Valobashar Koster Golpo - You Will Cry After Reading

kichu Valobashar Koster Golpo - You Will Cry After Reading. 

কিছু ভালোবাসার কষ্টের গল্প। পড়লে আপনার নিশ্চয় ভালো লাগবে। 


valobashar koster golpo

গল্প - ০১

বিষ

বিষের বোতল টা হাতে নিয়ে বসে আছি।আজ সুইসাইড করব।আর তারপর দেখবো মৃত্যুর পর ঠিক কি কি হয়।দুদিন আগেই আম্মুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম...
__আচ্ছা আম্মু,মৃত্যুর পর কি হয়?
__যারা দুনিয়াতে খারাপ কাজ করে,আল্লাহর ইবাদাত পালন করে না তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।আর ভাল মানুষদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।
.
কিন্তু কিভাবে শাস্তি দেওয়া হয়!!শাস্তি কি একটাই হয়, নাকি অনেকগুলো!!ঠিক করেছিলাম প্রাক্টিকালি করে দেখবো।সেটার জন্য আগে আমাকে সুইসাইড করতে হবে।আর আমার মৃত্যুর পরেই আমি জানতে ও দেখতে পারবো যে মৃত্যুর পর ঠিক কি কি হয়। 
এসব ভাবতে ভাবতেই বিষ টা মুখে দিয়ে খেয়ে ফেললাম।কিন্তু আমার তো কিছুই হচ্ছে না।তাহলে কি এটা আসলে বিষ নয়!কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম গলাটা কেমন যেন করছে।সারা শরীর,মাথা কেমন যেন ঝিম লেগে যাচ্ছে।গলা,বুক ভীষণ জ্বলছে।মনে হচ্ছে এসিড খেয়েছি।যন্ত্রনায় দুচোখের কোণ পানিতে ভেসে যাচ্ছে।কি করবো এখন!আম্মুকে ডাকবো!খুলে বলবো সবকিছু যে আমি বিষ খেয়েছি।ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবে আমায়, হয়তো বেঁচে যাবো কিন্তু তারপরে তো জানতেই পারবোনা মৃত্যুর পর কি হয়!নাহ....আম্মুকে ডাকবো না।যা হবার হবে।
আম্মু ভীষণ ডাকছে...
__মিম,এই মিম,,উঠছিস না কেন?
__আম্মু আরেকটু পরে উঠবো
__কিরে,কি হয়েছে তোর।মুখ,চোখ এমন দেখাচ্ছে কেন!!(আম্মু মুখটা এরমধ্যেই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে)
__আম্মু,তুমি এমন করছো কেন, আমার তো কিছু হয়নি.
__কথা বলছিস না কেন,, (কাদোঁ কাদোঁ স্বরে)
__তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো না?!!!
আম্মু কাদঁতে শুরু করেছে।কিছুক্ষনের মধ্যেই বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে গেলো।আত্বিয়-স্বজন রাও চলে এসেছে।সবাই কন্নাকাটি করছে।আমি সকলকে কাদঁতে বারণ করলাম কিন্তু কেও আমার কথা শুনতে পেল না।
বুঝতে পেলাম আমি আর পৃথিবীতে নেই।সেজন্যই সবাই কাদঁছে।! তারমানে বিষটা খেয়েই আমার মৃত্যু হয়েছে।আমাকে সবাই একটা অন্ধকার ঘরে রেখে চলে গেল।আমার ভীষণ কান্না পাচ্ছিল।কিছুক্ষন পর অনুভব করলাম আমি সেই অন্ধকার ঘরে নেই।অন্য এক জায়গায়।সেখানে আরও অনেকে রয়েছে।তাদের কাওকেই আমি চিনিনা।সবাই কাদঁছে।কয়েকজনকে একটি বিশাল অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো।অন্যদের একটি গর্তে যেখানে বিষাক্ত সাপ আর পোকামাকড় ছিলো।কাওকে কাওকে অনান্য শাস্তি দিচ্ছিল।এসব দেখে আমার শরীর কেঁপে উঠলো। তারপর কেও একজন আমাকে জোর করে টেনে টেনে নিয়ে একটি অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করল........
তখনি ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।সোয়া থেকে উঠে বসলাম।ঘেমে ভিজে গিয়েছি।এখনো তরতর করে ঘামছি।পুরো শরীর ব্যাথা করছে।চারপারশটা দেখে বুঝলাম আমার রুমের বিছানায়।এতেক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম।আমিও তো ঠিক মতো নামাজ পড়ি না,মিথ্যা কথা বলি।তাহলে আমাকেও স্বপ্নের মতো শাস্তি দেওয়া হবে।স্বপ্নটা শুধুমাত্র নমুনা একটা।আরও ভয়ংকর হবে পরকালের শাস্তি গুলো।
পরকালের শাস্তির ভয়ে হলেও আমাদের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে আর আল্লাহর ইবাদাত পালন করতে হবে।


