেষ চিঠি

প্রিয়,

তোমাকে ভালবেসেছি
নিজের থেকে অনেক বেশি,
আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে
তোমাকে দিয়েছি স্থান,
আজ আমার সমস্ত অস্তিত্বে জুড়ে চড়ুই পাখির দাপাদাপি,
শীতের ঝরে যাওয়া ধৃসর পাতার
মত আমার জীবন,
যখন তুমি ছিলে আমি ছিলাম
সবুজ পএপল্লবে, ছিল পাখিদের গান,মিষ্টি বাতাসের তালে তালে মৃদু নৃত্য, ছিল স্বপ্ন,ছিল কিছু অাশা,
আমার শরীরে রক্ত ছিলে তুমি, রক্ত ছাড়া যেমন
মানুষ এক মিনিট বাঁচতে পারে না
ঠিক তেমনি ভাবে তোমাকে
ছাড়া আমি এক মিনিট বাঁচে থাকতে পারব না,
হে প্রিয়,,
তোমাকে অনেক চিঠি লিখেছি
রাত জেগে মনের মাধুরী দিয়ে সাজিয়ে ছিলাম এক একটি শব্দ মালা,
কোন কোন চিঠির উক্তর তুমি দিয়েছ আবার কোনটার দাও নাই
রাতজেগে চিঠি লিখতে লিখতে কখন যে বয়স ২০(কুড়িতে) পা দিয়েছি তা নিজেও জানি না,
আমার এক একটি চিঠি ছিল
ভালবাসার চুম্বন যা চিঠির গায়েতে লেগে আছে
আর আজ চিঠি লিখলাম
আমার জীবনের শেষ চিঠি তোমার জন্য সেথায় দেখতে পাবে
ভালবাসার শেষ চুম্বন তোমার জন্য,
হে প্রিয়
আমাদের প্রথম দেখা হয়েছ ছিল
চারুকলায় কোন এক মেঘাচ্ছন্ন বিকেলে
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে আমার অপেক্ষায় এক হাতে রজনীগন্ধা আরেক হাকে গোলাপ ফুল নিয়ে
আজ সেই এক হাতে
আমাকে বিদায় দিলে
অন্য হাতে আপন করে অারেক জনকে।।
যাই হক সুখে থাক ভাল থেক
যদি কোন দিন ফিরে আছ
দেখতে পাবে উবু হয়ে পড়ে আছি
তোমার পথ চেয়ে

ইতি,
তোমার
অবহেলিত
ভালবাসা

১৪

প্রিয়জন ,

তোমাকে লিখা অনেক চিঠি জমেছে আমার মনের ডাক বাক্সে, হয়তো তোমাকে
এইগুলো কখনো পোষ্ট করা হবেনা ...
তুমি জানবেওনা কতো কথা লিখেছি
তোমায় নিয়ে ৷
আচ্ছা তুমি কি সত্যিই কখনো বুঝোনি ?
নাকি বুঝেও আমায় বুঝলেনা ?
এখনো আমার রাত কাটে নির্ঘুম ...
তুমি চলে গিয়ছো আর উপহার
দিয়ে গেছো আমায় ,
নিসঙ্গ রাত

ইতি,
পরিণীতা

১৫
শুভঙ্কর,

এবার পয়লা বৈশাখে
আসবে কি তুমি রমনার বটমূলে?
আমি আসব
প্রতিবারের মতই।
থাকব সোজা বেদী বরাবর,
লাল-হলুদে সাজবো এবার।
আমায় খুঁজে নিতে পারবে তো?
আমি কিনতু তোমায় ঠিক চিনে নিতে পারব, দূর থেকেই।
যদিও, এখনও অব্দি নিশ্চিত জানি না,
তুমি আসবে কি আসবে না।
জানি, একমাত্র সাদা ছাড়া, অার কোন রঙের পাঞ্জাবী তোমার পছন্দ নয়!
সে যাই হোক, হাজার লোকের ভীড়েও
তোমায় চিনতে ভুল হবে না আমার---
ছায়ানটের অনুষ্ঠান তো অজুহাত মাত্র--
উদ্দেশ্য হোল তোমায় একটিবার দেখা!
আসবে তো শুভঙ্কর, আসবে তো?
কি জানি এখনও অত সকালে ঘুম ভাঙ্গে কি না, আগের মত---
মনে মনে ভীষণভাবে চাই, তুমি আসবে রমনার বটমূলে, একটুক্ষণের জন্য হলেও---
এক ঝলক না হয় এক পলকের জন্য হলেও;
বছরের প্রথম উজ্জ্বল ঝাঁঝালো রোদে,
একটিবার দেখতে চাই তোমাকে
একটিবার---