গল্প - ০২

আসমাপ্ত ভালোবাসা 

ছেলেটি মেয়েটিকে খুব বেশি কষ্ট দিলো।ভালোবাসার নামে মিথ্যে অভিনয় করলো।এত কষ্ট,অপমান সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি একটা সুইসাইড নোট লিখে গেলো।
"মৃত্যুর পর মর্গের ডোমের কাছ থেকে আমার পঁচে যাওয়া হৃৎপিন্ড টা একবার দেখে আসো, পোস্ট মর্টেমের পর জানতে পারবে হৃৎপিন্ড পঁচে যাওয়ার পিছনের গল্প।আমার তিলে তিলে মৃত্যুর গল্প।"

অতঃপর মেয়েটি আত্মহত্যা করল।
সে জানতো না তার ভালোবাসার মানুষটি কখনো তাকে দেখতে আসবে না।তার মৃত্যুর খবর শুনে ছেলেটি অনেকটা চমকে উঠল।তাড়াতাড়ি করে সিগারেট ধরলো,নিজেকে ঠান্ডা করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগলো।আসলে মেয়েটিকে ভালোবেসে না তার চিন্তা একটু ভিন্ন।যদি আত্মহত্যার দায়ে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।সেই ভয় ছেলেটাকে কুড়ে কুড়ে খায়।

লোক জানাজানির ভয়ে মেয়েটির পরিবার সুইসাইড নোট টি লুকিয়ে ফেলে।সমাজের কথা ভেবে মেয়েটির বাবা মেয়েটির দ্রুত দাফন করার ব্যবস্থা করে।

মেয়েটির মৃত্যুর পর তার মা বাক রুদ্ধ।চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছে,চিৎকার করতে করতে গলা শুকিয়ে গেছে।মানতে পারছে না সব কিছু।নিজের সন্তানের বুক খালি হওয়ার কষ্ট একজন মা ভালো জানে।

মেয়েটির বাবা জেনো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।তার ছোট মেয়েটা এতো বড় ভুল কিভাবে করলো?

মেয়েটির ভাই কাঁদতে কাঁদতে শুধু বোনের ভালোবাসার স্মৃতি মনে করছে।তার ভালোবাসার একটাই মানুষ ছিলো তার বোন।

আর সেই ছেলেটি দিনের পর দিন ভাবছেন কাঁদবে?নাহ সে দিনের পর দিন মেয়েদের সাথে রঙ্গ লীলায় মাতছে।পুরোনো জামার মত ছুড়ে ফেলেদিচ্ছে মেয়েদের।সেই কবেই ভুলে গেছে মেয়েটির কথা।

মেয়েটি কি বোকা তাই না?একটা কুকুরের জন্য নিজের জীবনটাই দিয়ে দিলো।


গল্প - ০৩
কষ্ট 

আচ্ছা ভাইয়া ভালোবাসাটা কি ভুল,,? নাকি কাউকে খুব বেশি নিজের থেকে ভালোবাসা অনেক বড় অপরাধ,,? 
,
আমি আমার আব্বু আম্মুর খুব আদরের একমাত্র মেয়ে,২০১২ সালের মার্চ মাস তখন মাত্র আমার এস,এস,সি পরিক্ষা শেষ হয়েছে,সময় কাটানো আর ফেসবুকে নাকি অনেক গল্প পড়তে পাওয়া যায় আর গল্প পড়ার লোভে আমার ফেসবুকে একটা আইডি খোলা,, আমি তখন নতুন ছিলাম আর তাই ফেসবুকের কিছুই ঠিক ভাবে বুঝতাম না,আমাকে প্রথম ৩/৪ দিনে বেশ 
কয়েকজন ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় আর আমি ফেসবুক নিয়ে তেমন কিছু না বোঝাতে তাদের এক্সেপ্টড করে নিই, যদি ও পড়ে আর কারো রিকুয়েস্ট এক্সেপ্টড করতাম না কারন আমি জানতাম যে ফেসবুক যেমন ভালো তেমনি খারাপ এখান থেকে অনেক মানুষ শেষ হয়ে যায়,,আর প্রেম ভালোবাসা এই সব আমার কাছে খুব অপছন্দের একটা ব্যাপার ,,,""
,
আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে যে কয়েকটা অচেনা ছেলে ফ্রেন্ড ছিলো তারা আমাকে প্রায়ই ম্যাসেজ করত কিন্তু আমি রিপ্লাই দিতাম না কাউকে,যদি ও তারা ম্যাসেজে কি লিখত সেটা আমি পড়তাম,,,,এর ভিতর থেকে সবার থেকে অন্য রকম একটা মানুষকে দেখতে পেলাম যে আমাকে প্রতিদিন সকালে লিখত যে,,,,আপনার সারাদিন সুন্দর কাটুক আর আপনি অনেক ভালো থাকুন সেই কামনা করি,,,,,,এর বাইরে ছেলেটা কিছুই লিখত না,এই ভাবে প্রায় ১৫/১৬ দিন আর এই প্রতিদিন সে ওই লেখাটা আমাকে দিত খুব সকালে আমি ফেসবুকে আশার আগেই,,,,ছেলেটার নাম ছিলো লিমন,,,, তার এই রকম প্রতিদিনের অদ্ভুত ওই ম্যাসেজটা আমাকে দিন দিন তার সাথে কথা বলার জন্য আগ্রহী করতে থাকে, আমি একদিন তাকে রিপ্লাই দিলাম,, ধন্যবাদ লিখে,,,, তার পর তার ইচ্ছাতেই আমাদের পরিচয় হয়,,,,""
,
প্রথমে আমি না চাইলে ও লিমনের ইচ্ছা আর জোরাজুরিতে আমাদের ফেসবুকে ম্যাসেজিং হতো, আমার রেজাল্টের আগে আমি খুব চিন্তায় ছিলাম ভালো রেজাল্ট হবে কিনা ঠিক সেই সময়টাতে লিমন আমাকে সব সময় খুব সাহস জুগিয়েছে আর ও সব সময় বলত আমার রেজাল্ট খুব ভালো হবে,,ওর কথাই সত্যিই হয় আমার রেজাল্ট দিল আর আমি গোল্ডেন এ+ পাই,,আমি সেদিন যে কি খুশি হয় তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না,,আমি ফেসবুকে খবরটা ওকে জানাতেই ও আমাকে বলে,, তার নাকি আমার কাছে কিছু চাওয়ার আছে,,আমি জানতে চাইলাম কি,,? ও আমার মোবাইল নাম্বার চাইলো আমি কিছু না ভেবেই দিয়ে দিলাম আর বললাম যে আমার পক্ষে কিন্তু মোবাইলে কথা বলা সম্ভব হবে না বা আমার আব্বু আম্মু জানতে পারলে আমার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিবে,,ওর ইচ্ছাতে সেদিন আমি রাতে খুব কস্টে লুকিয়ে ওর সাথে মোবাইলে প্রায় ২৫ মিনিট কথা বলি এটাই ছিলো ওর আর আমার প্রথম কথা,,,,""
,
লিমন আমাদের পাশের শহরেই একটা ম্যাসে থেকে অনার্স পড়ত,,এই ভাবে চলে যায় এক বছর আর এর ভিতর আমাদের ফেসবুকে প্রতিদিন কথা হতো আর মাঝে মাঝে আমি সুযোগ পেলে মোবাইলে কথা ও হতো,,এর ভিতর হঠাৎ লিমন একদিন আমাকে আই,লাভ,ইউ বলে আর কথাটা বলে ও আমার কাছে খুব কাঁন্না করে,একটা ছেলে এই ভাবে কাঁদতে পারে তা তার আগে আমার জানা ছিলো না,,আমি খুব অবাক হয়ে যায় সেদিন ওর ওইরকম পাগলামী দেখে,আমি হ্যা না কিছুই সেদিন না বলে ভাবার জন্য সময় নিই,,এর ভিতর ওর আমার প্রতি খেয়াল যেনো আগের থেকে অনেক বেড়ে যায়,আমি খেয়েছি কিনা,পড়েছি কিনা,, কি করছি,, সব কিছুই ওর জানতে হবে কিছুক্ষণ পর পর,,আর আমার কাছ থেকে ও যদি কোন কারনে জানতে না পারে বা আমার জানাতে দেড়ি হয় তখন ও পাগলের মতো হয়ে যেতো,,,,""
,
এর পর কিছুদিন অনেক ভেবে আমি ও ওকে আই,লাভ,ইউ বলি,, তার পর ও দেখা করার জন্য পাগল হয়ে যায় কারন ততো দিনে ও আমাকে বা আমি ওকে দেখিনি,,কারন আমার ফেসবুকে কোন ছবি দেয়া ছিলো না,আর ও চাইলে ও আমি ওকে ছবি দিইনি আমি ওকে বলে ছিলাম যে ভাগ্য থাকলে সামনা সামনি দেখা হবে কোনদিন,,আর শুধু ও না আমি ও কিন্তু ওকে দেখি নাই,কারন ওর ও ফেসবুকে ছবি দেয়া ছিলো না যদি ও ওর ছবি ও আমাকে দিতে চেয়েছিলো আমি না করেছিলাম কারন আমি যখন নিজেকে দেখাচ্ছি না তাহলে আমার ও ওকে দেখা উচিৎ না,,,,""
,
আমি যখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে তখন আমাদের দুজনের প্রথম দেখা হয়,আমি দেখতে মোটামুটি, খুব ভালো ও না,খারাপ ও না,,সত্যি বলতে কি ওকে আমি দেখার পর আমার পছন্দ হয়নি কিন্তু তাতে কিছুই না আমি ততো দিনে ওকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম তাই কিছুই বলতে পারিনি,,,,আমাদের দেখা হবার পর থেকে লিমন যেনো কেমন বদলে যেতে থাকে,আমার সাথে যে প্রতি ঘন্টায় যোগাযোগ করত সে যেনো তা ভুলেই গেছে,,তখন আমি নিজে থেকে ওর সাথে কথা বলতাম আর কথা বলার সময় বুঝতে পারতাম যে ও কথা বলতে চাচ্ছে না কিন্তু তার পর ও আমি কথা বলে যেতাম আর ওর সাথে কথা না বলে আমার পক্ষে তখন কিছুই করার ছিলো না,,কদিন পর থেকে ও ফেসবুকে আমার ম্যাসেজের রিপ্লাই দেয়া বন্ধ করে দেই আর আমি কল দিলে ও কয়েকবার দেয়ার পর রিসিভ করত,খুব লজ্জা লাগতো এতো ছোট হয়ে বার বার ওর সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু কিছুই করার ছিলো না,,কারন আমি ওকে ভালোবাসি,,,,,,মাঝে একদিন ওর মোবাইল বন্ধ ছিলো সেদিন আমি চিন্তায় কিছুই খেতে পারিনি আর ওকে কল দিয়েছিলাম কয়েকশ বার,,পরের দিন যখন ওর নাম্বার থেকে আমার কাছে কল আশে তখন আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কারণ ওর নাম্বার থেকে আমার কাছে অনেক দিন পর কল আসছিলো,, কিন্তু আমার সেই আশা খুশিটা আমার কাছ থেকে হারিয়ে পালাতো সময় নিলো না ওর কথা শুনে,,,,ও আমাকে ফোনে বলে যে ওকে নাকি ওর বাবা মা গ্রামে ডেকে নিয়ে ওর অজান্তেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছে ওর নাকি কিছুই করার ছিলো না,,ও আমার কাছে মাফ চেয়েছে আর বলেছে আমি যেনো ওর সাথে যোগাযোগ না করি আর,,,,,আমি সেদিনই অন্য একজনের কাছ থেকে জানতে পারি যে আসলে ও বিয়ে করেনি ও আমাকে যা বলেছে তা নাকি আমার হাত থেকে বাঁচার জন্য,, মানে আমি নাকি ওর জগ্য না আর আমি দেখতে খারাপ তাই ওর সাথে আমাকে মানায় না,,,,""
,
সেদিন আমি খুব অসুস্থ হয়ে পরি আমাকে ক্লিনিকে ভর্তি করতে হয়েছিলো সেখানে আমি ৩/৪ দিন ছিলাম আর আমি নাকি তখন শুধু লিমন লিমন করেছিলাম,,,,আমি যখন ক্লিনিক থেকে বাসায় ফিরি তখন ও আমার সব কিছুতেই শুধুই ও ছিলো,, আমি মানুষিক ভাবে কিছুতেই ঠিক হতে পারছিলাম না,,এর ভিতরই আমাকে ইন্টার পরিক্ষা দিতে হয় আর ফলাফল ২টা বিষয়ে ফেল,, সেবার জীবনে প্রথম আমি কোন পরিক্ষায় ফেল করি আর ফেল করাতে আমি যে কস্ট না পেয়েছি তার থেকে অনেক অনেক বেশি কস্ট পেয়েছি আর পায় লিমনের জন্য,,,, ""
,
জানি না ভাইয়া আমার এই কথা গুলা আপনি পড়বেন কিনা আর লিখবেন নিকি, আমি চাই আপনি লিখেন, লিখলে তাতে আমার কোন লাভ হবে না, এটা পড়ে যদি অন্য কেউ তার জীবনে এমন ভুল থেকে বাঁচতে পারে এটাই আমার চাওয়া আর পাওয়া,,,,,""
,
ভালোলাগা বা ভালোবাসা সুন্দর এক অসাধারণ সৃস্টি,,এটাতে যেমন সুখ আছে ঠিক তেমতি দুঃখ ও আছে,,,,, তাই প্রতিটি মানুষের ভালোবাসা চাওয়ার সাথে সাথে বোঝা উচিৎ বুঝতে হবে আপনার শক্তিশালী ভালোবাসাটা নেবার ঘমতাটা আছে তো আপনার সেই ভালোবাসার মানুষের,,??
,
(লেখাটা আমার ইনবক্সে কোন এক অচেনা মানুষ দিয়েছে, আমি শুধু তার কথা গুলা একটু গুছিয়ে লেখার চেস্টা করেছি,,আমার কাছে তার একটাই চাওয়া ছিলো আমি যেনো লেখাটা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিই)