ইতি,
পরিণীতা

১৬

প্রিয় নিশি,
আজ সকালেই জানতে পারলাম আমায় খুঁজছো তুমি।
অনেক দিন পর ইমেইলটায় ঢু মারতে গিয়ে তোমার চিঠিটা চোখে পড়লো,
যান্ত্রিকতার যুগে যান্ত্রিক চিঠি। ইমেইল বা,ম্যাসেঞ্জারের মাঝের লেখা গুলোকে আমি যান্ত্রিক চিঠি বলি,
নিশি, তোমার কি মনে আছে সেই একবার আমার লেখা
একখানা চিঠি তোমার আম্মুর হাতে পরেছিল,,,
আমার জন্য সেদিন অনেক বকা খেয়েছিলে তুমি।
যান্ত্রিক চিঠি গুলো অবশ্য অন্য হাতে পরার ভয় নেই।
কাগজে লেখা চিঠির মাঝে একটা প্রান ছিলো, যখনই তোমার চিঠিটা হাতে নিতাম পড়ার জন্য মনে হত যেন তোমাকেই ছুঁয়ে আছি।
আজ অবশ্য তেমনটা মনে হয়নি।
অনেক কথা বলে ফেললাম, কিন্তু জানা হয়নি কেমন আছ তুমি,,,,
নিশি, তুমি কেমন আছো?
তোমার অসুখটা কি কমেছে?
জানো, মাঝে মাঝে তোমার অসুখটা নিয়ে ভীষন ভাবনা হয় আমার।
হঠাৎ যখন তোমার মাথায় যন্ত্রনা হত, আমি হাত বুলিয়ে দিলেই ভাল হয়ে যেত,,,,,,
এখন তো আর আমি পাশে নেই,,
তাই ভাবনা হয়।
আমি তোমার কাছ থেকে পালিয়ে এসেছি এটা ঠিক,
কিন্তু পালাবার কারনটা কি জানো?
আমার ধারনা কারনটা তুমি জানো, এবং এ কারনেই
আমায় খুঁজছো তুমি।
পালিয়ে এসে কোথাও স্থির হতে পারিনি, প্রতিনিয়ত ছুটে চলছি,,,
স্থিরতার মাঝে তোমায় খুব বেশী মনে পড়ে,,
সেদিন তাজমহলের সামনে দাড়িয়ে তোমায় ভীষন মনে পড়ছিল, এখানে আমাদের একসাথে আসবার কথা ছিলো।
ইদানিং আর বেশী ছুটতে পারি না বুকের ব্যাথাটা খুব বেশী পিড়া দেয়।
তোমায় ছুঁয়ে কথা দিয়েছিলাম সিগারেট ছোব না, কথাটা রাখতে পারিনি,,,
তোমার মত তামাকের গন্ধটাও ভুলে থাকতে চাই কিন্তু সম্ভব হয় না।
সেদিন দিল্লির একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল,
বলেছিলাম "আমার নিশি হবে" মেয়েটা ভীষন অবাক হয়েছিলো।
ইদানিং চোখে বেশ সমস্যা হচ্ছে, আগের মত রাত জেগে আর কবিতা পড়তে পারি না,কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসে লেখা গুলো, মনে হয় চশমা নিতে হবে।
তোমার প্রিয় গানটা এখনও শুনি আমি, এই একটা গানই আমারও প্রিয় হয়ে গেছে তোমার জন্য,,,,,
Hiding from the rain and snow
Trying to forget but I won't let go
Looking at a crowded street
Listening to my own heart beat
So many people all around the world
Tell me where do I find someone like you girl
Take me to your heart take me to your soul
Give me your hand before I'm old
হয়তো তোমার সাথে আর কখনও দেখা হবে না আমার,
এখন আমি সত্যিকারের যাযাবর।
যাযাবর নামটা কিন্তু তোমারই দেয়া,
তখন ভাবতে পারিনি এক সময় এটাই আমার পরিচয় হবে।
বুকের ব্যাথাটা বেশ বেড়েছে,
আর লিখা হবে না বোধ হয়,,,
সময় পেলে কাগজে একখানা চিঠি লিখো,
একটা রেফারেন্স ঠিকানা দিচ্ছি,যেহেতু আমার কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।
তুমি ভালো থেকো তোমার সৃষ্টির মাঝে।
"ক্লান্ত পথিক"