আপনি পড়ছেন আমাদের ভালোবাসার কষ্টের গল্প (Valobashar Koster Golpo) অন্যান্য গল্প পড়তে আমাদের ব্লগ ঘুরে দেখুন। 


গল্প - ০৪

ভালবাসার বিয়ে.....অত:পর

আজ জীবনে ১মবার কোর্টের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আমি!আসামী হয়ে নয়,বাদী হয়ে।খুব অসহ্যকর লাগছে সবকিছু।আর বার বার মনে একটা কথাই আসছিল"ভালবাসা আজ আমায় কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে"।

আমি মিনু,আমার স্বামী মারুফ।৩ বছর প্রেমের পর বিয়ে।ভালবাসার বিয়ে। পরিবারকে অনেক কষ্টে রাজি করাতে হয়েছিল আমার,মা-বাবাকে বার বার বুঝিয়ে বলেছিলাম"ও অনেক ভালো,আমায় অনেক হ্যাপি রাখবে"
অনেকটা জমজমাট করেই বিয়েটা হয়েছিল।আর দশ পাঁচটা মেয়ের মতই হাজারো স্বপ্নে ঘেরা সাংসারিক জীবন শুরু হল।বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই লক্ষ্য করছিলাম মারুফ অনেকটা বদলে যাচ্ছে।
সম্পর্কে থাকাকালীন আমায় নিয়ে এত ব্যস্ত থাকা মানুষটা হঠাৎ করেই বদলে যেতে লাগল।বিয়ের পর থেকেই আমার প্রতি তার কেমন যেন একটা অমনোযোগ! মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল।তারপরও বিয়ের পর কিছু পরিবর্তন আসে সেটা ভেবেই সব মেনে নিলাম।:-)

সে নেশা করা শুরু করে কেন তা আমার অজানা ছিল। সারাক্ষণ ফোনে ব্যস্ত থাকত।আমি কিছু বললেই বাজেভাবে রিয়েক্ট করত।আমায় মাঝে মাঝে মারধরও করত।কারণে অকারণে যেকোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ করত। পূর্বেও করত তখন আমি সেটা ভালবাসা ভেবে নিয়েছিলাম,বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে তাও ভেবে ছিলাম।কিন্তু হয়নি বরং বেড়ে গিয়েছিল।

হাজার হোক বাঙালী নারী।তাও মেনে নিয়েছিলাম সেটাও।এতদিনের ভালবাসা,বিশ্বাস,মানুষটার প্রতি মায়া,নিজের সংসার।না মেনে কি উপায় ছিল?তাছাড়া মা,বাবা,সমাজ আরো কত দুনিয়ার দোহাই আমাকে আটকে রেখেছিল। তাই কারো সাথে কিছু শেয়ার করা হয়নি কখনও।
এই তো গত দুই মাস আগে আমাদের ১ম বিবাহবার্ষিকী গেল।আমাদের বিয়ের বয়স ১ বছর ২ মাস।কে বা জানত ভালবাসার বিয়ের এমন ভবিষ্যৎ।

খুব কম সময় এসেছে আমার সংসার জীবনে যখন মন খোলে হেসেছি।হঠাৎ করেই যখন আপনার এতদিনের সাজানো স্বপ্নগুলো চোখের সামনে ভেঙে যেতে দেখলেন তখন যেমনটা হয় আর কি! স্থিতিশীলতা বিরাজ করে মনে,জিবনে।
শ্বশুড়বাড়ির ফ্যামিলি থেকেও কোনো সাপোর্ট পাইনি কখনও,তাদের কাছ থেকে সাপোর্ট আশা করবই বা কিভাবে।যাকে ভালবেসে সুদূর পথ পাড়ি দিয়েছিলাম সেই তো তখন অন্য এক মানুষ।
দিন দিন মারুফ একটা মানুষরূপী জানোয়ার হয়ে উঠতে লাগল।আচরণ,অকথ্য নির্যাতন,অসম্ভবরকম সন্দেহ,মুখের ভাষা,কি বিশ্রী সবকিছু!!

আজ থেকে প্রায় ১ মাস আগে আমি জানতে পারলাম আমি প্যাগনেন্ট।এ খবরে আমি দুনিয়ার সবরকম কষ্ট ভুলে গিয়েছিলাম।পুনরায় বিশ্বাস গড়ে উঠতেছিল সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।মারুফের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন রাত ১১.৩০, মারুফের আগমন।আমি দৌড়ে ওর কাছে যেতে চাইলাম।কিন্তু মারুফ নেশা করে এসেছে, সে আমার দিকে এগিয়ে আসল আর আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দিল।সে আমার পেটে,শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করতে লাগল।আমি প্রচন্ড ব্যথায় কাঁতরাতে লাগলাম। এক পর্যায়ে আমি চেতনা হারালাম।সারারাত পড়ে ছিলাম ফ্লোরে।
সকালে ঞান ফিরতেই অতিকষ্টে লুকিয়ে বাবার বাড়ি এসে পৌঁছলাম।সেখান থেকে আমায় হসপিটালে ভর্তি করা হয়। টানা ৭ দিন ছিলাম ওইখানে।আমার মিসক্যারেজ হয়ে গেল।আমার ছোট পরীটা দুনিয়ার আলো দেখার আগেই চলে গেল।বিয়ের আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম মেয়ে হলে পরী নামটাই রাখব। কিন্তু কিভাবে মেনে নিতাম এই ব্যাপারটা!!
নিজের উপর নির্যাতনটা তো আমি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পরীটার কি দোষ ছিল?মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম।মারুফ এসেছিল একবার মাফ চাইতে কিন্তু আমি কথা বলিনি।ওদের পরিবার থেকে নানাভাবে বিষয়টা মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টাও করেছিল।

সমাজের বিভিন্ন কটুক্তিও শুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে আমি আজ আর চুপ করে, সব মেনে নিয়ে পড়ে থাকব না।লড়াই করব আমার ওপর হয়ে যাওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে।আমার পরীটার মৃত্যর জন্য দায়ী অমানুষটাকে শাস্তি দেয়ার জন্য।
সবকিছু মেনে নিতে কষ্ট হলেও, হয় মরব নয়তো লড়াই করেই বাঁচব।