ইতি,
মামুন হাসান

১৭
প্রিয় সুহাসিনি,

কেমন আছ? আশা করি ভালো আছ। আমিও ভালো আছি । কি ভাবছ ! আমি ভালো আছি কি নাহ ? তোমার কাছে লুকাবার কিছু নেই । আমি আসলে ভালো নেই । আমার হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে শত বছরের কান্না। তুমি কি আমার পর ,তোমার কাছে লুকাব কেন। তুমার হরিণটানা চোখ গুলো যে আমাকে কখনো ঘুমাতে দেই নাহ । এটাকে যদি ভালো থাকা বলে তবে ভালো আছি ।
তুমি বলেছিলে ,শিবপুর পৌছে আমাকে চিঠি দেবে । আজ ২০ বছর হয়ে গেল , তোমার ট্রেন কি এখনও কি শিবপুর স্টেশনে পৌছায় নি । ২০ বছর ধরে অপেক্ষার দংশনে আমি আজ জর্জরিত । কই চিঠি যে এল নাহ ।
অপেক্ষার দংশন যে বড় কষ্টের। আজকাল পোস্ট বক্স টাও আমার সাথে টাট্টা করে । আজও ডাকপিয়ন এর সাইকেল এর বেল সুনলে আমি দরজার ফাক দিয়ে উকি মারি । যদি তোমার কোন চিঠি আসে । চিঠি তো আসে নি ।
তুমি আমার কাছে এক জোড়া চুড়ি চেয়েছিলে । মনে আছে ? আজ ২০ বছর ধরে সেগুলো পরে আছে আমার টেবিলে । লাল নীল বেগুনী কত রঙের চুড়ি কিনেছিলাম তোমার জন্য । আজ অপেক্ষার দংশনে সেগুলো হয়ে গেছে বিবর্ণ । জান , আজও পার্কে মেলা বসে , কত বাহারী রঙের টিপ , চুড়ি না উঠে সেখানে ।
শুধু তুমিই নেই ।
তোমার তো বৃষ্টি অনেক পছন্দের ছিল । এখনও কি আছে ?
জান আজকেও নাহ আকাশের মন খারাপ ছিল ।
অঝোরে কেদেছে আকাশ ঠিক আগেরি মত ।
তুমি কি এখনও জানলার ধারে বসে আকাশের কান্না দেখ ।
আগে যেমনটি করতে । নাকি বৃষ্টিও আজকাল তোমার অপছন্দের তালিকায় নাম লেখিয়েছে ।
উত্তরে জানিও।
জান ,মাঝে মাঝে বড্ড অভিমান হয় । মনে হয় তোমাকে আর কোনদিন চিঠি না দিই । কিন্তু বেশিদিন রাগ করে থাকতে পারি নাহ । আবার কাগজ কলম নিয়ে চিঠি লিখতে বসে পরি। তোমার ঠিকানায় কত চিঠিই না পাঠালাম কিন্তু কোনদিন তার উওর পেলাম নাহ ।
অপেক্ষার দংশন যে বড় কষ্টের ।
তোমার ট্রেন যদি স্টেশনে পৌছে থাকে , তাহলে চিঠির উত্তর দিও ।

ইতি 
অনিরুদ্ধ

It was the last Bangla Love Letter and I'm thanking you for reading this. Now, if you like this post, please share with your friends and leave a comment below.

No comments:

Post a Comment