গল্প - ০৫


নিয়তি

-ইসু!আস্তে! এই আস্তে নামো!করছো কি! পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাবেতো! আর তোমাকে কতবার করে বলেছি আমি; যে এই অবস্থায় একদম উঠাবসা করবেনা! দরকার পড়লে আমাকে ডাক দিবে!
রাসেলের উৎকন্ঠা দেখে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। বিয়ের পর এ প্রথম, রাসেল আমার এতটা যত্ন করা শুরু করেছে, কারন আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্বা। হুম! স্ত্রী অন্তঃসত্বা হলে স্বামীর উৎকন্ঠা থাকবে,স্বামী যত্ন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার চমকানোর কারনটা ভিন্ন। রাসেলের পরিবার একপ্রকার জোড় করেই ওর অমতে আমার সাথে ওকে বিয়ে দিয়েছিলো,ও শারমিন নামের একটা মেয়েকে ভালবাসতো। কিন্তু আমার জন্যই পারলোনা শারমিনকে বিয়ে করতে। আর তার কারনেই আর ৫, ১০টা সম্পর্কের মতো সহজ ছিলোনা আমাদের মধ্যে সবকিছু। ও সবসময় এড়িয়ে এড়িয়ে চলতো আমায়। কিন্তু এখন আমি অন্তঃসত্বা তাই ওর যত্ন, উৎকন্ঠার কোনো শেষ নেই। কিজানি এটা আমার প্রতি ওর একটু একটু করে ভালবাসা জাগ্রত হওয়া নাকি শুধুই স্বামী হিসেবে একজন অন্তঃসত্বা স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব পালন করা?জানিনা!
-কিছু হবেনা রাসেল! পারবো আমি
স্বাভাবিকভাবেই বললাম কথাটা। 
রাসেল বললো,"না! না! পারবেনা! আর কখনো যেনো না দেখি এভাবে,এখন বলোতো কেনো উঠতে যাচ্ছিলে?"
আমি ইতস্তত করে বললাম,"চুলটা জট পেকে গেছে, আচড়াতে উঠেছিলাম।"
রাসেল আস্তে করে আমার দুকাধে হাত দিয়ে উঠিয়ে আয়নাটার সামনে নিয়ে গেলো। চিরুনি টা নিয়ে চুলটা আচড়ে বেনী করতে লাগলো। আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। ঠোটের কোনে একটু মুচকি হাসি এলে সেটাকে আবার চাপিয়ে নিলাম।
চুল আচড়ানো শেষে রাসেল আবার খাটে এনে বসালো আমায়। তারপর হঠাৎ আমার পেটে ওর মাথাটা রেখে বললো,"ইসু!দেখো আমাদের আলাইনা আমাকে বাবা বলে ডাকছে।"
এমন সময় আমি চিৎকার করে উঠলাম।
ও চমকে উঠে বললো,"এই কি হয়ছে তোমার!"
আমি নাকমুখ কুচকে বললাম,"পেটে লাথি মেরেছে।"
রাসেল আবারো উৎকন্ঠিত হয়ে বললো,"ওহ্ ইসু! তুমি শোওতো! শুয়ে বিশ্রাম নেও। তাহলে ভালো লাগবে।"
তারপর আস্তে করে শুইয়ে আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।

কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। ঘুম থেকে উঠে বাসার কাজের মেয়েটাকে ডাক দিলাম,"রিপা!তোর ভাই কই?"
রিপা দৌড়ে এসে বললো,"ভাবী!ভাইতো আপনারে ঘুম পাড়াইয়া অফিস গেছেগা! ভাই নাস্তা বানাই রাখছে বিকালকার,আমারে বানাইতে দেইনাই,কইছে আপনারে খাইয়া লইতে,আর এই চিঠিখান কইছে আপনারে দিতে,লন। আর ভাবী খাইয়া লন,কিছু লাগলে আমারে ডাক দিবেন।"
রিপা মেয়েটা বাসায় আছে বলে একটু সময় কাটে আমার। নাহয় রাসেল অফিস চলে গেলে একাই থাকতে হয় পুরো বাসায়।
খাওয়া শেষে রাসেলের রেখে যাওয়া চিঠিটা খুললাম,
(ইসু!
আজ প্রথম তোমার জন্য রাধলাম,অতো ভালো রাধতে পারিনা তোমার মত করে,তাও খেয়ে দেখো।
আর হ্যা,আমার দেরি হলে রাত জেগোনা,শুয়ে পড়ো।
ইতি
রাসেল।)
চিঠিটা ভাজ করে কেমন যেন উদাস হয়ে গেলাম
রাসেল এসব কেনো করছে! ও কি একটু হলেও ভালবাসে আমায়?
নাকি শুধু দায়িত্বের খাতিরে?

মনে পড়ে গেলো এক বিকেলের কথা
!!!!!!!!!!!!""""""""""
রাসেল একদিন বলেছিলো,"ইসু!দেখো! আমি শুধু বাবা মার অনুরোধে বাধ্য হয়ে তোমায় বিয়ে করেছি,তাদের নাতিনাতনীর মুখ দেখার আশায় সন্তান নিয়েছি। কিন্তু তাই বলে তুমি কখনোই আমার কাছে শারমিনের জায়গাটা আশা করোনা,কারন ভালবাসাটা শুধু ওর জন্য,তুমি শুধুমাএ আমার স্ত্রী।"
কথাটা মনে পড়ে নিজের অজান্তেই চোখবেয়ে দুফোটা জল পড়ে গেলো চিঠির ভাজটাতে।
হুম আমি শুধুমাএ ওর স্ত্রী,কাগজে কলমে সই করা স্ত্রী,
কোনোদিন ও আমায় ভালবাসতে পারবেনা,কারন আমাকে যে ভালোই বাসা যায়না।
অনেক কষ্ট করে আস্তে আস্তে উঠে ডায়েরীটা নিলাম,তারপর একটা লাইন লিখলাম।
("খুব ইচ্ছে করছে আজ জোনাকি দেখবো,ছোটো বেলায় মন খারাপ হলে আমি জোনাকির পিছনে ছুটতাম,ওদের মুঠোবন্দী করে কষ্ট দিলে তবেই আমার মন ভালো হতো।")
আগে রাসেলের জন্য প্রতিরাত অপেক্ষা করতাম,এখন শরীর ভালোনা বলে চেষ্টা করেও পারিনা।
রাতে তাই ও আসার আগেই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
রাত ১১টা। হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেলো।
পাশ ফিরে দেখলাম রাসেল নেই খাটে। বারান্দা থেকে ওর আওয়াজ আসছে। কারো সাথে কথা বলছে ফোনে।
শুনতে না চেয়েও কানটা চলে গেলো ওদিকে।
রাসেল কারো সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে,"দেখো! আমি পারবোনা এটা করতে! হুম! তোমাকে ভালবাসি এটা যেমন সত্যি কিন্তু ইসুকেও আমি বিয়ে করেছি সেটাও তেমন সত্যি,আর এখন আমার স্ত্রী অসুস্থ! ওকে ছেড়ে আমি এক মূহুর্তের জন্য ও কোথাও যেতে পারবোনা। তোমার ঘুড়তে মন চাইলে আরো সময় আছে,এখন অন্তত এসব বাচ্চামি করোনা প্লিজ শারমিন।
বুঝার চেষ্টা করো!"

ওহ্ এতক্ষনে বুঝলাম। শারমিনের সাথে কথা বলছে। 
চোখবেয়ে জল পড়ছিলো,কিন্তু শারমিনের সাথে কথা বলতে দেখে নয়,আমার জন্য ওর এতো গভীর চিন্তা দেখে।
-শারমিন,প্লীজ,আমাদেরকে আমাদের মতো থাকতে দাও,ইসু এখন আমার স্ত্রী,ওকে আমি মাঝপথে ছেড়েও দিতে পারিনা,যতই নারাজ কেনো না ওর প্রতি,আর আজকের পর তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ হবেনা,বাই।"
বলেই রাসেল পিছন ফিরে চমকে তাকালো,"একি ইসু! তুমি!এতো রাতে, এখনো জেগে আছো! আর তুমি কি সব শুনছিলে,"কষ্ট করে উঠে আসলে কেনো!"
ও তোতলাতে তোতলাতে কথাগুলো বললো,
আমি কেদেঁ দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম,"আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দেই,তাইনা রাসেল? "
ও থতমত খেয়ে গেলো,"ছি!কি বলছো এসব তুমি ইসু! কেনো বলছো,?
কি হয়ছে তোমার!"
আমি কেদেঁ দিয়ে বললাম,"শারমিন ফোন করেছিলো, ওর সাথে তোমার ঘুড়ার প্ল্যানটা নষ্ট হলো আমার এ অবস্থার জন্য,কত প্যারা আমি দেখছো।"
রাসেল এবার একটা মিষ্টি হাসি দিলো।
তারপর আমার দুকাধে আলতো করে হাত রেখে বললো," ইসু! শোনো! তোমায় একটা কথা বলি, তুমি আমাকে কষ্ট দিচ্ছোনা মোটেই,বরং তুমি নিজে কষ্ট পাচ্ছো আমাদের জন্য। দেখো তুমি কত বড় সেক্রিফাইস করছো। ৯ মাস কষ্ট পাচ্ছো আমাদের আলাইনার জন্য! আমাকে বাবা হওয়ার সুখ দেওয়ার জন্য,আমার বাবা-মাকে সুখী করার জন্য। এই যে এতো সেক্রিফাইস করছো, এতো কষ্ট পাচ্ছো অন্তঃসত্বা অবস্থায় সেগুলো কম কিসে! আর আমি তোমার স্বামী হয়ে এ অবস্থায় তোমায় ফেলে রেখে ঘুড়তে যাবো ইসু! নাহ্ 
আর আমি কাল থেকে সারাক্ষন বাড়িতেই থাকবো।স্যারকে বলে ছুটি নিয়ে এসেছি যতদিন না তুমি সুস্থ হবে ততদিন।"
আমি এবার সত্যিই দোটানায় পড়ে গেছি। মানুষটার প্রতি শ্রদ্ধায় মনটা ভরে গেলো," এতটা ভাবে আমাকে নিয়ে!"
আমি বললাম, কিন্তু রাসেল! তোমার তো তাহলে অনেকগুলো প্রজেক্ট হাতছাড়া হবে। আর তাছাড়া স্যালারিটাও কাটবে।"
রাসেল হেসে বললো," এসব কিছুই তোমার চেয়ে বড় নয় ইসু! এবার এদিকে এসোতো! এ পটটা নাও,এতে তোমার জন্য জোনাকি পোকা রাখা আছে,মুঠোবন্দী করে মন ভালো করে নাও।"
আমি কেদেঁ দিয়ে বললাম,"তুমি কিভাবে জানলে জোনাকি পোকার কথা?"
রাসেল হেসে বললো,"ম্যাম! আপনার ডায়রীটা আমাকে জানতে সাহায্য করেছে।"

আমার চোখের জলগুলো বেয়ে পড়েই চলছে একনাগাড়ে।

জন্মের পর বাবা মা মারা যায়,সৎ মায়ের সংসারে অনাদরে বড় হয়েছি,ভালবাসা কি বুঝিনি কোনোদিন। এ মানুষটাই ভালবাসা জাগাচ্ছে একটু একটু করে। হুম ভালোবাসি রাসেলকে আমি।
""""""""""""""

অতঃপর,সেই দিন আসল।
আমার সন্তার জন্ম নেওয়ার দিন।
প্রসব বেদনা উঠলে রাসেল দ্রুত এম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। ধরাধরি করে স্ট্রেচারটায় আমাকে উঠানো হলো। পাশে শাশুড়িমা,ননদ আর শ্বশুররের মুখে উৎকন্ঠা। শ্বাশুড়ি কাদঁছে।
অনেক কষ্টে ঘাড় ঘুড়িয়ে বাঁপাশে রাসেলকে দেখলাম। ও কাদঁছে। আমি শক্ত করে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম,"রাসেল,জীবন মরন নৌকোয় পা দিতে গেলাম,মরে গেলে শারমিনকেই বিয়ে করে নিও প্লীজ,আর আমার আলাইনটাকে একটু দেখো।
মেয়েটা যেনো আমার মতো মাহারা হয়ে সৎমায়ের কাছে অনাদরে না বেড়ে ওঠে। শারমিনকে বলো যাতে আমার মেয়েটাকে একটু ভালবাসে।"
রাসেল কেদেঁ বলে উঠলো," ইসু! কিছু হবেনা তোমার! কি বলছো!"
চুপ করো!"
আমাকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হলো। রাসেলের হাতটা আমার হাত থেকে ছুটে গেলো।
একটু পর ডাক্তার চেকাপ করে আমাকে মুখগম্ভীর করে বললো," মিস রাসেল! অন্তত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি,আপনি এবং বাচ্চা দুজনের কন্ডিশন খুব খারাপ! এ অবস্থায় যেকোনো একজনকে আমাদের পক্ষে বাচাঁনো সম্ভব। এখন আপনিই বলুন আমরা কি করবো।"
আমার সিদ্ধান্ত নিতে এক মিনিট ও সময় লাগলোনা।
চট করে বলে দিলাম," ডাক্তার,বেবিটাকে বাচাঁন। আর রাসেলকে একবার ডেকে দিন প্লীজ,শেষ একবার কথা বলতে চাই।"
একটু পর রাসেল এলো। কাদঁতে কাদঁতে ওর চোখমুখ ফুলে গেছে। চুপচাপ চেয়ারটায় বসল।
দুজনেই চুপ। নীরবতা ভঙ্গ করে রাসেল হঠাৎ কেদেঁ উঠলো,"ইসু! বেবিটা চাইনা আমার,তুমি আমাকে ছেড়োনা প্লীজ! ক্ষমা করো! অনেক কষ্ট আর অবহেলা দিয়েছি তোমায় আমি! একটাবার ভালবাসার সুযোগ দাও,মরে যেওনা প্লীজ।"
ওর মুখে ভালবাসার কথা শুনে দাত দাত কামড়ে কান্নাটা চেপে বললাম," ছি! কি বলছো,এ বেবিটা আমাদের সবার জন্য অনেক কিছু! আর এমনিতেও এ দুনিয়ায় কে ইবা আছে আমার বলোতো! আমি একজন মরে গেলে কার কি হবে! আর তোমায় কষ্ট পেতে হবেনা! ওহ্ হ্যা শারমিনকে কিন্তু বিয়েটা করে নিও। মুক্তি দিলাম তোমায়,রাসেল! আমার মেয়েটাকে একটু দেখো প্লীজ,আমি যাচ্ছি।
রাসেল কেদেঁ বলছে,"আল্লাহ,এত বড় পরীক্ষায় কেনো ফেললে আমায়!"
আমি বললাম,"রাসেল শেষ একবার জড়িয়ে ধরবে প্লীজ।"
রাসেল উঠে আলতো করে জড়িয়ে ধরে কেদেঁ দিলো।
একটু পর ডাক্তার এলো।
-মি.রাসেল,এবার যান! রোগীর সময় হয়ে এসেছে ডেলিভারির।
রাসেল উঠছেনা। ডাত্তার জোড় করে নিয়ে গেলো।
আমি মুখটা অন্য পাশে ফিরিয়ে কাদঁতে লাগলাম।

পুরো গল্পটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

3 comments:

  1. আপনার পোস্টটি পড়ে আবেক কে ধরে রাখতে পারলাম না,আজ তার কথা খুব মনে পরতাছে ব্র,,,!! 😪কথাগুলোর সাথে আমার অনেক মিল আছে I Really sad dp Bro..!😪🔥

    ReplyDelete
  2. Sir,
    Join here.
    Love Story , sad story , romantic story etc all here.

    SMsudipBD.Com

    SMsudipBD.Com

    SMsudipBD.Com

    We are Waiting .......

    ReplyDelete